মডিউল-৭/সেশন-২
যক্ষ্মা
যক্ষ্মা কি? — যক্ষ্মা একটি জীবাণু ঘটিত সংক্রামক রোগ।
যক্ষ্মা রোগ মানবদেহের যে কোন অঙ্গকে আক্রান্ত করতে পারে তবে ___ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক। — ফুসফুসে।
সমস্ত যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে কত % রোগী ফুসফুসের যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন? — ৭০-৮০%।
০৪। বাংলাদেশে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসার সাফল্যের হার বেশ সন্তোষজনক, তবে এখনও পর্যন্ত কত % রোগী সনাক্ত হচ্ছেনা? — ৩৩%।
যক্ষ্মারোগ নির্ণয়ের হার বৃদ্ধিতে বড় বাঁধা কি? — সামাজিক অসচেতনতা এবং যক্ষ্মা সম্পর্কিত সঠিক তথ্যের অভাব।
দুই সপ্তাহ বেশি সময় ধরে কাশি থাকলে কি করতে হবে? — ডাক্তারী পরামর্শ ও কফ পরীক্ষার জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাংলাদেশে প্রতিবছর কত লক্ষ লোক যক্ষ্মা রোগে নতুন ভাবে আক্রান্ত হয়? — ৩,৬৪,০০০ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাংলাদেশে প্রতিবছর কত লোক যক্ষ্মা রোগে মৃত্যুবরণ করে? — ৫৯,০০০ হাজার।
অনুমান করা হয়, আমাদের দেশে প্রাপ্ত বয়স্ক জনসংখ্যার প্রায় ___ লোক যক্ষ্মার জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত। — অর্ধেক।
বিশ্বের যে ৩০টি দেশের মধ্যে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা সর্বাধিক, বাংলাদেশ তার মধ্যে — অন্যতম।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল টিবি রিপোর্ট ২০১৮ অনুযায়ী বাংলাদেশে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মায় (এমডিআরটিবি) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আনুমানিক কত? — ৮,৪০০ জন।
যক্ষ্মা রোগের লক্ষণগুলো কি কি?
— ২ সপ্তাহের বেশি সময়ব্যাপী কাশি ফুসফুসের যক্ষ্মার প্রধানতম লক্ষণ;
— বিকেলের দিকে অল্প অল্প জ্বর;
— রাতে শরীর ঘেমে যাওয়া;
— খাবারে অরুচি;
— শরীরের ওজন কমে যাওয়া ও দিন দিন দুর্বল হয়ে যাওয়া;
— সাধারণ এন্টিবায়োটিকে জ্বর না সারা;
— রোগ গভীর হয়ে গেলে কাশির সাথে রক্ত যেতে পারে।
কারো যদি দুই সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকে তাহলে কি করতে হবে?
— দুই সপ্তাহের বেশি সময় কাশি থাকলেই কোন ব্যক্তিকে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত বলে অনুমান করতে হবে এবং কফসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও পরামর্শের জন্য নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি ক্লিনিক, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিক যেমন- ব্র্যাক, ডেমিয়েন ফাউন্ডেশন, গণস্বাস্থ্য, সূর্যের হাসি ক্লিনিক এবং সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে।
যক্ষ্মা রোগ কিভাবে ছড়ায়? — রোগীর কফ, হাঁচি- কাশির মাধ্যমে যক্ষ্মা রোগের জীবাণু বের হয়ে বাতাসে মিশে ও প্রশ্বাসের মাধ্যমে তা সুস্থ ব্যক্তির ফুসফুসে প্রবেশ করে রোগ সৃষ্টি করে।
চিকিৎসা না নিলে একজন যক্ষ্মারোগী বছরে কত জন রোগীকে আক্রান্ত করতে পারে? — ১০ জন।
যক্ষ্মা রোগ কীভাবে ছড়ায় না?
— এক সাথে বসে খাবার খেলে;
— একই পাত্রে পানি পান করলে;
— রোগীর সাথে হাত মেলালে কিংবা কোলাকুলি করলে;
— একই টয়লেট ব্যবহার করলে;
— একই কাপড় কিংবা বিছানা ব্যবহার করলে।
প্রাথমিক পর্যায়ে যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসা করার উপকারিতা গুলো কি কি?
— চিকিৎসার ফলে ফুসফুস বা অন্য কোন অঙ্গের ক্ষতি ছাড়াই এর নিরাময় সম্ভব হয়;
— চিকিৎসা শুরুর দুই সপ্তাহের মধ্যেই রোগী কাজে ফিরতে পারেন এবং অন্যান্য সামাজিক কাজে অংশগ্রহণ করতে পারেন;
— বিলম্বিত চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর হার অনেক বেড়ে যায়।
যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে অপ্রাতিষ্ঠানিক স্বাস্থ্য কর্মীদের করনীয় কি?
— সন্দেহজনক যক্ষ্মা রোগীকে রোগের লক্ষণ, কিভাবে ছড়ায় এবং এর ভয়াবহতা সম্পর্কে তথ্য দিবেন;
— সন্দেহজনক যক্ষ্মা রোগীকে নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, জেলা সদর হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি ক্লিনিক, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিক যেমন- ব্র্যাক, ডেমিয়েন ফাউন্ডেশন, গণস্বাস্থ্য, সূর্যের হাসি ক্লিনিক এবং সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করতে হবে;
— সন্দেহজনক যক্ষ্মা রোগীকে কোন প্রকার যক্ষ্মার চিকিৎসার ওষুধ না দিয়ে সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের জন্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কিংবা ডাক্তারের কাছে প্রেরণ করবেন এবং সনাক্তকৃত যক্ষ্মার রোগীকে নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো দিবেন;
— নিয়মিত সঠিক মাত্রায় ও পূর্ণ মেয়াদে ওষুধ খাবেন;
— নিয়মিত ফলোআপ পরীক্ষাগুলো করাবেন;
— কফ, থুথু নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে পাত্রে ফেলবেন;
— পরিবারের অন্যদের যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ থাকলে তাদের কফ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিবেন;
— জন্মের পর শিশুকে বিসিজি টিকা দেয়ার ব্যাপারে সকলকে উদ্বুদ্ধ করবেন;
— যক্ষ্মা রোগীর কফ পরীক্ষা ও চিকিৎসা সম্পূর্ণ ফ্রি- এ বিষয়টি সকলকে জানাবেন;
— একজন যক্ষ্মা রোগী কোন প্রকার প্রতারণা ও হয়রানীর শিকার যেন না হন সে বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।