Close Menu
  • সি-ক্যাটাগরি ফার্মেসী কোর্স পরীক্ষার প্রস্তুতি
  • বাংলা প্রবন্ধ রচনা
  • তথ্যকোষ
  • সাধারণ জ্ঞান
  • Grammar
  • Essay / Composition
  • List of Paragraphs
eNoteShare
Facebook X (Twitter) Instagram
Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest YouTube LinkedIn WhatsApp
eNote Share
MAG
eNote Share
Home | প্রবন্ধ রচনা : দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার [19 Points]

প্রবন্ধ রচনা : দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার [19 Points]

eNoteShareBy eNoteShareNo Comments9 Mins Read প্রবন্ধ রচনা
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার

সূচনা

একবিংশ শতাব্দীর ঊষালগ্নে এসে বিজ্ঞান মানব সভ্যতাকে একটি উঁচু শিখরে নিয়ে এসেছে। নানা রকম আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের সাহায্যে বিজ্ঞানেরই ফল এ যন্ত্র আজ মানুষের জীবনে যে স্বাচ্ছন্দ্য নিয়ে এসেছে তা রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। আজ মানুষ যন্ত্রের সাহায্যে এক বছরের পথ অতিক্রম করে এক ঘণ্টায়। ঘরে বসে বসে মানুষ কাঁচের পর্দায় সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারকার ঘটনা দেখে। প্রকৃতির শীত গ্রীষ্মের তোয়াক্কা তার না করলেও চলে। যন্ত্র আজ মানুষের ইচ্ছেমত পরিবেশের তাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। মানুষের মস্তিষ্কের সাহায্যেও যন্ত্র এগিয়ে আসবে একথা ভাবা কিছুকালও আগেও মনে হত পাগলামি বলে। কিন্তু যে যন্ত্র আজ মস্তিস্কের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে তার নাম কম্পিউটার। কম্পিউটার মূলত বিদ্যুৎ প্রবাহেরই বিস্ময়কর অবদান।

 

কম্পিউটার উদ্ভাবন

মানুষের মস্তিষ্ককে সাহায্য করার জন্য গোটা একটি কাঠামোর কথা লিখে যান গণিতের একজন ইংরেজ অধ্যাপক চার্লস ব্যাবেজ। কিন্তু আধুনিক যন্ত্রটি প্রথম উদ্ভাবনের কৃতিত্ব মার্কিন বৈজ্ঞানিক হাওয়ার্ড একিনের প্রাপ্য। খুব বড় অংক করতে পারেন–এ ধরনের একটি যন্ত্র তিনি আবিষ্কার করেছিলেন ১৯৩৭ সালে। এর সাত বছর পর হার্ভার্ডে বৈদ্যুতিক কম্পিউটার ব্যবহৃত হতে আরম্ভ হয়।

 

কম্পিউটার শব্দের অর্থ

কম্পিউটার শব্দটি ল্যাটিন ভাষাজাত। এর অর্থ গণনা। অক্সফোর্ড অভিধানে কম্পিউটার শব্দের অর্থ করা হয়েছে গণকযন্ত্র। তবে বাংলায় কম্পিউটার এর যথার্থ প্রতিশব্দ খুঁজে পাওয়া দুরুহ। কেননা কম্পিউটার এর কর্মপরিধি এত বিস্তৃত যে গণকযন্ত্র বললে তার যথার্থ অর্থ প্রকাশ পায় না। আসলে কম্পিউটার এক ধরণের সবজান্তা যন্ত্র বিশেষ।

 

কম্পিউটারের গঠন

প্রত্যেকটি কম্পিউটার গঠিত হয় পাঁচটি উপাদান নিয়ে। এগুলো হলো- ১. ইনপুট ২. স্টোরেজ ৩.কন্ট্রোল ৪. প্রসেসিং ৫. আউটপুট। আজকের পরিভাষায় স্টোরেজ কন্ট্রোল ও প্রসেসিংকে সম্মিলিতভাবে বলা হয় সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট বা (CPU) অর্থাৎ কম্পিউটারের মগজ। কম্পিউটারে ফ্রেমের উপর সুইচ ও ভালব অথবা ট্রানজিস্টর অথবা ইনটিগ্রেটেড সারকিট ইত্যাদির সমাবেশ থাকে। ফ্রেমের বিভিন্ন অংশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য টাইপরাইটার লাইনপ্রিন্টার কার্ড রিডার ম্যাগনেটিক ট্যাপ ইত্যাদি। কম্পিউটারের কর্মক্ষমতা যতই হোক এটা নিজে কোনো কিছু করার ক্ষমতা রাখে না। এটা মানুষের নির্দেশ বহনকারী এক ধরণের যন্ত্রবিশেষ। কম্পিউটার মূলত মানুষের মগজ সদৃশ একটি অত্যাধুনিক যন্ত্র। তবে মানুষের মস্তিষ্কের সাথে এটির পার্থক্য হলো এটি আবেগ ও অবসাদ থেকে মিক্ত ও ভ্রমশূন্য।

 

কম্পিউটারের বৈশিষ্ট্য

কম্পিউটার যে আজ বিস্ময়কর ও বিশ্বতভাবে সব ধরণের কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছে তার মূলে রয়েছে এর বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য। যেমনঃ- ১। অত্যন্ত দ্রুত গণনার ক্ষমতা ২। বিপুল পরিমান উপাত্তকে মগজে ধরে রাখার ক্ষমতা ৩। তথ্য বিশ্লেষণে নির্ভুল ক্ষমতা ৪। ডাটা ও প্রোগ্রাম অনুসারে কাজ করার ক্ষমতা।

 

কম্পিউটারের বিভিন্ন আকার

কম্পিউটার নানা আকারের হয়। এটি হাতে বহনযোগ্যও হতে পারে আবার বিশাল আকারেরও হতে পারে। বিচ্ছিন্ন বা অবিচ্ছিন্নভাবে এগুলোকে তৈরি করা হয়। তবে বিচ্ছিন্নভাবে তৈরি কম্পিউটারগুলো দূরবর্তী কোনো বিশেষ জায়গায় এমনভাবে সংযুক্ত থাকে যে এগুলো একক ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

 

আবিষ্কার ও প্রচলন

মাত্র অর্ধশতাব্দী আগে আধুনিক কম্পিউটার আবিষ্কৃত হলেও তার আবিষ্কারের সাধনা শুরু ব্যাবেজের। তিনি ১৮৩৩-৩৫ এর মধ্যে কম্পিউটারের গঠণতন্ত্র তৈরি করেন। ১৯৪৪ সালে সর্বপ্রথম বৈদ্যুতিক কম্পিউটার তৈরি হয়। এই কম্পিউটারের ওজন ছিল কয়েক টন এবং এর ব্যবহারও সুবিধাজনক ছিল না। আর দুই বছর পর ১৯৪৬ সালে প্যানসেলভেনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা ইলেক্ট্রনিক্স কম্পিউটার এনিয়াক আবিষ্কার করেন। এরপরই শুরু হয় কম্পিউটারের দুর্নিবার জয়যাত্রা।

 

কম্পিউটার কী

কম্পিউটার বলতে এমন একটি ইলেকট্রনিক যন্ত্রকে বোঝায় যা অগণিত উপাত্ত গ্রহণ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণ করে খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে পারে। কম্পিউটার শব্দটি ইংরেজি এবং এর অর্থ হলো গণকযন্ত্র। কম্পিউটার হিসাবের যন্ত্র হিসেবে যোগবিয়োগ গুণভাগ জাতীয় অঙ্ক কষতে পারে। এছাড়া তথ্যাদির বিশ্লেষণ ও তুলনা করা এবং সিদ্ধান্ত দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে এ যন্ত্রটির। গণিত যুক্তি ও সিদ্ধান্তমূলক কাজের সঙ্গে কম্পিউটারের সংযোগ। কাজের গতি বিশুদ্ধতা ও নির্ভরশীলতার দিক থেকে কম্পিউটারের ক্ষমতা মানুষের চেয়ে অনেক বেশি উন্নত।

 

কম্পিউটারের কাজ

১৯৪৪ সালে কম্পিউটার উদ্ভাবনকালে এর কাজ ছিল কেবল গণনা করা এবং খুব তাড়াতাড়ি গণনা করা। এক সেকেন্ডের কয়েক হাজার ভাগের এক ভাগ সময়ে গুণ ভাগ করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের যেসব জটিল সমীকরণ রয়েছে সাধারণ উপায়ে যার সমাধান করা বেশ কঠিন এবং এতে সময় নেবে অনেক এনালগ কম্পিউটার খুব দ্রুত এসব সমাধান করে দিতে সক্ষম। ডিজিটাল কম্পিউটার অনেক রকম কাজ করে। এনালগ কম্পিউটারের চেয়ে এর কাজ হাজার গুণ বেশি। হিসাব তো করেই অন্য যন্ত্রের ভুল ধরে তার সমাধান করতেও এর জুড়ি নেই। কম্পিউটার বলতে এখন এই কম্পিউটারকেই বোঝানো হয়। কম্পিউটারের এক ধরনের ভাষা আছে। অর্থাৎ বিশেষ কোনো সাংস্কৃতিক কথা সাজিয়ে মানুষ কী জানতে চায় এ প্রশ্নটি তাকে পাঠাতে হবে। এ ভাষাকে বলে প্রোগ্রাম। মনে করা যাক, একটি মোটর গাড়ির বস্ত্রের সমস্যা তাকে প্রোগ্রামের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হলো। এটা দিতে হবে তার গ্রহণমত্রের মধ্যে। গ্রহণযন্ত্র সেই প্রোগ্রাম পাঠাবে সংরক্ষণ যন্ত্রে। সরক্ষণ যত্রে হাজার হাজার শব্দ ও অংক সাজানো রয়েছে সেগুলো হলো তার সৃষ্টি (Memory) মেধা বা বুদ্ধিও বলা যায়। সংরক্ষণ যন্ত্রের নির্দেশ কীভাবে পালন করতে হবে তা ঠিক করবে কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়া যন্ত্র। আর নির্গম যন্ত্র দিয়ে বেরিয়ে আসবে ফলাফল।

 

কম্পিউটারের ব্যবহার

কম্পিউটার এখন মানুষের অনেক কাজ করে দিতে পারে। যেমন- অনুবাদের কাজ। তারা যে শুধু কবিতা বা সাহিত্যের সফল অনুবাদ করতে পারে তা নয়। এটি একটি তথ্য বা খবর এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় ঠিকঠাক রূপান্তরিত করতে পারে। ১৯৬০ সাল থেকে একটি কম্পিউটার রাশিয়ার প্রভাবশালী পত্রিকা প্রাভদার সব খবরগুলো বোধগম্য ইংরেজিতে অনুবাদ করে আসছে।উন্নত দেশগুলোতে আজকাল অনেক কারখানায় অনেক কাজ কম্পিউটার দ্বারা করা হচ্ছে। সেখানে বড় বড় কৃষি খামারে কম্পিউটারের প্রচলন রয়েছে। কৃষকেরা দূরে ঘরে বসে কেবল সুইচ টিপে ট্রাক্টর চালান, সুইচ টিপে বীজ বোনার কাজ করেন এবং সার দেন, ফসল তোলা ও মাড়ানোর কাজও করেন। এমনকী ফসল গুদামে এনে কাঁচের বড় বড় বাক্সে ভরার কাজটিও কম্পিউটারই করে থাকে। কোনো কোনো যন্ত্রের ভুল ধরে একটি কম্পিউটার ভুল সংশোধন করে আরেকটি কম্পিউটার। সামগ্রিক তত্ত্বাবধানের জন্য উঁচুমানের কম্পিউটারও রয়েছে। জাপান ও ফ্রান্স কম্পিউটার এর উন্নয়নের ক্ষেত্রে দিন দিন উন্নততর প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে। জাপান এ প্রযুক্তির বিস্ময়কর সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। মানুষের মহাকাশ বিজয়ের কাজে সর্বাধিক সহায়ক শক্তি হলো কম্পিউটার। কম্পিউটারের সাহায্যেই এ ক্ষেত্রে এতটা সাফল্য এসেছে।

 

শিক্ষাক্ষেত্রে কম্পিউটার

আধুনিক শিক্ষা পদ্ধতির অনন্য বাহন কম্পিউটার। আজকের উন্নত বিশ্বে কম্পিউটারের ব্যবহার ছাড়া শিক্ষা ব্যবস্থা কল্পনা করা অসম্ভব। এর মাধ্যমে অতি অল্প সময়ে প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা এবং জ্ঞান বিজ্ঞানের রাজ্যে বিচরণ করা সহজ হয়ে গেছে। প্রকাশনা শিল্পে বিপ্লব ঘটিয়েছে কম্পিউটার। যার ফলে জ্ঞানচর্চার অন্যতম উপকরণ বই ঠিক সময়ে আমাদের হাতে পৌঁছে। বইয়ের বিষয়াবলি এখন কম্পিউটারের ডিস্কে জমা রাখা যাচ্ছে। কী বোর্ডের বোতাম টিপলেই এখন বিশ্বের সমস্ত জ্ঞানভাণ্ডার আমাদের সামনে মনিটরের পর্দায় ভেসে উঠছে। কম্পিউটারের আশীর্বাদে যেকোনো বিষয় এখন হাতের কাছে অবস্থান করে মানুষের জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করছে। এটি যেমন গ্রন্থাগারের ভূমিকা পালন করছে তেমনি অভিজ্ঞ শিক্ষকের। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা আমাদের যেকোনো শিক্ষণীয় বিষয়কে চোখের সামনে পাচ্ছি। পৃথিবীর সমস্ত গ্রন্থাগার এখন আমাদের ঘরেই যেন অবস্থান করছে।

 

জনস্বাস্থ্যে কম্পিউটার

মানুষের রোগ নির্ণয় ও নিরাময়ে কম্পিউটার এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। রোগের কারণ ও প্রতৃতি বিশ্লেষণ করে এর প্রতিরোধ এবং প্রতিকারে কম্পিউটার এখন সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। কম্পিউটার প্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ জটিল ব্যাধি থেকে নিরাময়ের পথনির্দেশ খুঁজে পাচ্ছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা নতুন নতুন জটিল রোগের প্রতিষেধক ও নিরাময়ের ওষুধ আবিষ্কারে কম্পিউটারের সাহয্য নিচ্ছে। কম্পিউটারের এই সহযোগিতা যথার্থ শিক্ষার মাধ্যমেই কাজে লাগানো সম্ভব।

 

কম্পিউটারের অবদান

দ্রুত ও নির্ভুলভাবে গণনা ও তথ্য সংগ্রহ করে সঠিক হিসাবের ক্ষেত্রে কম্পিউটারের অবদান অতুলনীয়। কম্পিউটার বর্তমানে মানুষের বিস্তার উপকার সাধন করেছে। যেসব কাজ মানুষের পক্ষে করা অসম্ভব সময় ও ব্য্যসাপেক্ষ কম্পিউটার আবিষ্কারের পর সেসব কাজ অনেক সহজ ও দ্রুততর হয়েছে। আজকের দিনে মানুষের সময়ের মূল্য অনেক বেশি। আর সময় বাঁচানোর অপরিহার্য যন্ত্র হচ্ছে কম্পিউটার। সুতরাং কম্পিউটার শুধু কাজেই নয় মানুষের জীবনযাত্রার মানও উন্নত করেছে। তাই কম্পিউটার হচ্ছে মানবসভ্যতার সর্বোৎকৃষ্ট অবদান।

 

কম্পিউটারের ক্রমোন্নতি

কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা সৃষ্টি হয় ১৮৩৩ সালে। কিন্তু ১৯৪৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ ইলেক্ট্রনিক কম্পিউটার আবিষ্কৃত হয়। এর নাম এনিয়াক। এর সাহায্যে সেকেন্ডে তিনশটি গুণের গুণফল বের করা যেত। যুদ্ধের সময় মার্কিন সেনাবাহিনী গোপন তথ্য বের করার জন্য এ কম্পিউটার ব্যবহার করতো। সময়ের সাথে সাথে কম্পিউটারের গঠণপ্রণালীর একেকটি ধারণাকে বলা যেতে পারে একেকটি জেনারেশন। এভাবে তিনটি জেনারেশন পার করে বর্তমান চতুর্থ জেনারেশনের কম্পিউটার চলছে। আগামী দশক নিয়ে পঞ্চম জেনারেশনের কম্পিউটার ইতিমধ্যেই আমরা পেয়ে গেছি।

 

কম্পিউটার শিক্ষাব্যবস্থা

কম্পিউটার এখন মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম থেকে শুরু করে অফিস আদালত কলকারখানা প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় দীক্ষা গুরুর ভূমিকা পালন করছে সেজন্য কম্পিউটার শিক্ষা ব্যাপক ও সামগ্রিক হওয়া প্রয়োজন। সে সরকারি প্রচেষ্টাতেই হোক আর বেসরকারি বা ব্যক্তিগত উদ্যোগ বা ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাতেই হোক। এখনকার দিনের চাহিদা তথা যুগের দাবি মেটাতে কম্পিউটার শিক্ষাকে মানুষের হাতের নাগালে বা মানুষের দোর গোড়ায় পৌঁছে দিতে ব্যাপক আয়োজন দরকার। সেজন্য প্রয়োজন বিপুল জনশক্তি নিয়োগ। একটি জাতির দক্ষ জনশক্তি যখন কাজে নিযোজিত থাকে তখন জাতি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে। প্রতিটি মানুষের মাঝে কম্পিউটারের জ্ঞানকে সম্প্রসারিত করা এখনকার দিনের দাবি বা যুগের দাবি। এ লক্ষ্যে কম্পিউটার শিক্ষাকে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে সমস্ত বিশ্বে কম্পিউটার শিক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভরতে ব্যাপক তোড়জোড় চলছে ফলে তারা এক্ষেত্রে বিপুল সাফল্যকে করায়ত্ত করে ফেলেছে। তাবৎ বিশ্বে এ ব্যাপারে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। ইদানিং আমাদের দেশে অবশ্যই বিদ্যালয় পর্যায়ে পৌঁছে গেছে কম্পিউটার শিক্ষা। দেশের কারিগরি শিক্ষাবোর্ড অবশ্য প্রথম থেকেই তাদের শিক্ষা কারিকুলামে কম্পিউটারকে বাধ্যতামূলক করেছে। কম্পিউটার শিক্ষাকে শুধু মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখলেই চলবে না উচ্চ মাধ্যমিক এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় মান পর্যন্তও চালু করা দরকার। বর্তমান বিশ্বে যা চলছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কম্পিউটার শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করা হলে তা জাতির জন্য মঙ্গলই বয়ে আনবে বলে সকল বিদ্ব্যানজন বিশ্বাস করেন। কম্পিউটার শিক্ষাকে মানুষের কাছাকাছি নিয়ে যাওয়ার সরকারি প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানানো যায় এ চেষ্টা যাতে ফলবতী হয় সেজন্য আমাদের সকলকে জাতীয়ভাবে সচেষ্ট হতে হবে।

 

বাংলাদেশে কম্পিউটারের আবির্ভাব

বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটারের আবির্ভাব ঘটে ষাটের দশকে। ১৯৬৪ সালে আনবিক শক্তি কমিশনে আইবিএম ১৬২০ সিরিজের একটি কম্পিউটার আমদানির মাধ্যমে প্রাথমিক ক্ষুদ্র পরিসরে বাংলাদেশে কম্পিউটারের পদচারণা শুরু হয়। কিন্তু আশির দশকের শুরুতে বিদেশী কোম্পানীর মাধ্যমে এখানে কম্পিউটারের আবির্ভাব ঘটে। অতঃপর ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক কাজে। অফিস আদালতে ও কলকারখানায় ব্যাপকভাবে কম্পিউটারের ব্যবহার শুরু হয়।

 

তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কম্পিউটার

কম্পিউটার এখন তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এক অবাক করা ভূমিকায় অভিনয় করছে। আধুনিক তথ্য যোগাযোগের জগতে ই মেইল ফ্যাক্স ফোন ইন্টারনেট প্রভৃতির প্রাণবায়ু হয়ে বিরাজ করছে কম্পিউটার। বিশ্বের আন্তর্জাতিক তথ্য প্রবাহের যুগে অবাধ বিচরণের ক্ষেত্রকে কম্পিউটার অভাবিত প্রসারণ ঘটিয়ে বিপুল বিস্ময়ে কাজ করে যাচ্ছে। সাথে সাথে মানুষ স্ফীত করে তুলছে তার জ্ঞানভাণ্ডারকে। মানুষ তার অসীম আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করতে এখন এককভাবে নির্ভর করছে কম্পিউটারের ওপর এবং যথার্থভাবেই সে সাফল্য কুড়িয়ে নিচ্ছে। কম্পিউটার মানুষের দৈনন্দিন তথ্য আদান প্রদানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কম্পিউটারের একচ্ছত্র আধিপত্য এতটাই ব্যাপক ও দৃঢ়তার আস্থায় অধিষ্ঠিত যে মানুষের জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সে জড়িত হচ্ছে। হয়ে উঠেছে মানবসভ্যতার সিঁড়িতে সিঁড়িতে বিছানো লাল গালিচা বা কার্পেট। হয়ে উঠেছে মানুষের এক পরম সুহৃদ। কম্পিউটারের এ ভূমিকাকে দ্বিমত পোষণ করতে বোধ হয় এখনকার জগতে আর কেউ নেই।

 

বাংলাদেশে কম্পিউটারের সম্ভাবনা

নব্বই এর দশকে এদেশে প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে কম্পিউটার শিক্ষা শুরু হয়। বর্তমানে বাংলাদেশে বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটারের ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। তবে আমাদের দশে কম্পিউটার বিজ্ঞান অধ্যয়নের সুযোগ সীমিত। কেবল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও গুটিকয়েক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে এ সুযোগ রয়েছে। এখান থেকে শিক্ষা লাভ করে অনেকেই আন্তর্জাতিক মানের সফটওয়ার তৈরি করছে।

 

উপসংহার

আধুনিককালে বিজ্ঞানের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান কম্পিউটারের উপর নির্ভর করতে পারায় মানুষের পরিশ্রম অনেক লাঘব হয়েছে এবং মানুষের শক্তির অপব্যয়ও কমে গেছে। বর্তমানে আমাদের বাংলাদেশেও কম্পিউটারের ব্যবহার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ব্যাংক ও বিমানসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অফিসে প্রচুর কম্পিউটার ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন কম্পিউটার মুদ্রণও এদেশে প্রাধান্য পেয়েছে।

  • প্রবন্ধ রচনা : দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান
  • প্রবন্ধ রচনা : বিজ্ঞান ও কুসংস্কার [16 Point]
Click to rate this post!
[Total: 0 Average: 0]

বিজ্ঞান
Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email

Related Posts

প্রবন্ধ রচনা : মানব কল্যাণে বিজ্ঞান [16 Point]

July 6, 2025

প্রবন্ধ রচনা: কর্মমুখী বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা [16 Points]

June 29, 2025

প্রবন্ধ রচনা : বৃক্ষরোপণ অভিযান [18 Points]

June 28, 2025
Leave A Reply Cancel Reply

Recent Posts
  • সকল গাণিতিক সূত্র : PDF
  • প্রবন্ধ রচনা : মানব কল্যাণে বিজ্ঞান [16 Point]
  • প্রবন্ধ রচনা : দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার [19 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা: কর্মমুখী বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা [16 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : বৃক্ষরোপণ অভিযান [18 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা [16 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য [8 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : নারীর ক্ষমতায়ন [15 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : বাংলার উৎসব [১৫ পয়েন্ট]
  • ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের টেবিল : 0°, 30°, 45°, 60°, 90°
Popular Educational sites

myallgarbage.com

qnafy.com

tori.top

share.myallgarbage.com

Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
  • About
  • Contact
  • Disclaimer
  • Privacy Policy
© 2025 eNoteShare. Publishing by SCSOFT.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.