Close Menu
  • সি-ক্যাটাগরি ফার্মেসী কোর্স পরীক্ষার প্রস্তুতি
  • বাংলা প্রবন্ধ রচনা
  • তথ্যকোষ
  • সাধারণ জ্ঞান
  • Grammar
  • Essay / Composition
  • List of Paragraphs
eNoteShare
Facebook X (Twitter) Instagram
Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest YouTube LinkedIn WhatsApp
eNote Share
MAG
eNote Share
Home | প্রবন্ধ রচনা : কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান [17 Points]

প্রবন্ধ রচনা : কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান [17 Points]

eNoteShareBy eNoteShareUpdated:June 25, 2025No Comments9 Mins Read প্রবন্ধ রচনা
কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান
কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান
Share
Facebook Twitter LinkedIn Pinterest Email

কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান

ভূমিকা

আমাদের দেশে সর্বামিতার বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তোলার জন্য কৃষি উন্নয়নে বিজ্ঞান-এর প্রয়োগ অত্যাবশ্যক। কারণ বিজ্ঞান আজ তার যে সর্বব্যাপী কল্যাণধর্মী বৈশিষ্ট্য নিয়ে মানুষের জীবনের সর্বত্র বিস্তার লাভ করছে তাতে নির্দ্বিধায় বলা যায় বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। ছোট্ট গৃহকোণ থেকে শুরু করে সীমাহীন মহাকাশে বিজ্ঞানের অবারিত জয়যাত্রা। সভ্যতার উৎকর্ষপূর্ণ বিকাশের পেছনে আছে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর অবদান। বিজ্ঞানের অবদান বিচিত্র পথে গমন করে সর্বত্রগামী হয়ে উঠেছে এমন দাবি উন্নত বিশ্বে অযৌক্তিক নয়। বিজ্ঞানের সহায়তায় এ দেশে কৃষি কর্মকাণ্ডকে যথেষ্ট সম্ভাবনাময় করে তোলার সুযোগ রয়েছে।

 

কৃষির অতীত কথা

কৃষিই মানব আদিমতম পেশা। তবে সুদূও অতীতে কৃষি ব্যবস্থা বলতে কিছুই ছিল না। জীবন ধারণের তাগিদে আদিম অধিবাসীরা ফল মূল সংগ্রহ করত এবং মাছ ও জন্তু জানোয়ার শিকার করত। অনেক সময় বুনো খাবার একেবারেই জুটত না। ফলে খাদ্যের সন্ধানে তারা এক স্থান থেকে ঘুরে বেড়াত। অবশেষে তারা পশূ পালন ও বীজ বপন করতে শেখে। এরই ফলে খাদ্যদ্রব্য সুলভ হয় এবং জীবনযাত্রা হয়ে উঠে অপেক্ষাকৃত সহজ। তবে তখন কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং চাষপদ্ধতি এতটা উন্নত ছিল না । সময়ের ব্যবধানে বিজ্ঞানের অবদানে কৃষিক্ষেত্রে নতুন প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি পেয়েছে।

 

আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি

কৃষি খামারের আধুনিক যন্ত্রপাতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো বৈদ্যুতিক দোহর যন্ত্র (মিল্কার) শীতলকারী যান্ত্র ( কুলার) মাখন তোলার যান্ত্র ( ক্রিম সেপারেটর) ভোজ্য দ্রব্য পেষক যন্ত্র ( ফিড গ্রাইন্ডার) এবং সার ছিটাবার যন্ত্র ( ম্যানিউর স্প্রেডার) ইত্যাদি। সেল্ফ বাইন্ডার বা স্বয়ং বন্ধনকারী যন্ত্র ফসল কাটার সঙ্গে সঙ্গে শস্যের আঁটি বাঁধে। আর কম্বাইন হারভেস্টের যন্ত্রটি একই সাথে ফসল কাটে এবং ঝাড়াই মড়াই করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কানাডা অস্ট্রেলিয়া রাশিয়া প্রভৃতি দেশের খামারগুলোতে শক্তিশালী এক একটি ট্রাক্টর তিন চারটি ফসল কাটার যন্ত্রকে একসঙ্গে কাজে লাগায় এবং ১০০ একর পর্যন্ত জমির কাজ একদিনে সম্পন্ন করতে পারে।

 

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কৃষির গুরুত্ব

কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অভাবনীয় উন্নতি কাজে লাগাতে পালে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আমূল পরির্বতন ঘটবে। কেননা বাংলাদেশ একটি কৃষিনির্ভর দেশ। এ দেশের অধিকাংশ মানুষ এখনও কৃষিজীবি। বাংলাদেশের মোট জাতীয় আয়েল শতকরা ৩৮ ভাগ আসে কৃষি থেকে এবং রপ্তানি বাণিজ্যের প্রাং ১৪ ভাগ আসে কৃষিজাত দ্রব্য রপ্তানি থেকে। এ ছাড়া শিল্প কারখানায় কাঁচামাল সরবরাহের উৎস হিসেবেও বাংলাদেশে কৃষি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

 

বাংলাদেশের কৃষির বর্তমান অবস্থা

বাংলাদেশ প্রকৃতির অপার স্নেহধন্য। এদেশের মাটি উর্বর এবং আবহাওয়া ফসলবান্ধব। রয়েছে পর্যাপ্ত প্রাকৃতিক জলভান্ডার। এ ছাড়া বাৎসরিক গড় বৃষ্টিপাতও চাষাবাদের পক্ষে উনুকূল। এরপরও বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন সন্তোষজনক নয়। বাংলাদেশের কৃষিদের কাছে আধূনিক কৃষি ব্যবস্থা প্রয়োগের মতো জ্ঞান ও অর্থ না থাকাই এ কারণ। ফলে জমি থেকে কাক্সিক্ষত ফসল আসছে না। তাই খাদ্যে স্বয়ংস্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্য পূরণে ক্রমাগত ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে বাংলাদেশ।

 

কৃষির বর্তমান অবস্থা

আধুনিক কৃষিতে বিজ্ঞানের অনেকটা প্রভাব পড়লেও এদেশের কৃষি ব্যবস্থা এখনও মান্ধাতার আমলের। একজন জীর্ণ কৃষক ততোধিক জীর্ণ দুটি বলদকে ঠেলে কৃষি উৎপাদনের ব্যর্থ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। উন্নত কৃষি পদ্ধতি প্রয়োগের প্রয়োজনীয় জ্ঞান যেমন তাদের নেই তেমনি উন্নত কলাকৌশল প্রয়োগের জন্য উপযুক্ত আর্থিক সামর্থ্যেরও তাদের দারুণ অভাব। শিক্ষা থেকে বঞ্চিত কৃষক সমাজের কাছে উন্নত কৃষি পদ্ধতির আহ্বান পৌঁছায়নি। ভূমিহীন বা প্রান্তিক চাষীরা বেঁচে থাকার তাগিদে পরের জমিতে শ্রম দেয়। সেখানে উন্নত পদ্ধতির চিন্তার কোন সুযোগ নেই। এ কারণে কৃষকেরা আবাদী জমি ভালোভাবে চাষ করতে পারে না ভালো বীজ সপ্তাহে ব্যর্থ হয় প্রয়োজনীয় সার ও সেচের অভাব ঘটে কীটনাশকের প্রয়োগও যথাযথ হয় না ফসল মাড়াই ও সংরক্ষণের ভালো ব্যবস্থা করতে পারে না। ফলে জমি থেকে যে পরিমাণ ফসল উৎপাদিত হয় তা দুর্ভাগ্যজনকভাবে অপর্যাপ্ত এবং তা কৃষকের জীবনে স্বচ্ছলতা আনয়ন করতে পারে না। উৎপন্ন ফসলের উত্তম বাজারও কৃষকেরা পাঁভ করে না। সামগ্রিক পরিস্থিতি মিলিয়ে দেশের চাহিদা মেটাবার মত খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়। বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ এদেশে অশিক্ষা আর দারিদ্র্যের কারণে কৃষিকাজে আধুনিক বৈজ্ঞানিক জ্ঞানলহ কলাকৌশল প্রবর্তন করা পরিপূর্ণরূপে সম্ভব না হওয়ায় খাদ্য সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হচ্ছে না। খাদ্যশস্য ছাড়া কৃষির অন্যান্য ক্ষেত্রেও যেমন- ফলফলাদি শাকসবজি ডাল কালাই তৈলবীজ ইত্যাদি উৎপাদনে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়নি। বলে সেখানেও ফলন খুবই কম। এতে দেশের চাহিদা নিটছে না।

 

কৃষিকাজে বিজ্ঞানের প্রয়োগ

মানব জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রয়োগে যে অগ্রগতি ও উন্নতি সাধিত হচ্ছে কৃষির বিষয়টি তার বার্তিক্রম নয়। বিশ্বে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির প্রেক্ষিণে সচেতন মানব সমাজ উন্নত বিশ্বে বিজ্ঞানের সহায়তায় কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে। অগ্রসর বিশ্বে আবাদী জমি বাড়াতে বিজ্ঞানের অবদানকে কাজে লাগানো হচ্ছে। সার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেক উন্নতি সাধিত হচ্ছে। উন্নতমানের বীজ উৎপাদনের জন্য প্রচুর গবেষণার কাজ চলছে। খাদ্যশস্যের উপর গবেষণা করে নতুন নতুন জাতের ধান ও অত্যন্ত উন্নতমানের কৃষিপণ্য উৎপাদনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চাষাবাদ পদ্ধতি যান্ত্রিকীকরণ করার ফলে আগের চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে চাষাবাদ। সার ও সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে বিশ্বের অনেক অনুর্বর জায়গায় এখন সবুজ ফসলের সমারোহ। বিজ্ঞানের বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে উন্নত দেশগুলো কৃষিক্ষেত্রে অনেক বেশি সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনা হচ্ছে বলেই এখনও বিশ্বের অগণিত ক্ষুধার্ত মানুষের আহার যোগানো সম্ভব হচ্ছে।

 

বাংলাদেশের কৃষিকার্যে বিজ্ঞান

আধুনিক বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা এদেশের কৃষিকাজে জড়িত হচ্ছে। কিন্তু তা মহানগরীর গবেষণাগার জেলা বা থানা সদরের কৃষি অফিসে সীমাবন্ধ। এখনও তা সব কৃষকের ফসলের মাঠে ছড়িয়ে পড়েনি। দেশে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ধান গবেষণা কেন্দ্র কৃষি সম্পর্কিত আরও কতিপয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কৃষি বিষয়ে নানাবিধ গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কৃষির বিভিন্ন দিক সম্পর্কে উচ্চমানের গবেষণা চলছে। আধুনিক বিশ্বে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য উন্নত দেশসমূহের কৃষিক্ষেত্রে উন্নয়ন ও আবিষ্কারের বাণী এদেশেও স্বল্প সময়ে এসে পৌঁছেছে। আধুনিক বৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনার জগৎ থেকে যে এদেশের কৃষিবিজ্ঞানীরা পিছিয়ে পড়ে আছে এমন ধারণাও ঠিক নয়। কিন্তু উন্নত বিশ্বের কৃষির সাফল্য এদের দরিদ্র কৃষক সমাজকে তেমন কোন উপকার যে করতে পারেনি তা দেশের কৃষির অবস্থা লক্ষ্য করলেই সহজে অনুধাবন করা যায়। এক কথায়, এখনও আমাদের দেশের কৃষকদের জীবনে বিশ্বের বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি আশীর্বাদ হয়ে উঠেনি।

 

মানবসভ্যতা ও কৃষি

মানুষের সভ্যতার ইতিহাস অত্যন্ত পুরােনাে। তবে সেই সভ্যতার প্রথম প্রতিষ্ঠা হয়েছিল কৃষির হাত ধরে । মানুষ শিকারের বিকল্প হিসেবে কৃষিকে বেছে নিয়ে তার জীবনকে সুস্থির করেছিল। তাই এটি মানুষের আদিমতম জীবিকার একটি উপায়ও বটে। সভ্যতার ইতিহাসকে পর্যালােচনা করে দেখা যায় যে কৃষিতে যে দেশ যত তাড়াতাড়ি অগ্রগতি সাধন করতে পেরেছে সে দেশ তত তাড়াতাড়ি সভ্যতার উপরের সিড়িকে অতিক্রম করেছে। এ থেকে আমরা উপলব্ধি করতে পারি যে কৃষির উন্নতিতেই সমাজ দেশ ও সভ্যতার ক্রমন্নোতি সম্ভব।

 

প্রাচীন যুগের কৃষি

প্রাচীন যুগের পৃথিবী মানুষের জন্য খুব সুখকর ছিল না। পদে পদে তাদের জন্য বিপদ অপেক্ষা করত এবং ভয়াবহ সব বন্য জীবজন্তুর সঙ্গে তাদের লড়তে হতাে। এ অবস্থায় হঠাৎ তার হাতে কৃষিকাজের সূত্র আবিষ্কৃত হয়। প্রাথমিক অবস্থায় মানুষ নিজেই লাঙলের ভার বহন করত। কিন্তু তৎপরবর্তীকালে গরু ঘােড়া ও মহিষের সাহায্যে জমি চাষের প্রচলন করেছিল। কিন্তু প্রকৃতির কাছে মানুষ ছিল ভীষণ অসহায়। বন্যা খরা ঝড় অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টিতে ফসলের জমিতে কী করণীয় তা তারা জানত না। একই জমিতে একইভাবে তারা ফসল ফলানাের চেষ্টা করত ফলে জমির উর্বরতা শক্তি কয়ে কাঙ্ক্ষিত ফসল হতাে না। এছাড়া বীজ সম্পর্কেও তাদের বিশদ কোনাে জ্ঞান ছিল না। তাই প্রাচীন কৃষির ইতিহাস খুব সুখকর ছিল না বলেই মনে হয়।

 

মধ্যযুগের কৃষি

মধ্যযুগে মানুষ চাকা আবিষ্কার করে বহুদূর এগিয়ে যায়। এ আবিষ্কার কৃষিতেও ব্যাপক উন্নতি সাধন করে। সমগ্র পৃথিবীর পাশাপাশি ভারতীয় উপমহাদেশেও কৃষি মানুষের জীবিকার প্রধানতম বিষয় হয়ে দেখা দেয়। উন্নত ফসল ফলানাের জন্য মানুষ নানাবিধ পরিকল্পনা করতে থাকে। বনজঙ্গল কেটে নগর পত্তনের পাশাপাশি মানুষ কৃষি জমিও বৃদ্ধি করতে থাকে। নদী তীরবর্তী অঞ্চলসমূহে পলিযুক্ত মাটিতে কৃষি কাজ করে ব্যাপক সাফল্য পায়। বাংলা সাহিত্যের মধ্যযুগে যে মঙ্গলকাব্যসমূহ লেখা হয়েছে তাতে কৃষিকাজের নানারকম প্রয়ােগ ও উদ্ভাবন সম্পর্কে তথ্য দেয়া হয়েছে। সে সমস্ত তথ্য থেকে ধারণা করা যায় মধ্যযুগের পৃথিবীতে কৃষি তার প্রসার ভালােভাবেই শুরু করেছিল।

 

আধুনিক কালের কৃষি

অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে এবং উনবিংশ শতাব্দীর গােড়ার দিকে বেঁনেসাস তথা শিল্পবিপ্লবের মাধ্যমে কৃষি বিস্তৃত উন্নতি সাধন করে। কৃষিক্ষেত্রে কৃষক উন্নত যন্ত্রপাতি বীজ সার প্রভৃতির সঙ্গে পরিচিত হয়। কাঠের লাঙলের পরিবর্তে যন্ত্র দ্বারা চাষ শুরু হয়। সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের নানা পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়। খরায় ফসল ফলানাের পদ্ধতি সম্পর্কে কৃষকরা অবগত হয়। বিদ্যুৎচালিত পাম্পের সাহায্যে সেচ দেয়ার ফলে শুকনাে মাটিতেও সবুজ ফসল হেসে ওঠে। উন্নত বীজ রাসায়নিক সার আবহাওয়ার পূর্বাভাস মাটির পরীক্ষানিরীক্ষা করে কৃষক এখন মাটিতে ফসল ফলায়। ফলে বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় ব্যতিরেকে ফসল ফলানােতে তেমন কোনাে সমস্যায় পড়তে হয় না।

 

উন্নত দেশের কৃষি

বিজ্ঞানের অভিঘাতে ভর করে উন্নত দেশগুলােতে কৃষি কাজ পরিচালিত হচ্ছে। বীজবপন থেকে শুরু করে। ফসল ঘরে তােলা পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই তারা যন্ত্রের দ্বারস্থ হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের কৃষিযন্ত্র যেমন– মােয়ার (শস্য ছেদনকারী যন্ত্র) রপার (শস্য কাটার যন্ত্র) বাইন্ডার (শস্য বাধাই করার যন্ত্র) থ্রেশিং মেসিন (মাড়াই যন্ত্র) ম্যানিউর স্পেড়ার (সার বিস্তারণ যন্ত্র) উন্নত দেশের কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। ফিলিপাইন চীন কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে উৎপাদন বহুগুণে বৃদ্ধি করা সম্ভব হচ্ছে। জাপানের জমির উর্বরতা অনেক কম কিন্তু তারা উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষিক্ষেত্রে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে ।

 

বর্তমান কর্তব্য

কৃষিকাজে বিজ্ঞানের অবদানের কিছু স্বাক্ষর এদেশের মাঠে দেখা গেলেও তাকে ব্যাপক করে তোলা সত্যাবশ্যক। আধুনিক কৃষি শিক্ষার ব্যাপক সম্প্রসারণ করা দরকার। কৃষিমন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মকাণ্ড গ্রাম পর্যায়ে সম্প্রসারিত করতে হবে। উন্নত বীজ প্রয়োজনীয় সার কার্যকর সেচ ফসল সংরক্ষণ ব্যবস্থা ইত্যাদি সব ক্ষেত্রেই আধুনিক বিজ্ঞানের জ্ঞানে কৃষকদের সমৃদ্ধ করতে হবে।

 

কৃষিকাজে বিজ্ঞানের সফল প্রয়োগের উপায়

কৃষিভিত্তিক দেশ হিসেবে কৃষির উন্নতির উপরই আমাদের দেশের সামগ্রিক উন্নতি নির্ভরশীল। কিন্তু কৃষিদের অজ্ঞতার জন্য বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতি আমরা ব্যাপকভাবে ব্যবহার করতে পারছি না। তাই প্রথমেই দেশে শিক্ষার হার বাড়াতে হবে । কৃষকদের আধুনিক কৃষি পদ্ধতির সঙ্গে পরিচয় করাতে হবে। বর্তমানে বিভিন্ন সরকারি কৃষি সংস্থা বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষির উপর গবেষণা চালাচ্ছে। দেশের কৃষকদের এ পরীক্ষা নিরীক্ষায় ফল জানিয়ে দেবার ব্যবস্থা কতে হবে এবং তারা যাতে বিজ্ঞানসম্মতভাবে কৃষিকাজ করতে পারে সেদিকে সক্রিয় দৃষ্টি দিতে হবে। কৃষিতে উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের গ্রামে গ্রামে গিয়ে কৃষকদের আধুনিক প্রযুক্তির সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। কৃষক সম্প্রদায়ের হাতে আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা কতে হবে। এ ক্ষেত্রে কৃষি সমবায় তৈরির উদ্যোগকে বেগবান করতে হবে। কেননা কৃষিপন্য উৎপাদন ও সংরক্ষণ ও বিপণনের প্রতিটি ধাপে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে কৃষি সমবায় কার্যকর ভুমিকা রাখতে হবে। এজন্য সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

 

বৈজ্ঞানিক কৃষি ও অর্থনীতি

বিজ্ঞানভিত্তিক কৃষিকাজের ফলে অর্থনীতিতে বড় পরিবর্তন সাধিত হওয়া সম্ভব। অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এই যে আমরা এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। কিছু কিছু ফসল আমরা বাইরেও রপ্তানি করতে সমর্থ হচ্ছি। জীবন রহস্য আবিষ্কারের ফলে পাটের সােনালি দিন আবার আমাদের মধ্যে আসতে শুরু করেছে। বহু আগে থেকেই আমরা বিভিন্ন দেশে চা রপ্তানি করে থাকি। সুতরাং সর্বাধুনিক বিজ্ঞানভিত্তিক চাষাবাদের ফলে আমাদের পক্ষে এ সাফল্যকে আরও বড় পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

 

উপসংহার

বাংলাদেশে শিল্পোয়নের সম্ভাবনা সুদূর পরাহত। আমাদের জাতীয় উন্নয়ন সম্পূর্ণরূপে কৃষির উপর নির্ভরশীল। আর একমাত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মাধ্যমেই কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে আমরা পরনির্ভরশীলতার অভিশাপ থেকে পরিত্রাণ পেতে পারি।

  • প্রবন্ধ রচনা : বিজ্ঞান ও কুসংস্কার
  • প্রবন্ধ রচনা : কৃষিকাজে বিজ্ঞান
Click to rate this post!
[Total: 1 Average: 5]

কৃষি বিজ্ঞান
Share. Facebook Twitter Pinterest LinkedIn Tumblr Email

Related Posts

প্রবন্ধ রচনা : মানব কল্যাণে বিজ্ঞান [16 Point]

July 6, 2025

প্রবন্ধ রচনা : দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার [19 Points]

June 30, 2025

প্রবন্ধ রচনা: কর্মমুখী বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা [16 Points]

June 29, 2025
Leave A Reply Cancel Reply

Recent Posts
  • সকল গাণিতিক সূত্র : PDF
  • প্রবন্ধ রচনা : মানব কল্যাণে বিজ্ঞান [16 Point]
  • প্রবন্ধ রচনা : দৈনন্দিন জীবনে কম্পিউটার [19 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা: কর্মমুখী বা বৃত্তিমূলক শিক্ষা [16 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : বৃক্ষরোপণ অভিযান [18 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : শৃঙ্খলা বা নিয়মানুবর্তিতা [16 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণের তাৎপর্য [8 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : নারীর ক্ষমতায়ন [15 Points]
  • প্রবন্ধ রচনা : বাংলার উৎসব [১৫ পয়েন্ট]
  • ত্রিকোণমিতিক অনুপাতের টেবিল : 0°, 30°, 45°, 60°, 90°
Popular Educational sites

myallgarbage.com

qnafy.com

tori.top

share.myallgarbage.com

Facebook X (Twitter) Instagram Pinterest
  • About
  • Contact
  • Disclaimer
  • Privacy Policy
© 2025 eNoteShare. Publishing by SCSOFT.

Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.