অর্থই অনর্থের মূল – ভাবসম্প্রসারণ

অর্থই অনর্থের মূল

সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনধারণের জন্য মানুষ অর্থের ওপর নির্ভর করে। অর্থ আমৃত্যু মানুষের প্রয়োজন মেটায় বলে অর্থ ছাড়া জীবনকে অনেকেই অর্থহীন মনে করে। মানুষের প্রতিপত্তি সম্মান বর্তমান সমাজে অর্থ দ্বারা নির্ণয় করা হয়। তাই মানুষের অর্থ অর্জনের চেষ্টার কমতি নেই।

অর্থ যেমন মানুষের সকল সুখ-শান্তি, মর্যাদা, প্রতিপত্তি সবকিছুর মূলে কাজ করে তেমনি হানাহানি, প্রতিহিংসা, অশান্তি তথা সমস্ত অপকর্মের মূলেও কাজ করে। অর্থের লোভেই মানুষ নীতিবর্জিত হয়ে খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। অর্থের কারণেই আপনজনের ভালোবাসাহীনতা, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কছেদ, বন্ধুতে বন্ধুতে বিচ্ছেদ, জাতি-জাতিতে হানাহানি ও যুদ্ধ-বিগ্রহের সৃষ্টি হয়।
জগতের যাবতীয় অনাসৃষ্টি, অঘটন, বিশৃঙ্খলা সবকিছুর মূলে রয়েছে অর্থ। অর্থ এমন এক উপাদান যার নেশায় মানুষ নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্টতম কাজ করতে দ্বিধাবোধ করে না। অর্থ নেশায় চিন্তা- চেতনা, আচার-ব্যবহার, কাজকর্ম সবকিছুই অর্থমুখী হয়ে ওঠে। অর্থের জন্য মানুষ মানুষকে হত্যা করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। অর্থ এমন এক জিনিস যার মোহে পড়ে মানুষ নীতি, চরিত্র, বিবেক বিসর্জন দেয়। অর্থের অযাচিত বা অপব্যবহার ধ্বংসই ডেকে আনে, অর্থ হয়ে উঠে সকল অশান্তির উৎস। অর্থের প্রতি মাত্রাতিরিক্ত আসক্তি মানুষকে পশুত্বের মোড়কে আবৃত করে।

সে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের সামগ্রিক স্বার্থকে বাদ দিয়ে নিজ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। জগতের সকল অপকর্মের পেছনেই

অর্থনৈতিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় জড়িত। অর্থই মানুষকে কুপথের দিকে ধাবিত করে।

শিক্ষা: সুষ্ঠু, সুন্দর, সুশৃঙ্খল ও স্বাভাবিক জীবনের জন্য অর্থের প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যায় না। আবার অর্থই অনাসৃষ্টি, অশান্তি ও হিংসার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

Click to rate this post!
[Total: 1 Average: 5]

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like