পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার
সূচনা
পরিবেশ শব্দটি ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়। জল স্থল অন্তরীক্ষ ব্যাপি নানা পদার্থের সমন্বয়ে যে বিশাল আয়তন মানুষকে পরিবেষ্টিত করে আছে তাই পরিবেশ। সংক্ষেপে বলা যায় আমাদের পারিপার্শ্বিক অর্থাৎ চারপাশে যে অবস্থা বিদ্যমান তাই হল পরিবেশ। আমাদের চারপাশে আছে গাছপালা নদী নালা আলো বাতাস পাহাড় পর্বত বন জঙ্গল জীব জন্তু ইত্যাদি। উল্লেখিত সবগুলো মিলে যে অবস্থা বিরাজ করে তাই হচ্ছে পরিবেশ। ধরা যাক আমাদের আশে পাশের বাতাস যখন দুর্গন্ধময় ও দূষিত হয়ে পড়ে এবং তা যদি আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় তখন আমরা বলি দূষিত পরিবেশ বা খারাপ পরিবেশ। আর যদি বাতাস নির্মল ও বিশুদ্ধ থাকে এবং আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল হয় তবে আমরা বলি পরিবেশ ভাল বা অনুকূল।
পরিবেশ দূষিত হওয়ার কারণ
বিভিন্ন কারণে পরিবেশ দূষিত হয়। বেঁচে থাকার জন্য আমরা বাতাসের অক্সিজেন নিঃশ্বাসের সাথে গ্রহণ করি এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ত্যাগ করি যা একটি বিষাক্ত গ্যাস। এভাবে নিঃশ্বাস বর্জনকালে আমরা প্রতিনিয়ত বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড ছেড়ে দেই এবং তার ফলে বাতাস অবিরত দূষিত হচ্ছে। এ স্বাভাবিক প্রক্রিয়া ছাড়াও জীবন ধারণের কাজে নানাভাবে আমরা বায়ু দূষিত করছি। আমাদের বাড়ীঘরের ময়লা আবর্জনা পশু পক্ষীর মৃতদেহ মলমূত্রের দুর্গন্ধ ইত্যাদিতে বায়ু দূষিত হয় । তাছাড়া বিভিন্ন কলকারখানার চিমনির ধোঁয়া বাতাসে মিশে যায় ও রাস্তা ঘাটে যানবাহন চলাকালে গাড়ীর কালো ধোঁয়ায় বায়ু দূষিত হয়। রান্না ও ইটের ভাটায় ইট পোড়ানোর কাজে কাঠ ও কয়লা ব্যবহার করা হয়। এগুলো হতে প্রচুর ধোঁয়া নির্গত হয়ে বায়ুদূষণ ঘটে । পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণেও বিস্তৃত এলাকার বায়ু দূষিত হয়।আমাদের বেঁচে থাকার আর একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হচ্ছে পানি। পানি ব্যতীত কোন প্রাণী বাঁচতে পারে না। এ পানিও নানাভাবে দূষিত হচ্ছে। দেশের কলকারখানা হতে নির্গত বর্জ্য পদার্থ রাসায়নিক দ্রব্য গবাদি পশুর ভাসমান পঁচা মৃতদেহ জমিতে ব্যবহৃত নানা প্রকার বিষাক্ত কীটনাশক দ্রব্য মানুষ ও জীবজন্তুর মল মূত্র ইত্যাদি বৃষ্টির পানি ও ড্রেন দ্বারা নদ নদী ও খালবিলে পতিত হয়ে পানি অবিরাম দূষিত হচ্ছে। এ ছাড়াও লঞ্চ স্টীমার ইত্যাদির বর্জ্য পদার্থ দ্বারাও নদীর পানি দূষিত হচ্ছে।রেডিও মাইক লাউডস্পিকার যানবাহনের বিকট হর্ণ বা শব্দ আতসবাজীর আকস্মিক আওয়াজ ইত্যাদি দ্বারা শব্দদূষণ ঘটে এবং আমাদের শ্রবণ যন্ত্র ও হৃদযন্ত্রের প্রভূত ক্ষতি সাধিত হয।
পরিবেশ দূষণের কুফল
পরিবেশ দূষিত হলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে অনাবৃষ্টি অতিবৃষ্টি ঝড় ঝঞা ইত্যাদি প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়। উদাহরণস্বরূপ দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হলে মাটিতে পানির স্বাভাবিক স্তর অনেক নিচে চলে যায়। ফলে ওপরের স্তরের মাটি রসহীন হয়ে পড়ে। মাটি রসহীন হয়ে পড়লে গাছপালার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে না এবং ফসলাদি ঠিকমত হয় না। ফসলাদি ঠিকমত না হলে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। আবার গাছপালার অভাবে জীবজন্তুরও টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ে। সুতরাং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হলে মানুষ ও জীবজন্তু উভয়ের জীবন ধারণের পক্ষে ব্যাঘাত ঘটে। ইদানিং জানা যাচ্ছে, বায়ুমণ্ডলের ওপরের ওজোন স্তর (৩) বায়ু দূষণের ফলে ক্রমেই অধিক পুরু হয়ে যাচ্ছে। ফলস্বরূপ সূর্যের তাপ ঠিকমত বিকিরিত হতে না পেরে পৃথিবীর স্থলভাগ আরো অধিক উত্তপ্ত হয়ে উঠবে এবং এর প্রতিক্রিয়ায় দুই মেরু প্রদেশের পুঞ্জীভূত বরফের স্তর গলে গিয়ে সারা বিশ্বব্যাপী মহাপ্লাবন ঘটবে।
প্রতিরোধ ও প্রতিকার
যেহেতু পরিবেশকে আমরা নিজেরাই দূষিত করি, সেহেতু একে দূরণমুক্ত রাখার জন্য আমাদেরকেই সচেষ্ট হতে হবে। বায়ুদূষণ প্রতিরোধকল্পে অধিক পরিমাণে গাছপালা লাগাতে হবে যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের অভ্যাস পরিহার করে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে হবে ইটের ভাটায় লম্বা চিমনী ব্যবহার করতে হবে এবং জীবজন্তুর মৃতদেহ মাটিতে পুঁতে রাখতে হবে। পানিদূষণ রোধের জন্য কল কারখানার বর্জ্য পদার্থ নদ নদীতে ফেলা বন্ধ করতে হবে। জমিতে ব্যবহৃত কীটনাশক ওষুধ যাতে খাল বিল বা নদীতে না পড়ে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। শব্দদূষণ রোধে জনবসতি এলাকায় বিকট শব্দে হর্ণ বাজান যেমন নিষিদ্ধ করতে হবে তেমনি বিকট শব্দে লাউডস্পিকার মাইক রেডিও টেলিভিশন ইত্যাদি বাজানো নিষিদ্ধ করতে হবে যাতে জনসাধারণের অসুবিধার উৎপত্তি না ঘটে।
দূষণের যাত্রা শুরু
মানুষ একদিন নিজেদের আত্মরক্ষার প্রয়োজনে বন কেটে বসতি স্থাপন করলো উজাড় হলো বনের পর বন। সভ্যতার ঊষালগ্নে মানুষ আগুন জ্বালাতে শিখলো শুরু হলো সভ্যতার বিবর্তন প্রক্রিয়া। ক্রমান্বয়ে সেই অগ্নি স্ফুলিঙ্গকে পুঁজি করে নানুষ এগিয়ে চললো সামনের দিকে। অগ্রযাত্রা সূচিত হলো মানব সভ্যতার বিকাশ ঘটলো নতুন যুগের আবিষ্কৃত হলো নতুন নতুন কলকব্জা ও যন্ত্রপাতি স্থাপিত হলো নতুন নতুন অসংখ্য শিল্প কারখানা। এসব যন্ত্রসৃষ্ট ধোঁয়া জন্ম দিলো নব নব মারাত্মক গ্যাস। পারমাণবিক চুক্মির তেজষ্ক্রিয়তা ক্যান্সার অঙ্গ বিকৃতিসহ বিভিন্ন রোগের জন্মদাতা।
পরিবেশ দূষণের পরিণতি
পৃথিবীর বাসিন্দারাই তাদের সৃষ্ট কার্যকলাপের দ্বারা প্রতি মুহূর্তে পরিবেশকে দূষিত করে চলেছে। এতে এ গ্রহে প্রাণী জগতের অস্তিত্ব হয়ে উঠেছে সংকটাপন্ন। ব্যাপক হারে বৃক্ষ নিধন ও বনাঞ্চল উজাড় করার কারণে দেখা দিয়েছে গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া। বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মত বিষাক্ত গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবী নামের এ গ্রহটা মনুষ্য তথা প্রাণিকূলের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়ায় পৃথিবীর তাপমাত্রা দারুণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এর ফলে বরফ গলার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে এবং ক্লামান্বয়ে দুর্বে যাবে তিলে তিলে গড়ে তোলা মানব সভ্যতার ইঙ্গিতবাহী অনেক সম্বের নগসমস্ত তলিয়ে যারে উপকূলবর্তী নিম্নাঞ্চল বা মন্ত্র
দূষণের প্রকারভেদ
পরিবেশ বিভিন্নভাবে দূষিত হতে পারে। তন্মধ্যে- (১) শব্দ দূষণ (২) বায়ু দূষণ ও (৩) পানি দূষণের নাম উলে খযোগ্য। অপর পাতায় পৃথক পৃথকভাবে এগুলো আলোচিত হলো :
(১) শব্দ দূষণ
আমরা আমাদের সৃষ্টি সভ্যতার বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে প্রতিনিয়ত শব্দ উৎপাদন করে চলেছি। যেমন কলকারখানার শব্দ গাড়ির শব্দ মাইক প্রভৃতির শব্দ থেকে আমাদের পরিবেশ দূষিত হয়। এ দূষণকে শব্দজনিত পরিবেশ দূষণ বা শব্দ দূষণ বলে। এ শব্দ দূষণের ফলে নিদ্রাহীনতা শিরঃপীড়া মানসিক রোগ স্নায়ু দুর্বলতা প্রভৃতি রোগ দেখা দিতে পারে।
(২) বায়ু দূষণ
বাতাসে আমাদের জীবন ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে। জীবন ধারণের উপযোগী হ্রাস পেয়ে বাতাসে ক্ষতিকর উপাদান বৃদ্ধি পেলে তাকে বায়ু দূষণ বলে। সাধারণত কলকারখানা ও মোটর গাড়ির কালো ধোঁয়া ধুলো বালি কাঁট নাশক ঔষধ রাসায়নিক বর্জ্য গ্যাস ইত্যাদি বাতাসকে প্রতিনিয়ত দূষিত করে চলেছে। বায়ু দূষণের ফলে ফুসফুসের প্রদাহ হাপানি উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ক্যান্সার এবং আরো অনেক প্রকারের যোগ হতে পারে।
(৩) পানি দূষণ
সারা বিশ্বের শিল্প নগরীগুলো গড়ে উঠেছে নদী কিংবা সমুদ্রকে কেন্দ্র করে। এ সমস্ত শিল্প নগরীর বিভিন্ন কলকারখানার বর্জ্য পদার্থগুলো মিশে যাচ্ছে নদী ও সমুদ্রে। ফলে প্রতিনিয়ত দূষিত হয়ে চলেছে নদী ও সাগরের পানি। এছাড়া কৃষিতে বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির ফলে বেশি পরিমাণ রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহৃত হচ্ছে। এ কীটনাশক পানিতে মিশে পানিকে দূষিত করছে।
পরিবেশ দূষণের পরিণতি
পৃথিবীর বাসিন্দারাই তাদের সৃষ্ট কার্যকলাপের দ্বারা প্রতি মুহূর্তে পরিবেশকে দূষিত করে চলেছে। এতে এ গ্রহে প্রাণী জগতের অস্তিত্ব হয়ে উঠেছে সংকটাপন্ন। ব্যাপক হারে বৃক্ষ নিধন ও বনাঞ্চল উজাড় করার কারণে দেখা দিয়েছে গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়া।বায়ুমণ্ডলে কার্বন ডাই অক্সাইডের মত বিষাক্ত গ্যাসের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় পৃথিবী নামের এ গ্রহটা মনুষ্য তথা প্রাণিকূলের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। গ্রীন হাউজ প্রতিক্রিয়ায় পৃথিবীর তাপমাত্রা দারুণভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে এর ফলে বরফ গলার পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে। ফলে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে এবং ক্লামান্বয়ে দুর্বে যাবে তিলে তিলে গড়ে তোলা মানব সভ্যতার ইঙ্গিতবাহী অনেক সম্বের নগসমস্ত তলিয়ে যারে উপকূলবর্তী নিম্নাঞ্চল বা মন্ত্র
পরিবেশ দূষণ কি
পরিবেশ দূষণ হল মানুষের কর্মকান্ডের ফলশ্রুতিতে পরিবেশের উপাদানে অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন। আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তা নিয়েই আমাদের পরিবেশ। পরিবেশ কোনো একটি জীবের অস্তিত্ব বা বিকাশের ওপর ক্রিয়াশীল সামগ্রিক পারিপার্শ্বিকতা যেমন চারপাশের ভৌত অবস্থা জলবায়ু ও প্রভাববিস্তারকারী অন্যান জীব ও জৈব উপাদান। কোনো কারণে এই পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হওয়াকে পরিবেশ দূষণ বলে। বায়ু দূষণ পানি দূষণ শব্দ দূষণ মাটি দূষণ খাদ্য দূষণ আর্সেনিক দূষণ তেজস্ক্রিয় দূষণ ওজোন গ্যাস হ্রাস গ্রিন হাউস ইফেক্ট ইত্যাদি সবকিছুই পরিবেশ দূষণের অন্তর্ভুক্ত। বস্তুত মানব সৃষ্ট বিভিন্ন কারণই পরিবেশ দূষণের জন্যে বিশেষভাবে দায়ী।
পরিবেশ দূষণ সমস্যা
বিশ্ব পরিবেশের দ্রুত অবনতি হচ্ছে বাংলাদেশে গত কয়েক দশকে এ অবনতি হয়েছে আরও দ্রুত। বাংলাদেশে ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন পাস হয়েছে। কিন্তু জনবিস্ফোরণ বনাঞ্চলের অবক্ষয় ও ঘাটতি এবং শিল্প ও পরিবহ ব্যবস্থার অভাবের দরুন দেশের পরিবেশ এক জটিল অবস্থার দিকে পৌঁছতে যাচ্ছে। মানুষ নিজের প্রয়োজনে প্রকৃতিকে যেমন কাজে লাগাচ্ছে বা প্রাকৃতিক সম্পদকে ব্যবহার করছে, প্রকৃতিও তেমনি আহত রূপ নিয়ে মানুষের তথা সমগ্র প্রানপুঞ্জের ঠিক সমপরিমাণ বিরোধিতা করতে তৎপর। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বিজ্ঞানের বিজয় গৌরবে মোহান্ধ মানুষ পৃথিবীর পরিবেশকে বিষাক্ত করেছে। আজও করছে। ছড়িয়ে দিচ্ছে ক্ষতিকর সব আবর্জনা। তার ফল হয়েছে বিষময়। পরিবেশ দূষিত হয়েছে। আর দূষিত পরিবেশ প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করছে। তাই গোটা জীবজগতের অস্তিত্বই আজ বিপন্ন। বর্তমানে পরিবেশ দূষণ মানবসভ্যতার জন্যে বিরাট হুমকি স্বরূপ। এ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট পরিবেশবিজ্ঞানী Peter Walliston এর উক্তিটি প্রণিধানযোগ্য।
বাংলাদেশে বায়ু দূষণের বিভিন্ন কারণ
বাংলাদেশে জীবাশ্ম জ্বালানি দহন ছাড়াও বায়ুদূষণের অন্যান্য উৎসের মধ্যে রয়েছে ইটের ভাটা সার কারখানা চিনি কাগজ পাট ও বস্ত্র কারখানা সুতা কল চামড়া শিল্প পােশাক শিল্প বিস্কুট তৈরির কারখানা রাসায়নিক ও ঔষধ তৈরি শিল্প সিমেন্ট উৎপাদন গ্রিল ও দরজা জনালার ওয়ার্কশপ জমির ধুলাবালি ইত্যাদি উৎস থেকে প্রচুর পরিমাণে ধোঁয়া বাম্প গ্যাস ও ধূলিকণা ইত্যাদি বাতাসে মেশার ফলে পরিবেশ দূষিত হয়।
বাংলাদেশে শব্দ দূষণের বিভিন্ন কারণ
শব্দ দূষণের প্রকোপ বাংলাদেশের জন্য এক সুদূরপ্রসারী পরিণতিবহ সমস্যা হয়ে উঠছে। গাড়ির হর্ন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোনাে ট্রাফিক আইন না থাকায় শহরের অনেক অংশে শব্দসমস্যা অত্যন্ত তীব্র আকার ধারণ করছে।বাংলাদেশে শব্দ দূষণের বিভিন্ন কারণ
শব্দ দূষণের প্রকোপ বাংলাদেশের জন্য এক সুদূরপ্রসারী পরিণতিবহ সমস্যা হয়ে উঠছে। গাড়ির হর্ন ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোনাে ট্রাফিক আইন না থাকায় শহরের অনেক অংশে শব্দসমস্যা অত্যন্ত তীব্র আকার ধারণ করছে।
মৃত্তিকাজনিত দূষণ
মৃত্তিকা বা মাটি ভূত্বকের উপরিভাগের একটি পাতলা আবরণ। বিভিন্ন কারণে মৃত্তিকা দূষণ ঘটে। যেমন ভূমিক্ষয় বায়ু প্রবাহ বৃষ্টি গাছকাটার বন উজাড় জমিতে অতিরিক্ত বা নিয়মিত রাসায়নিক সার ব্যবহার করা ইত্যাদি কারণে মাটির গুণগত মান নষ্ট হয়ে যায় ফলে মৃত্তিকা দূষণ ঘটে।
তেজস্ক্রিয়তাজনিত দূষণ
তেজস্ক্রিয়তাজনিত দূষণ মানুষের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকর এক ধরনের অদৃশ্য দূষণ। তেজস্ক্রিয়তার উৎস সূর্য ও মহাশূন্য যেখান থেকে তা পৃথিবীতে পৌছায়। ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয়তার অধিকাংশ বিকিরিত হয় বিভিন্ন তেজস্ক্রিয় পদার্থ বিশেষত পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্ফোরণ পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও বিভিন্ন ধরনের ইলেকট্রনিক সামগ্রী থেকে। এগুলাের মধ্যে উল্লেখযােগ্য লেজার রশ্মি এক্সরে মেশিন রঙিন টেলিভিশন সেট মাইক্রো ওয়েভ ওভেন ইত্যাদি। অধুনা পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের ফলে সৃষ্ট দূষণ বিশ্বব্যাপী মানুষের আতঙ্ক ও উদ্বেগের কারণ হয়েছে।
পরিবেশ সংরক্ষণে করণীয়
এককালে মানুষের ধারণা ছিল প্রকৃতির ওপর যে কোনাে উপায়ে আধিপত্য প্রতিষ্ঠাই সবচেয়ে জরুরি। আজ সে ধারণার পরিবর্তন ঘটেছে। কেননা দেখা যাচ্ছে এই আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য বন ধ্বংস করে নদীর প্রবাহ বন্ধ করে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট করে মানুষ নিজের জন্যে সমূহ বিপদ ডেকে এনেছে। তাই আজ প্রকৃতির ওপর আধিপত্য নয় মানুষ গড়ে তুলতে চাইছে প্রকৃতির সঙ্গে মৈত্রীর সম্বন্ধ। আর চেষ্টা করছে প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রেখে প্রকৃতির সহায়তায় তার নিজের জীবনধারাকে আগামী দিনের সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।
উপসংহার
আমাদের জীবনে পরিবেশের প্রভাব অপরিসীম। পরিবেশ দূষণ এখন সারাবিশ্বের মাথাব্যথা হয়ে উঠেছে। কেননা অনুকূল পরিবেশ সুস্থ জীবন যাপনে সহায়ক পক্ষান্তরে প্রতিকূল পরিবেশে জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে। তাই পরিবেশ যাতে দূষিত না হয় সেদিকে আমাদের সবার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখা উচিত। পৃথিবীর সব দেশের মানুষ যদি সমবেতভাবে পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে সচেষ্ট হয় তবেই পরিবেশ দূষণমুক্ত থাকবে নচেৎ নয়।
- প্রবন্ধ রচনা : পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার
- ভাষণ : পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার
- খুদেগল্প : পরিবেশ দূষণ
- অনুচ্ছেদ : পরিবেশ দূষণ