নারীশিক্ষার গুরুত্ব
ভূমিকা
বিদ্যা অর্জন করা নারী পুরুষ উভয়ের জন্য অত্যাবশ্যক। সাংসারিক জীবন সুন্দর ও সুষমাময় করে তুলতে হল পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও শিক্ষিত করে তোলা প্রয়োজন। নারীরা ভবিষ্যৎ মাতৃত্বের দায়িত্ব বহন। আজিকার মানব শিশু দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক। এই ভবিষ্যৎ নাগরিকদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব নারীদের উপরেই ন্যস্ত।
নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে কবি নজরুল ইসলাম বলেছেন-
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর।
নারীশিক্ষার গুরুত্ব
কবির এ উক্তি হতে সমাজে নারীর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায় । বর্তমান বিশ্বে প্রতিটি ক্ষেত্রে শিক্ষিত নারীর প্রয়োজনীয়তা বিশেষভাবে দেখা দিয়েছে। জাতির ভবিষ্যৎ বংশধরগণ যাতে মানুষ হয়ে গড়ে উঠতে পারে সে বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হলে শিক্ষিত জননীর প্রয়োজন। আমাদের দেশের লোকসংখ্যার প্রায় অর্ধেক নারী। এরা যদি অশিক্ষিত ও নিরক্ষর থেকে যায় তবে জাতি দুর্বল হয়ে পড়বে সমাজের অগ্রগতি ব্যাহত হবে। তা ছাড়া বর্তমান জটিল অর্থনৈতিক অবস্থায় শুধু পুরুষের পক্ষে একা সাংসারিক গুরুভার বহন করা কঠিন। একজন শিক্ষিত নারী সাংসারিক কাজকর্ম সন্তান লালন পালনের পাশাপাশি অর্থ উপার্জন করেও সংসারে সচ্ছলতা আনতে পারে। উপরন্তু শিক্ষিত জননীর তত্ত্বাবধানে সন্তান সন্ততিও শিক্ষিত হয়ে উঠে। গৃহকে যদি প্রাথমিক শিক্ষার সূতিকাগার বলা যায় তবে মাতাই হল তার প্রথম শিক্ষিকা। ফুরাসী বীর নেপোলিয়ান বোনাপার্ট দেশবাসীর উদ্দেশ্যে একদা বলেছিলেন তোমরা আমাকে একজন শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদেরকে একটি সভ্য জাতি উপহার দিব। জাতিগঠনে নারীর ভূমিকা যে কত গুরুত্বপূর্ণ তাঁর এ উক্তি হতে তা প্রতিফলিত হয়েছে।
নারীশিক্ষার অন্তরায়সমূহ
আমাদের দেশে নারীশিক্ষা বিস্তারে যে সমস্ত বাধা রয়েছে তা হল যুগযুগান্তরের সংস্কার পর্দাপ্রথা বাল্যবিবাহ দারিদ্র্য ইত্যাদি। নারীরা অন্তঃপুরে থেকে কেবল গৃহকর্ম ও সন্তান প্রতিপালন করবে আমাদের দেশে নারী সম্পর্কে যুগযুগান্তরের এ সংস্কার প্রচলিত। এ সংস্কারের কারণে আমাদের দেশে এ পর্যন্ত নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করা হয়নি। আবার নারীরা লেখাপড়া করতে গেলে বেপর্দা হয়ে পড়বে এ ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণেও অনেকে নারীশিক্ষার ঘোর বিরোধী। তা ছাড়া অনেক মেয়েকে বাল্যকালেই বিয়ে দেয়া হয়। ফলে শিক্ষার আলো হতে তারা বঞ্চিতা হয়।
নারীশিক্ষার বর্তমান অবস্থা
সুখের বিষয় বর্তমানে নারীশিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সচেতন ব্যক্তিমাত্রই বুঝতে পেরেছেন। নারীজাতিকে অন্ধকারে রেখে সমাজ ও দেশের উন্নতি যে অসম্ভব এ বোধ এখন সরকার ও জনগণের মধ্যে জেগেছে। তাই নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করার জন্য বর্তমানে আমাদের দেশে একাদশ শ্রেণী পর্যন্ত নারীশিক্ষা অবৈতনিক করা হয়েছে। শুধু তাই নয় ছাত্রীদেরকে উপবৃত্তি বইপত্র ইত্যাদি কেনার জন্য নগদ টাকাও প্রদান করা হচ্ছে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের নির্দিষ্ট কোটা নির্ধারণ করা হয়েছে। আশা করা যায় এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে নারীশিক্ষার প্রসার ঘটবে।
বর্তমান অবস্থা
অতীতের আঁধার এখন অনেকটা কেটে গেছে। এখন নবযুগের আলোকোজ্জ্বল প্রভাতের দিকে দিকে নারী প্রগতির জায়গান ঘোষিত হচ্ছে। নারীর গগ্রহতার দিনের অবসান ঘটে এখন তার স্বকীয় পরিচয় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বিগত শতকের অন্যকারাচ্ছন্ন অন্তঃপুরে এখন তারা যৌন হয়ে বসে নেই। আলোহীন অন্ধকার অন্তরাল থেকে তারা বেরিয়ে এসে আলোকিত জগতের উপার প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়েছে। যে দুর্জয় চালিকাশক্তি অন্তরালবর্তিনী অসূর্যস্পশ্যা নারীকে অন্ধকার পাযাণপুরী থেকে মুক্ত করে আধুনিক জগতের আলোকিত প্রাকানে নিয়ে এসেছে তা হলো আধুনিক শিক্ষা। আপন ভাগ্য জয় করার ন্যায্য অধিকার এখন তার হাতের মুঠোয়।
নারী শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা
শিক্ষাই জাতির উন্নতির চাবিকাঠি। এ শিক্ষা থেকে বহুলাংশে বঞ্চিত থেকে নারীরা সমাজকে পশ্চাদমুখী করে রেখেছে। দেশের জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাদের উন্নতিতেই জাতির উন্নতি। অনগ্রসরতার অভিশাপ থেকে নারীকে উদ্ধার করে পুরুষের পাশাপাশি তাদেরকেও পথ চলার অধিকার ও সুযোগ দিতে হবে। জাতীয় জীবনে পুরুষের মতই নারীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। মেধা ও যোগ্যতায় নারীদের পেছনে ফেলে রাখার কোন যৌক্তিকতা নেই। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক কর্মক্ষেত্রে নারী বলে পাশ কাটিয়ে যাবার এখন আর কোনো সুযোগ নেই। সেজনা পুরুষের শিক্ষার সমপর্যায়েই নারীশিক্ষা ব্যবস্থা থাকা বাঞ্ছনীয়। পুরুষের সঙ্গে কর্মক্ষেত্রে সকল দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা রয়েছে বলে তার শিক্ষার প্রয়োজনীয়তাও বিদ্যমান। পারিবারিক জীবনে নারীর অবদান নিঃসন্দেহে অতুলনীয়। মায়ের হাতেই সন্তান বড় হয়ে ওঠে। মায়ের কাছেই তার শিক্ষা শুরু। মা নিজে যদি সুশিক্ষিত হন তাহলে তাঁর সন্তানও সুযোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবে। মায়ের সন্তানেরাই একদিন বিশ্ব পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করবে। তাই মাঝে উপযুক্ত যোগ্যতার অধিকারী হতে হবে। শিক্ষা তাকে সে যোগ্যতা দান করে। বাইরের কর্মক্ষেত্রে সম্প্রসারিত ভূমিকা পালনে নারীর গুরুত্ব বাড়লেও সংসারের চার দেয়ালের মধ্যে তাঁর ভূমিকা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। সংসারের সুখ নারীর হাতে। সংসার জীবনে সমৃদ্ধির রূপকার নারী। শিক্ষা তাকে সে দায়িত্ব পালনে যোগ্য করে তোলে। তাই জীবনকে সর্বপ্রকার গতিশীল করে তোলার জন্য নারীশিক্ষার অপরিহার্যতা সম্পর্কে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। উন্নত মানসিকতাসম্পন্ন বলিষ্ঠ জাতি গঠনের কাজে প্রয়োজন নারী জাতির শিক্ষা। সমাজে নারীকে যুদ্ধের অনুসারী হতে হবে। কেবল নারী জাতির প্রয়োজনেই নয় সমাজের সামগ্রিক প্রয়োজনে মেয়েদের উপযুক্ত শিক্ষা দীক্ষা মুক্ত মানসিকতা আবশ্যক। জাতির জন্য দরকার শিক্ষা দীক্ষায় কৃষ্টি সংস্কৃতিতে উজ্জ্বল পরিবার। সেই আদর্শ পরিবার গঠনে নারীর ভূমিকাই সর্বাধিক বলে নারীশিক্ষা প্রসারের গুরুত্ব অপরিসীম।
নারী শিক্ষায় গৃহীত ব্যবস্থা
বিশ্ব জুড়ে নারী প্রগতির যে সম্প্রসারণ ঘটছে তার প্রভাবে এদেশের নারী জাতির পশ্চাৎপদতা দূর করার জন্য নারীশিক্ষার উন্নতির লক্ষে কতিপয় পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে। মেয়েদের স্বাচ্ছন্দময় বিকাশের জন্য এখন দেশে স্বতন্ত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আবার ছেলেদের সঙ্গে মেয়েরাও যাতে সমমর্যাদায় শিক্ষা লাভের সুযোগ পায় সে লক্ষে সহশিক্ষার ব্যবস্থাও প্রচুরভাবে বিদ্যমান। দেশের শিক্ষার হার বাড়ানোর উদ্যোগের সঙ্গে নারী শিক্ষার হার বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গ্রামীণ মেয়েদের বিনা বেতনে পড়ার যে সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং মেয়েদের জন্য যে উপবৃত্তি প্রদানের পদ্ধতি প্রবর্তিত হয়েছে তা নারী শিক্ষার সম্প্রসারণে যথেষ্ট সুযোগ এনে দিয়েছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রেও মেয়েদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
নারীশিক্ষা সম্পর্কে গৃহীত পদক্ষেপ
নারীশিক্ষা বিস্তারে স্বাধীনতা পরবর্তী সরকারগুলাে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে । অবশ্য পদক্ষেপগুলাে বাস্তবায়ন হয়েছে খুবই যৎসামান্য । বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত নারীদের অবৈতনিক শিক্ষার সুযােগ করে দিয়েছে সরকার।তাছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও নিজেদের উদ্যোগে নারীশিক্ষা বিস্তারে বহুমখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে যা খুবই আশাব্যঞ্জক। বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও কাজ করছে।নারীর ক্ষমতায় ব্যবহারিক পর্যায়ে দ্রুত বিস্তার লাভ করেছে নারীশিক্ষার চলমান কর্মতৎপরতা থেকেই।প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নারীদের আলাদা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও।গৃহীত এসব ব্যবস্থা নারীদের সংখ্যার তুলনায় অপ্রতুল।তবু একটি প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে নারীশিক্ষার যে অগ্রগতি হচ্ছে তার গন্তব্য নিশ্চয়ই অনেক দূর।
এদেশে নারীর অবস্থা
আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় নর নারী উভয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার গুরুত্ব সমানভাবে দেখা হতাে না।আমাদের এ পুরুষশাসিত সমাজে পুরুষের জন্য শিক্ষার সুযােগ ও উদার মানসিকতা যতটুকু ছিল নারীদের জন্য ততটুকু ছিলনা। ফলে একই পরিবারে পুরুষের শিক্ষার সুযােগ থাকলেও নারীর ক্ষেত্রে তেমন হতাে না। এ অভিশাপ আমাদের জাতীয় জীবনে সৃষ্টি করছে নানা সমস্যা। ফলে জাতীয় অগ্রগতি ব্যাহত হতাে। কিন্তু বর্তমানে এ অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে। শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীরাও পুরুষদের পাশাপাশি সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষদের চেয়ে বেশি সফলতা দেখাচ্ছে। শিক্ষার মাধ্যমে নারীরা দেশের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হচ্ছে। বর্তমানে পরিবারগুলােতে ছেলে মেয়েকে আলাদা করে দেখা হচ্ছে না। প্রায় সব ক্ষেত্রে উভয়কেই সমান সুযােগ দেওয়া হচ্ছে। প্রতিবছর পাবলিক পরীক্ষাগুলােতে দেখা যায়, পাসের ক্ষেত্রে মেয়েরা ছেলেদের থেকে বেশ এগিয়ে। এতে সহজেই বুঝা যায় বর্তমানে বাংলার নারীরা পুরুষদের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে পাচ্ছে।
উন্নত দেশে নারী
উন্নত দেশে নারীদের অবস্থান আজ সুদৃঢ়। এর প্রধান কারণ হচ্ছে তারা নারী শিক্ষার উপর গুরুত্বারােপ করেছে। শিক্ষার ক্ষেত্রে পুরুষ ও নারীতে সেখানে কোনাে ভেদাভেদ নেই। আমেরিকা ব্রিটেন জাপান জার্মানি কানাডা প্রভৃতি দেশের নারীরা সকল ক্ষেত্রে পারদর্শী। এসব দেশের নারীরা আজ আর পুরুষের মুখাপেক্ষী নয় বরং অনেক ক্ষেত্রে তারা পুরুষকে অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছে।
শিক্ষিত জননী হিসেবে নারী
একজন সুশিক্ষিতা মাতা জন্ম দিতে পারে একজন সুশিক্ষিত সন্তান করতে পারে তাকে নিজের আদর্শে আদর্শিত। কারণ ছেলে মেয়েদের উপর মায়ের প্রভাবই বেশি পড়ে। মায়ের কাছ থেকে তারা আচার আচরণ আদব কায়দা ইত্যাদি শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। শিক্ষা ক্ষেত্রে নারীদের প্রভাব সম্বন্ধে বলতে গিয়ে নেপােলিয়ন বলেছিলেন-
আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও আমি তােমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব।
গৃহস্থালি কাজে নারী শিক্ষার গুরুত্ব
গৃহস্থালি কাজের দিকে তাকালেও দেখা যায় নারী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। শিক্ষিতা নারীরা সন্তানের অসুখে বিসুখে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী সেবা শুশ্রুষা ও সংসারের প্রাত্যহিক আয় ব্যয়ের হিসাব নিকাশ করতে পারে অশিক্ষিতা নারীরা সেভাবে করতে পারে না। শিক্ষিতা নারীর হাতে যদি সংসারের ভার ন্যস্ত থাকে তাহলে সংসারের উন্নতি হবেই। তাই মেয়েদেরকে পুরুষদের ন্যায় শিক্ষিত করে তােলা অত্যাবশ্যক।
দেশ গঠনে নারী শিক্ষার গুরুত্ব
দেশ গঠনেও নারী শিক্ষার গুরুত্ব অনেক। অতীতে দেশ গঠনে নারীদের যথেষ্ট ভূমিকা ছিল। বর্তমানেও দেশ গঠনে নারীদের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকে এ পর্যন্ত যতটি আন্দোলন হয়েছে প্রত্যেকটি আন্দোলনে নারীদের কিছু না কিছু অবদান রয়েছে। আর এ অবদান রেখেছে শুধু শিক্ষিতা মেয়েরাই। তাই দেশ গঠনে নারী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।
শিক্ষিত নারীদের সফলতার দৃষ্টান্ত
যুগে যুগে শিক্ষিত নারীরা তাদের কর্মপ্রচেষ্টা দ্বারা পৃথিবীতে অনেক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমেরিকা ইংল্যান্ড ফ্রান্স রাশিয়া আয়ারল্যান্ড সুইডেন নরওয়ে প্রভৃতি দেশের নারীরা সাহিত্য বিজ্ঞান শিল্পকলা আন্তর্জাতিক রাজনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। প্রতিভা পাতিল বেনজীর ভুট্টো ইন্দিরা গান্ধী সােনিয়া গান্ধী শ্রীমাভাে বন্দরনায়েক মার্গারেট থ্যাচার হিলারী ক্লিনটন কন্ডােলিৎসা রাইস প্রমুখ তাদের শিক্ষা ও মেধা দ্বারা মহিলা হয়েও বিশ্বব্যাপী পরিচিত। অনুরূপভাবে বাংলাদেশের নারীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের কৃতিত্ব দেখিয়েছে। যেমন- সাহিত্য ক্ষেত্রে সুফিয়া কামাল সেলিনা হােসেন রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন (মহীয়সী নারী) জাহানারা ইমাম প্রমুখ এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় শেখ হাসিনা ওয়াজেদ যথেষ্ট সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন।
নারী শিক্ষা বিস্তারের উপায়
নারী শিক্ষা বিস্তারের জন্য কতিপয় কর্মসূচি গ্রহণ করা জরুরি। যেমন- দেশে নারী শিক্ষার্থীর অনুপাতে প্রয়ােজনীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তােলা মেয়েদের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বয়স্ক নারীদের শিক্ষার জন্য প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ নারীশিক্ষা প্রসারের জন্য সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের উদারনীতি ইত্যাদি।
নারী শিক্ষা বিস্তারে বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাবলি
বর্তমান সরকার নারীবান্ধব সরকার। নারীসমাজকে শিক্ষিত জনসম্পদ করে গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর। নারী শিক্ষা বিস্তারে বাংলাদেশ সরকারের সাম্প্রতিক গৃহীত ব্যবস্থাবলি অনেকটা প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ সরকার নারী শিক্ষা প্রসারে স্কুল পর্যায়ে মেয়েদের জন্য উপবৃত্তির ব্যবস্থা করেছে। এ উপবৃত্তি ব্যবস্থা ইতােমধ্যে কলেজ পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে। তাছাড়া বয়স্ক নারীদেরকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য বয়স্ক নারী শিক্ষা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। বর্তমানে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি মহলও নারী শিক্ষা প্রসারে নানাভাবে অবদান রাখছে।
উসংহার
নারীশিক্ষার গুরুত্ব এখন আর উপেক্ষা করা যায় না। তাই সরকার ও জনগণের উচিত নারীশিক্ষা প্রসারে সর্বতোভাবে সহায়তা করা। এর অন্যথা হলে দেশ যে তিমিরে সেই তিমিরেই থেকে যাবে।