দেশভ্রমণ
সূচনা
আমাদের পৃথিবী বিচিত্র সম্ভারে পূর্ণ। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সম্ভার আধুনিক সম্ভার প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন সম্ভার ইত্যাদি সমস্ত পৃথিবী ব্যাপিয়া ছড়িয়ে রয়েছে। দেশভ্রমণ ব্যতীত এদের সম্বন্ধে প্রত্যক্ষ জ্ঞানলাভের সম্ভাবনা খুব কম। দেশভ্রমণ করে একসাথে জ্ঞান ও আনন্দ উভয় লাভ করতে পারা যায়। তাই দেশ ভ্রমণ শিক্ষার একটি অঙ্গ।
জানার আগ্রহ ও দেশ ভ্রমণ
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কত অফুরন্ত আয়োজন নিয়ে কত ভূখণ্ড অধীর আগ্রহে আমাদের আগমনের প্রতীক্ষা করছে। সে সমস্ত আমাদের দেখা হলো না। আমাদের হৃদয়ের ক্ষুধা আমাদের অন্তরের অতৃপ্তি আমাদেরকে গৃহ প্রাচীরের আবেষ্টনী হতে মুক্ত করে সুদূরের অনন্ত আহবানে সাড়া দেওয়ার জন্য মহাবিশ্বের মুক্তাঙ্গনে টেনে নিয়ে চলে। ইতিহাস ও ভূগোলের প্রত্যক্ষ ও অবধারিত সান্নিধ্যে দাঁড়িয়ে আমরা অতীত ও বর্তমানের স্মৃতি গায়ে মেখে ধন্য হই এবং সুদূরের ঘনিষ্ঠ স্পর্শ লাভ করে অন্তরে অনুভব করি অতুলনীয় অপার আনন্দ।
শিক্ষার মাধ্যম দেশভ্রমণ
জ্ঞানলাভে পরিপূর্ণতা আনতে হলে দেশভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ঐতিহাসিক ও ভৌগোলিক কারণে গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহ ভ্রমণ করলে শিক্ষা সম্পূর্ণতা লাভ করে। পৃথিবীর বহু মানুষের কলরব মুখরিত সজীব সুন্দর বিচিত্র বিস্ময় নিয়ে অপেক্ষা করছে শামল শোভন প্রাণোচ্ছল হাজারো ভূখণ্ড। বাইরে অবাধ উন্মুক্ত আকাশের নিচে জীবন্ত দেশটি দেখে তার অধিবাসীদের প্রত্যক্ষ স্পর্শ লাভ করে তাদের জীবন ধারা জানার এবং উপলব্ধি করার মধ্যেই প্রকৃত জ্ঞানার্জন নিহিত। দেশভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা মানুষ দিনের পর দিন তার গৃহের ক্ষুদ্র প্রকোষ্ঠের মধ্যে বন্দি থেকে সংকীর্ণতার জন্ম দেয়। অনেকে চার দেয়ালের স্বরচিত কারাগারে আবদ্ধ থেকে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। তখন সে চায় মুক্তি। একমাত্র দেশ ভ্রমণের মাধ্যমে সে মুক্তি পায় এবং তার মধ্যে অঙ্কুরিত ক্ষুদ্রতা ও সংকীর্ণতার বীজ সমূলে উচ্ছেদ হয়। হৃদয়ের প্রসারতা লাভের জন্য দেশভ্রমণের প্রয়োজন রয়েছে। দেশভ্রমণের দ্বারা সীমাহীন সৌন্দর্যের মধ্যে মানুষের স্পর্শ লাভ করে সম্পূর্ণ নতুন মানুষ হয়ে গৃহে ফেরা যায়। বিশ্ববিখ্যাত পরিব্রাজক ফা হিয়েন হিউয়েন সাঙ ইবনে বতুতা প্রমুখগণ পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটে বেরিয়ে অন্য দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতির দ্বারা নিজেদের জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ করেছেন।
দেশভ্রমণ ব্যবস্থার উন্নতি
অতীতকালে দেশভ্রমণ ছিল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আজ নানা পথ ও পরিবহন ব্যবস্থার ফলে দেশভ্রমণ সহজ হয়েছে। স্থলপথ পানিপথ বিমানপথ বিস্তৃত হয়েছে এবং পরিবহন ব্যবস্থা হয়েছে সহজলভ্য। এ ছাড়াও বিশ্বব্যাপী ভ্রমণের ব্যাপারে দেশে দেশে এখন ourist Bureau স্থাপিত হয়েছে। এই ব্যুরো ভ্রমণের ব্যাপারে সর্বাত্বক সহযোগিতা করে থাকে। এছাড়া পর্যটন এখন শিল্পে পরিণত হয়েছে এবং পৃথিবীর অনেক দেশে পর্যটনের মাধ্যমে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে।
পারস্পরিক বোঝাপড়া
দেশ দেশান্তরের ভৌগোলিক পরিস্থিতি প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং সেখানকার নরনণনারীদের জীবনাচরণের প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভ দেশভ্রমণের মাধ্যমে সম্ভব হয়। এছাড়া ব্যবসা বাণিজ্য সংক্রান্ত জ্ঞানলাভও দেশভ্রমণের পরোক্ষ ফল। অন্যদিকে ভ্রমণের মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে যে অবমূলক সংহতি গড়ে ওঠে, তা জাতীয় সংহতির ও মানবিক সৌহার্দ্যবোধের পক্ষে অভ্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনে দিনে সারা পৃথিবীতেই দেশভ্রমণ জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। জাতিসংঘও দেশ ভ্রমণকে ‘বিশ্বশান্তির ছাড়পত্র’ বা A passport o world peace হিসেবে অভিহিত করে বিশ্ববাসীকে দেশভ্রমণে উদ্বুদ্ধ করছে। তাই আজ পৃথিবীতে লক্ষ কোটি ভ্রমণ বিলাসীরা ঘর ছেড়ে বের হয়ে পড়েছে।
দেশভ্রমণের পদ্ধতি
প্রাচীনকালে ভ্রমণের উপায় ছিল প্রধানত পায়ে হাঁটা। তাছাড়া ঘোড়ায় চড়ে বা গরু ও ঘোড়ার গাড়ীতে চড়েও ভ্রমণ প্রচলিত ছিল কিন্তু তা খুব সময় ও ব্যয় সাপেক্ষ ছিল। বর্তমানে যান্ত্রিক ও বৈজ্ঞানিক উন্নতির সাথে ভ্রমণ খুব সহজসাধ্য ও আনন্দদায়ক হয়ে উঠেছে। অতি অল্প ব্যয়ে এখন পৃথিবীর দূরতম ও নিভৃততম স্থানে গমন করা যায় এবং সর্ববিষয়ে প্রত্যক্ষ জ্ঞান লাভ করা যায়। যানবাহনের মধ্যে রেলগাড়ী মোটরগাড়ী উড়োজাহাজ স্টীমার সাইকেল ইত্যাদির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
দেশভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা
দেশভ্রমণ ব্যতীত যথার্থ আনন্দ ও জ্ঞানলাভ হয় না। পাঠ্য পুস্তক বা অন্যান্য বই পড়ে পৃথিবীর সবকিছু সম্বন্ধে সঠিক জ্ঞান লাভ করা যায় না। দেশভ্রমণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের লোকজনের আচার অনুষ্ঠান রীতি নীতি ধন সম্পদ উৎপন্ন দ্রব্য অভাব অভিযোগ ইত্যাদি সম্বন্ধে জ্ঞানলাভ করে আমরা যথেষ্ট লাভবান হতে পারি। ব্যক্তিগত বা জাতিগত দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করার জন্যও দেশভ্রমণ একান্ত প্রয়োজনীয় বিষয়।
দেশভ্রমণের উপকারিতা
দেশভ্রমণ করলে জ্ঞান বৃদ্ধি পায়, কর্মদক্ষতা বাড়ে ও মনের সংকীর্ণতা দূর হয়। দেশভ্রমণের ফলে বহু বিষয়ে পারদির্শতা ও অভিজ্ঞতা লাভ করা যায়। বিভিন্ন দেশের বিজ্ঞান সাহিত্য ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান সঞ্চয় করে নিজ দেশের উন্নতি সাধন করা সম্ভব হয়।
বৈচিত্রময় দেশভ্রমণ
.অনেকদিন একই জায়গায় থাকতে কারোরই মন টিকে না। তখন একটু ভিন্নতার স্বাদ পেতে মন আনচান করে। দেশপ্রেম আমাদের সেই ভিন্নতার স্বাদ এনে দেয় এবং মনে প্রশান্তির অনুভূতি ছড়ায়। চিরকাল স্বদেশে বসবাস করা পথিক যখন প্রবাসের উদ্দেশে যায় তখন প্রকৃতির বৈচিত্র তাকে ভাবায় এবং উদাস করে তোলে। সুন্দর প্রকৃতি মানেই যে সুজলা সুফলা হতে হবে এমনটি নয়। মরুভূমির ক্যাকটাস বালুঝড় কিংবা জনশূন্যতার মাঝেও অন্যরকম এক সৌন্দর্য্য রয়েছে। মূলত বৈচিত্রতাই দেশভ্রমণে কৌতুহল জাগায় এবং আনন্দ এনে দেয়।
প্রাচীনকালে দেশভ্রমণ
প্রাচীনকালে পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং প্রযুক্তি তত উন্নত ছিল না। সমুদ্র তখন পালের জাহাজ চলত স্থলপথে অশ্বারোহণ বা পদব্রজেই দেশভ্রমণ করতে হতো। তখন দেশভ্রমণ ছিল অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। একমাত্র দুঃসাহসী কষ্টসহিষ্ণু ও অদম্য জ্ঞানপিপাসুরাই তখনকার দিনে দেশভ্রমণ করতো।
বর্তমানে দেশভ্রমণ
বর্তমানকালে যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। বিজ্ঞানের অবদান আজ আকাশপথ স্থলপথ ও নৌপথে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাওয়ার পথ সুগম হয়েছে। অর্থনৈতিক সামর্থ্য থাকলে এখন যেকোনো সময় যেকোনো দেশে মাত্র কয়েক ঘণ্টায় পৌছে যাওয়া যায়। তাই বর্তমানকালে ভ্রমণের গণ্ডি হয়েছে ব্যাপক ও প্রসারিত।
উন্নত দেশের ভ্রমণপ্রিয় মানুষ
এ কথা বলা বাহুল্য যে বিদেশে লোকেরা আমাদের চেয়ে ভ্রমণে অনেক বেশি উৎসুক। তারা শীতকালের কনকনে ঠান্ডার সময় নিরক্ষরেখায় অবস্থিত বারমুদা জ্যামাইকা হাওয়াই দ্বীপে কিংবা আল্পসে বরফ ঢাকা ঢালে অবস্থিত সুইজারল্যান্ডে ভ্রমণ করে। কিছু দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় ভ্রমণ প্রায় বাধ্যতামূলক কিছু দেশে এটি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সাথে অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। এসব দেশের বৃদ্ধ, ব্যবসায়ী চাকুরীজীবীসহ প্রায় সব শ্রেণিপেশার মানুষই বছরের বিভিন্ন সময় ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হন।
দেশভ্রমণ ও বাংলাদেশ
বাংলাদেশ একটি সুপ্রাচীন দেশ। প্রাচীনত্ত্ব এর গর্ব ও অহংকার। কারণ এর প্রাচীনত্ত্বই দেশবিদেশে এর সুখ্যাতি ছড়িয়েছে। দেশের সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও ইতিহাস বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষণ করে দেশের জন্য আর্থিক সমৃদ্ধি আনয়ন করছে। বর্তমানে পর্যটনকে শিল্প হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাংলাদেশে পর্যটনশিল্পের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের পর্যটন স্থানসমূহ
বাংলাদেশের গর্ব দক্ষিণ পূর্বে বঙ্গোপসাগরের বেলাভূমি প্রমোদ ভ্রমণ কেন্দ্র হিসেবে প্রকৃতি নিজের হাতে গড়ে তুলেছে। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। যার ফলে কক্সবাজারের কথা সহজেই পর্যটকদের কাছে পরিচিত লাভ করে এবং খুবই লোভনীয় একটি স্থান হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে। এছাড়া বাংলাদেশের একপ্রান্তে অবস্থিত রাঙামাটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এক অন্যতম লীলাভূমি। তামাবিল পটুয়াখালির কুয়াকাটা চট্টগ্রামের ফয়েজ লেক যমুনা সেতু সিলেটের চা বাগান জাফলং ইত্যাদি পর্যটন স্থান হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত।
বাংলাদেশের পুরাকীর্তি
ঢাকার আহসান মঞ্জিল ঢাকেশ্বরী মন্দির কার্জন হল লালবাগের কেল্লা হোসনি দালান সোনার গাঁ দিনাজপূরের কান্তজির মন্দির বাগেরহাটের ষাটগম্বুজ মসজিদ নোয়াখালির বজরা মসজিদ সবই প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন এবং ইতিহাস প্রসিদ্ধ স্থান হিসেবে আমাদের ইতিহাস ঐতিহ্য কৃষ্টি ও সভ্যতার অনেককিছু ধারণ করে এসেছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনে দেশভ্রমণ
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক স্থাপনে দেশভ্রমণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বর্তমান বিশ্বের অনেক দেশেই ভ্রমণ ও পর্যটনকে শিল্প হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে থাইল্যান্ড মালদ্বীপ প্রভৃতি দেশ অন্যতম। তাই তারা এর উন্নতির জন্য যাতায়াত ও যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য নানান সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছে। তাছাড়া দেশভ্রমণের মাধ্যমে এক দেশের মানুষের সাথে অন্য দেশের মানুষের সুসম্পর্ক গড়ে উঠে যা বিশ্বভাতৃত্ব স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
মানবসভ্যতার সমৃদ্ধিতে দেশভ্রমণ
দেশভ্রমণের কল্যাণে সারা বিশ্বব্যাপী সংস্কৃতি ও সভ্যতার আবিষ্কারগুলো আদান প্রদানের মাধ্যমে মানব সভ্যতার প্রভূত সমৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। ইতিহাসখ্যাত পরিব্রাজক ইবনে বতুতা হিউয়েন সাং ফা হিয়েন কলম্বাস নিজেদের জ্ঞানপিপাসা মেটানোর জন্য মরুভূমি পাহাড় পর্বত বন বনানী পেরিয়ে দেশভ্রমণ করেছেন। তাদের কল্যাণে আমরা বিভিন্ন ধ্বংসপ্রাপ্ত সভ্যতা ও তার সংস্কৃতি জানতে পেরেছি। ফলে আমাদের জ্ঞানভান্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে। মানবসভ্যতা এগিয়ে এসেছে।
মনীষীদের দেশভ্রমণ
দেশভ্রমণের মধ্য দিয়ে কুসংস্কার কুরীতি মনের সংকীর্ণতা দূর হয়। তাই মহামনীষীদের দেশভ্রমণ করে জ্ঞানার্জনের পরামর্শ দিয়েছেন। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন-
আমি চঞ্চল হে
আমি সুদূরের পিয়াসী।
দেশভ্রমণের ফল
দেশভ্রমণের মাধ্যমে যে শুধু আনন্দই পাওয়া যায় তা নয়। বরং এটি নতুন কিছু সৃষ্টি ও আবিষ্কারে উদ্দীপ্ত করে। তাই মানুষ দেশভ্রমণ করে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগের পাশাপাশি সাহিত্যও রচনা করেছেন। বিভিন্ন কবি সাহিত্যিকদের জীবনী পড়লে আমরা জানতে পারি যে অনেক উপন্যাস কবিতা গান রম্য রচনা ইত্যাদি রচনার পিছনে উদ্দীপক হিসেবে ভ্রমণে অর্জিত জ্ঞান ও দেখা দৃশ্য কাজ করেছে। দেশভ্রমণের এসব অভিজ্ঞতাকে কেন্দ্র করেই রচিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের দেশে বিদেশে ইউরোপ প্রবাসীর পত্র রাশিয়ার চিঠি পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের চলে মুসাফির প্রভৃতি গ্রন্থগুলো।
দেশভ্রমণের উপকারিতা
দেশভ্রমণ শিক্ষার সাথে বিশেষভাবে জড়িত। ভ্রমণের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের মানুষের সাথে আমরা পরিচিত হতে পারি এবং নিজদের জ্ঞান বৃদ্ধি করে পারি। সারা পৃথিবীতে বিচিত্র দেশ বিচিত্র মানুষ ও সংস্কৃতির ছড়াছড়ি। দিকে দিকে কত অরণ্য সমুদ্র পর্বত। একমাত্র দেশভ্রমণের মাধ্যমেই এসবের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জন করা সম্ভব। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা পাঠ্যবইয়ের ক্ষুদ্র গন্ডির মধ্যে আবধ্য।
দেশভ্রমণের অপকারিতা
সবকিছুর মতোই দেশভ্রমণেরও কিছু অপকারিতা বিদ্যমান। অত্যধিক কিংবা উদ্দেশ্যহীন ভ্রমণ নিষ্প্রয়োজন এবং বর্জনীয়। অতিরিক্ত ভ্রমণে স্বাস্থ্যহানি ঘটার সম্ভাবনা থাকে। অনেকে দেশভ্রমণের ফলে নিজস্ব সংস্কৃতি বর্জন করে এবং অপসংস্কৃতির অন্ধকার পথে প্রবেশ করে। তাই শুধু ঘুরাঘুরি নয় ভ্রমণের পিছনের থাকা প্রয়োজন মহৎ উদ্দেশ্য।
উপসংহার
ইতিহাস পাঠে দেখা যায় যে প্রাচীন কালে পর্যটকগণ বহু কষ্ট স্বীকার করে দেশভ্রমণ করতেন। পূর্বকালে অনেক দেশের ছাত্রদের লেখাপড়া সমাপ্ত করতে হত দেশভ্রমণের মাধ্যমে। বর্তমানেও কোন কোন উন্নত দেশে এ পদ্ধতি প্রচলিত আছে। তাদের অনুকরণে আমাদের দেশে বিদ্যা শিক্ষার সাথে সাথে দেশভ্রমণের ব্যবস্থা থাকা দরকার। তা না হলে কোন প্রকার শিক্ষাই পূর্ণতা লাভ করতে পারে না।