ছাত্রের ফেলের খবর দেয়া শিক্ষকের সাথে ছাত্রের বাবার দারুণ কথোপকথন:
– আপনি কি খালেদ আলম ?
– জ্বি, বলছি।
– ফাহাদ আলম কি আপনার ছেলে?
– জ্বি, আপনি কে বলছেন?
– আমি আপনার ছেলের ইউনিভার্সিটি থেকে বলছি। মাহবুবুল হক। হেড অফ ডিপার্টমেন্ট।
– ও, আচ্ছা। কেমন আছেন, স্যার?
– জ্বি, ভালো। আপনার ছেলে সম্পর্কে কিছু কথা বলার ছিল। ও তো কিছুদিন আগে থার্ড সেমিস্টার শেষ করেছে। সেমিস্টার ফাইনালের রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছে দুই দিন আগে। আপনার ছেলে দুই কোর্সে ফেল করেছে। আপনাকে কি বলেছে?
– জ্বি, বলেছে।
– আমাদের ইউনিভার্সিটিতে কিছু নিয়ম-কানুন আছে। ফেল করলে আমরা ছাত্রদের আবারও পরীক্ষায় বসে পাস করার সুযোগ দেই। এরপরও ফেল করলে ইউনিভার্সিটিতে রাখার নিয়ম নেই।
– তা এসব আমাকে কেন বলছেন?
থতমত খেয়ে গেলেন ও প্রান্তের ব্যক্তি।
– আমাকেই যদি তার পড়াশোনার দায়ভার নিতে হয়, তাহলে আপনি কী জন্যে আছেন?
– না, মানে আমি বলছিলাম আপনি কাউন্সেলিং করতে পারেন, বোঝাতে পারেন।
– অবশ্যই আমি তার সাথে কথা বলতে পারি। কিন্তু শিক্ষক হিসেবে আপনি কি তার সাথে কথা বলেছেন?
– মানে? বুঝলাম না!
– আমি বলতে চাইছি, আমার ছেলে যে ফেল করল, গলদটা কোথায় বোঝার চেষ্টা করেছেন কি? দোষ পুরোটা কি ওর একার? আপনার কোনও দায়ভার নেই?
– কী বলতে চাইছেন আপনি?
– দেখুন, স্যার, খুব স্পষ্ট আর সহজ ভাষায় বলছি। এভাবে ছাত্রের ব্যর্থতায় সরাসরি মা-বাবাকে তলব করার আগে আপনাদের পাঁচবার ভাবা উচিত। পড়াশোনার জন্য ছেলেকে পাঠিয়েছি আপনাদের কাছে। তাকে পড়াতে না পারার, পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে না পারার, সফলতার পথ দেখাতে না পারার ব্যর্থতাটুকু পুরোপুরি আপনাদের। বাবা-মা কোনও শিক্ষক নন যে এসব পালন করবেন। এ দায়িত্বটুকু পালনের ভার আপনাদের উপরে দেয়া হয়েছে। কই, বেতন তো ঠিকই নেন। ছাত্রের সফলতারও ভাগ চান। তাহলে ব্যর্থতার ভার কেন শুধু ছাত্র আর মা-বাবার ওপরে চাপবে?
– আমি আসলে ওভাবে বুঝাতে চাইনি।
– কোনওভাবেই বোঝানোর দরকার পড়ত না, যদি যথাযথ শিক্ষকের দায়িত্ব আপনারা পালন করতে পারতেন।
– আমি রাখছি।
– দাড়ান । আপনার বাবার ফোন নম্বরটা পাঠিয়ে দেন।
– মানে? কেন?
– ব্যর্থ ছাত্রের পিতাকে ফোন করে যে দায়িত্ব আপনি পালন করেছেন, ব্যর্থ শিক্ষকের বাবাকে ফোন করে আমিও একই দায়িত্ব পালন করতে চাই!