All posts by eNoteShare

eNoteShare is website of SCSOFT. Which is the biggest educational website in Bangladesh. Our another website is www.myallgarbage.com. Thanks for visiting our website.

বই পোকা (PDF Books)

বই পোকা

Online PDF Books

আমার প্রিয় কিছু বইয়ের সাথে আরো কিছু বই সংগ্রহ করে দিলাম
আপনি এখান থেকে যে বইগুলো পড়েছেন, কমেন্ট করে সেগুলোর নাম জানান
16. অন্যান্য
15. আহমদ ছফা
14. সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়

    13.114 – স্ত্রীর পত্র – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.113 – সমাপ্তি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.112 – সফলতার সদুপায় – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.111 – সদর ও অন্দর – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.110 – সত্যের অংশ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.109 – শ্রাবণগাথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.108 – শ্যামা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.107 – শেষের রাত্রি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.106 – শেষ বর্ষণ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.105 – শেষ কথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.104 – শাপমোচন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.103 – শর্মিলা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.102 – ল্যাবরেটরি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.101 – লিপিকা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.100 – রাজর্ষি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.99 – রবিবার – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.98 – রক্তকবরী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.97 – যজ্ঞেশ্বরের যজ্ঞ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.96 – ম্যানেজারবাবু – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.95 – মেঘনাদবধ কাব্য – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.94 – মাস্টারমশায় – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.93- মালঞ্চ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.92 – ভারত বর্ষের ইতিহাস – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.91 – ভানুসিংহের পদাবলী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.90 – ব্যবধান – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.89 – বোস্টমী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.88 – বিমলার আত্মকথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.87 – বিচারক – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.86 – বসন্ত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.85 – বলাই – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.84 – বদনাম – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.83 – বউ-ঠাকুরানীর হাট – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.82 – প্রতিবেশিনী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.81 – প্রজাপতির নির্বন্ধ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.80 – পোস্টমাস্টার – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.79 – পাত্র ও পাত্রী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.78 – নৌকাডুবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.77 – নীরব কবি ও অশিক্ষিত কবি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.76 – নারী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.75 – দেনাপাওনা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.74 – দৃষ্টিদান – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.73 – দুর্বুদ্ধি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.72 – দিদি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.71 – দালিয়া – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.70 – দান প্রতিদান – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.69 – দর্পহরণ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.68 – তিনসঙ্গী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.67 – তপস্বিনী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.66 – ডিটেকটিভ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.65 – ডাকঘর – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.64 – ঠাকুরদা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.63 – জ্যাঠামশাই – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.62 – জীবিত ও মৃত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.61 – জাপান-যাত্রী – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.60 – জয়পরাজয় – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.59 – ছোটো ও বড়ো – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.58 – ছুটি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.57 – চোরাই ধন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.56 – চোখের বালি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.55 – চিত্রকর – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.54 – চার অধ্যায় – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.53 – চতুরঙ্গ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.52 – ঘাটের কথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.51 – গোরা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.50 – গুপ্তধন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.49 – গীতাঞ্জলি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.48 – গল্পসল্প – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.47 – গল্পসমগ্র – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.46 – গল্পগুচ্ছ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.45 – খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.44 – খাতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.43 – ক্ষুধিত পাষাণ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.42 – কাবুলিওয়ালা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.41 – কর্মফল – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.40 – কঙ্কাল – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.39 – একটি আষাঢ়ে গল্প – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.38 – ঋণশোধ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.37 – উদ্ধার – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.36 – ইম্পীরিয়লিজ্ম্ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.35 – ইচ্ছাপূরণ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.34 – আধুনিক কাব্য – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.33 – অসম্ভব কথা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.32 – অমিত-চরিত – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.31 – অপরিচিতা – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.30 – অনধিকার প্রবেশ – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.29 – অধ্যাপক – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.28 – অতিথি – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.27 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – সপ্তবিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.26 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – ষড়বিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.25 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – পঞ্চবিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.24 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – চতুর্বিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.23 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – ত্রয়োবিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.22 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – দ্বাবিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.21 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – একবিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.20 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – বিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.19 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – ঊনবিংশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.18 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – অষ্টাদশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.17 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – সপ্তদশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.16 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – ষোড়শ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.15 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – পঞ্চদশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.14 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – চতুর্দশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.13 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – ত্রয়োদশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.12 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – দ্বাদশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.11 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – একাদশ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.10 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – দশম খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.9 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – নবম খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.8 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – অষ্টম খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.7 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – সপ্তম খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.6 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – ষষ্ঠ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.5 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – পঞ্চম খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.4 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – চতুর্থ খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.3 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – তৃতীয় খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.2 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – দ্বিতীয় খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
13.1 – রবীন্দ্র-রচনাবলী – প্রথম খণ্ড – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

12. কাজী নজরুল ইসলাম
12.31 – হেনা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.30 – সিন্দু হিন্দোল – কাজী নজরুল ইসলাম
12.29 – সর্বহারা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.28 – সন্ধ্যা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.27 – সঞ্চিতা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.26 – শিউলিমালা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.25 – যুগ-স্রষ্টা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.24 – মৃত্যুক্ষুধা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.23 – ব্যথার দান – কাজী নজরুল ইসলাম
12.22 – বুলবুল – কাজী নজরুল ইসলাম
12.21 – বিষের বাঁশী – কাজী নজরুল ইসলাম
12.20 – বাঁধন-হারা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.19 – বাদল বরিষণে – কাজী নজরুল ইসলাম
12.18 – বনগীতি – কাজী নজরুল ইসলাম
12.17 – ফার্সি ও উর্দু ভাষায় নজরুল চর্চা
12.16 – ফনিমনসা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.15 – নতুন চাঁদ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.14 – নজরুল রচনাবলী-৮ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.13 – নজরুল রচনাবলী-৭ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.12 – নজরুল রচনাবলী-৬ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.11 – নজরুল রচনাবলী-৫ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.10 – নজরুল রচনাবলী-৪ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.9 – নজরুল রচনাবলী-৩ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.8 – নজরুল রচনাবলী-২ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.7 – নজরুল রচনাবলী-১ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.6 – নজরুল কবিতা সমগ্র-২ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.5 – নজরুল কবিতা সমগ্র-১ – কাজী নজরুল ইসলাম
12.4 – চক্রবাক – কাজী নজরুল ইসলাম
12.3 – ঘুমের ঘোরে – কাজী নজরুল ইসলাম
12.2 – কুহেলিকা – কাজী নজরুল ইসলাম
12.1 – অগ্নিবীনা – কাজী নজরুল ইসলাম

11.4 – মতিচূর – বেগম রোকেয়া
11.3 – বেগম রোকেয়া রচনাবলী
11.2 – দি মুসলমান পত্রিকায় – বেগম রোকেয়া
11.1 – অবরোধ বাসিনী – বেগম রোকেয়া

10. আনিসুল হক
10.27 – হৃদিতা – আনিসুল হক
10.26 – স্বপ্ন – আনিসুল হক
10.25 – সেঁজুতি, তোমার জন্য – আনিসুল হক
10.24 – সেই ঘুমের পর – আনিসুল হক
10.23 – যারা ভোর এনেছিলো – আনিসুল হক
10.22 – মা – আনিসুল হক
10.21 – মন + হৃদয় – আনিসুল হক
10.20 – ভালোবাসি আশ্চর্য মেঘদল – আনিসুল হক
10.19 – ভালোবাসা মন্দবাসা – আনিসুল হক
10.18 – বিকেলবেলার গল্প – আনিসুল হক
10.17 – ফিরে এসো, সুন্দরীতমা – আনিসুল হক
10.16 – ফাজিল – আনিসুল হক
10.15 – পড়শি যদি আমায় ছুঁতো – আনিসুল হক
10.14 – নন্দিনী – আনিসুল হক
10.13 – ছাপাখানায় একটা ভুত থাকে – আনিসুল হক
10.12 – গ্রীসদেশের রূপকথা – আনিসুল হক
10.11 – খেয়া – আনিসুল হক
10.10 – কবি ও ক্যামেরা – আনিসুল হক
10.9 – ওনাদের নিয়ে কৌতুক – আনিসুল হক
10.8 – এতদিন কোথায় ছিলেন – আনিসুল হক
10.7 – আলো-অন্ধকারে যাই – আনিসুল হক
10.6 – আলো হাতে চলিয়াছে – আনিসুল হক
10.5 – আমার একটা দুঃখ আছে – আনিসুল হক
10.4 – আবার তোরা কিপ্টে হ – আনিসুল হক
10.3 – অসমাপ্ত চুম্বনের ১৯ বছর পর… – আনিসুল হক
10.2 – অশ্বডিম্ব – আনিসুল হক
10.1 – অন্ধকারের একশ বছর – আনিসুল হক

9. মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.118 – হাত কাটা রবিন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.117 – স্বপ্ন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.116 – স্কুলের নাম পথচারী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.115 – সেরিনা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.114 – সুহানের স্বপ্ন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.113 – সিস্টেম এডিফাস – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.112 – সায়েন্স ফিকশান সমগ্র (পর্ব-৫) – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.111 – সায়েন্স ফিকশান সমগ্র (পর্ব-৪) – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.110 – সায়েন্স ফিকশান সমগ্র (পর্ব-৩) – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.109 – সায়েন্স ফিকশান সমগ্র (পর্ব-২) – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.108 – সায়েন্স ফিকশান সমগ্র (পর্ব-১) – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.107 – সাধাসিধে কথা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.106 – সবুজ ভেলভেট – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.105 – সঙ্গী সাথী পশু পাখি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.104 – শাহনাজ ও ক্যাপ্টেন ডাবলু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.103 – শান্তা পরিবার – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.102 – লিটু বৃত্তান্ত – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.101 – লাবু এলো শহরে – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.100 – রূপ-রূপালী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.99 – রুহান রুহান – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.98 – রিটিন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.97 – রাশা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.96 – রাতুলের রাত রাতুলের দিন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.95 – রাজু ও আগুনালির ভূত – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.94 – রবোনগরী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.93 – রবো নিশি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.92 – রঙিন চশমা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.91 – যারা বায়োবট – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.90 – যখন টুনটুনি তখন ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.89 – মেয়েটির নাম নারীনা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.88 – মেতসিস – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.87 – মেকু কাহিনী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.86 – মিথ্যা বলার অধিকার ও অন্যান্য – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.85 – মহাকাশে মহাত্রাস – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.84 – ভবদহের গল্প এবং অন্যান্য – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.83 – ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.82 – ব্যাংক ডাকাত – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.81 – বৈশাখের হাহাকার – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.80 – বেজি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.79 – বৃষ্টির ঠিকানা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.78 – বুবুনের বাবা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.77 – বুগাবুগা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.76 – বিবর্ণ তুষার – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.75 – বিজ্ঞানী সফদব আলীর মহা মহা আবিষ্কার – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.74 – বিজ্ঞানী আনিক লুম্বা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.73 – বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.72 – বদনখানি মলিন হলে – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.71 – বকুলাপ্পু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.70 – ফোবিয়ানের যাত্রী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.69 – ফিনিক্স – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.68 – প্রেত – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.67 – প্রিয় গগন ও অন্যান্য – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.66 – প্রডিজি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.65 – প্রজেক্ট নেবুলা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.64 – পৃ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.63 – পিশাচিনী- মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.62 – নিঃসঙ্গ বচন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.61 – নিঃসঙ্গ গ্রহচারী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.60 – নিতু আর তার বন্ধুরা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.59 – নিউরনে আবারো অনুরণন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.58 – নিউরনে অনুরণন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.57 – নয় নয় শূন্য তিন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.56 – দেশের বাইরে দেশ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.55 – দেখা আলো না দেখা রূপ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.54 – দুষ্টু দুষ্ট ছেলের দল – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.53 – দীপু নাম্বার টু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.52 – দানব – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.51 – দস্যি ক’জন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.50 – দলের নাম ব্ল্যাক ড্রাগন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.49 – ত্রিনিত্রি রাশিমালা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.48 – ত্রাতুলের জগৎ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.47 – তোমাদের প্রশ্ন আমার উত্তর – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.46 – তিতুনি এবং তিতুনি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.45 – তবুও টুনটুনি তবুও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.44 – টুনটুনি ও ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.43 – টুকুনজিল – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.42 – টি-রেক্স এর সন্ধানে – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.41 – টাইট্রন একটি গ্রহের নাম – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.40 – জারুল চৌধুরীর মানিকজোড় – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.39 – জলজ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.38 – জরিনি ইঁদুর – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.37 – ছেলেমানুষী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.36 – ছায়ালীন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.35 – গ্রামের নাম কাঁকনডুবি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.34 – গাব্বু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.33 – গণিতের মজা মজার গণিত – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.32 – ক্রোমিয়াম অরণ্য – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.31 – ক্রেনিয়াল – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.30 – ক্রুগো – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.29 – ক্যাম্প – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.28 – কেপলার টুটুবি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.27 – কাবিল কোহকাফী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.26 – কাজলের দিনরাত্রি – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.25 – কাচ সমুদ্র – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.24 – কপোট্রনিক সুখ দুঃখ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.23 – ওমিক্রণিক রূপান্তর – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.22 – এনিম্যান – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.21 – এখন তখন মানিক রতন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.20 – একটি মৃত্যুদণ্ড – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.19 – একজন অতিমানবী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.18 – ইস্টিশন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.17 – ইরন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.16 – ইকারাস – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.15 – আরো টুনটুনি ও আরো ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.14 – আরো একটুখানি বিজ্ঞান – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.13 – আমেরিকা – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.12 – আমি তপু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.11 – আমার বন্ধু রাশেদ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.10 – আমাদের বুকসেলফ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.9 – আবারো টুনটুনি ও আবারো ছোটাচ্চু – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.8 – আগন্তুক – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.7 – আঁখি এবং আমরা ক’জন – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.6 – আকাশ বাড়িয়ে দাও – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.5 – অবিশ্বাস্য সুন্দর পৃথিবী – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.4 – অবনীল – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.3 – অন্ধকারের গ্রহ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.2 – অনুরন গোলক – মুহম্মদ জাফর ইকবাল
9.1 – অক্টোপাসের চোখ – মুহম্মদ জাফর ইকবাল

8. সমরেশ বসু
8.4 – আদি মধ্য অন্ত – সমরেশ বসু

    8.3 – আমার আয়নার মুখ – সমরেশ বসু

    8.2 – আমি তোমাদেরই লোক – সমরেশ বসু
8.1 – অবচেতন – সমরেশ বসু

7. আরজ আলী মাতুব্বর
7.5 – আরজ আলী সমীপে – আরিফ আজাদ

    7.4 – আরজ আলী মাতুব্বর – রচনা সমগ্র-৩
7.3 – আরজ আলী মাতুব্বর – রচনা সমগ্র-২
7.2 – আরজ আলী মাতুব্বর – রচনা সমগ্র-১
7.1 – সত্যের সন্ধান – আরজ আলী মাতুব্বর

6. শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (84 pdf Books)

5. ইস্টিফেন হকিং
5.3 – কালের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস – Stephen Hawking
5.2 – মহান নকশা – Stephen Hawking
5.1 – শিশু মহাবিশ্ব কৃষ্ণগহ্বর ও অন্যান্য রচনাবলি – Stephen Hawking

4. তাসলিমা নাসরিন
4.20 – আমি ভালো নেই, তুমি ভালো থেকো প্রিয় দেশ – তাসলিমা নাসরিন
4.19 – উহল হাওয়া – তাসলিমা নাসরিন
4.18 – জল পদ্য – তাসলিমা নাসরিন
4.17 – তবু ভাল থেকো – তাসলিমা নাসরিন
4.16 – তুই নিষিদ্ধ তুই কথা কইস না – তাসলিমা নাসরিন
4.15 – নারীর কোনও দেশ নেই – তাসলিমা নাসরিন
4.14 – বন্দিনী – তাসলিমা নাসরিন
4.13 – বেলা যায় মেলা যায় – তাসলিমা নাসরিন
4.12 – ভালোবাসো – ছাই বাসো – তাসলিমা নাসরিন
4.11 – ভূতের গল্প – তাসলিমা নাসরিন
4.10 – ভূমধ্যসাগরের তীরে – তাসলিমা নাসরিন
4.9 – শরম – তাসলিমা নাসরিন
4.8 – শাড়ি ব্লাউজ – তাসলিমা নাসরিন
4.7 – শোধ – তাসলিমা নাসরিন
4.6 – সেইসব অন্ধকার – তাসলিমা নাসরিন
4.5 – কিছুক্ষণ থাকো – তাসলিমা নাসরিন
4.4 – আমার মেয়ে বেলা – তাসলিমা নাসরিন
4.3 – দ্বিখণ্ডিত / ক – তাসলিমা নাসরিন
4.2 – সকল গৃহ হারালো যার – তাসলিমা নাসরিন
4.1 – লজ্জা – তাসলিমা নাসরিন

3. মীর মোশাররফ হোসেন
3.5 – জমীদার দর্পণ – মীর মোশাররফ হোসেন
3.4 – গাজী মিয়াঁর বস্তানী – মীর মোশাররফ হোসেন
3.3 – বিষাদ সিন্ধু (পর্ব – ৩) – (মীর মোশাররফ হোসেন)
3.2 – বিষাদ সিন্ধু (পর্ব – ২) – (মীর মোশাররফ হোসেন)
3.1 – বিষাদ সিন্ধু (পর্ব – ১) – (মীর মোশাররফ হোসেন)

2. হুমায়ুন আজাদ
2.10 – প্রবচন সমগ্র – হুমায়ুন আজাদ

    2.8 – মানুষ হিশেবে আমার অপরাধসমূহ – হুমায়ুন আজাদ

    2.7 – দ্বিতীয় লিঙ্গ – হুমায়ুন আজাদ
2.6 – পাক সার জমিন সাদ বাদ – হুমায়ুন আজাদ
2.5 – ফালি ফালি ক’রে কাটা চাঁদ – হুমায়ুন আজাদ
2.4 – মহাবিশ্ব – হুমায়ুন আজাদ
2.3 – লাল নীল দীপাবলি – হুমায়ুন আজাদ
2.2 – শুভ্রত তার সম্পর্কিত সুসমাচার – হুমায়ুন আজাদ
2.1 – সীমাবদ্ধতার সূত্র – হুমায়ুন আজাদ

1. হুমায়ূন আহমেদ
1.242 – আজ চিত্রার বিয়ে – হুমায়ূন আহমেদ

    1.239 – হিমু সমগ্র – দ্বিতীয় খণ্ড – হুমায়ূন আহমেদ
1.238 – হিমু সমগ্র – প্রথম খণ্ড – হুমায়ূন আহমেদ
1.237 – হিমু মিসির আলি যুগলবন্দি – হুমায়ূন আহমেদ
1.236 – হিমু এবং হার্ভার্ড পিএইচডি বল্টুভাই – হুমায়ূন আহমেদ
1.235 – হিমু – হুমায়ূন আহমেদ
1.234 – হিজিবিজি – হুমায়ূন আহমেদ
1.233 – হারুকি মোরাকামি – হুমায়ূন আহমেদ
1.232 – হরতন ইশকাপন – হুমায়ূন আহমেদ
1.231 – স্বপ্ন ও অন্যান্য – হুমায়ূন আহমেদ
1.230 – সে ও নর্তকী – হুমায়ূন আহমেদ
1.229 – সূর্যের দিন – হুমায়ূন আহমেদ
1.228 – সায়েন্স ফিকশন সমগ্র-২ – হুমায়ূন আহমেদ
1.227 – সায়েন্স ফিকশন সমগ্র-১ – হুমায়ূন আহমেদ
1.226 – সম্রাট – হুমায়ূন আহমেদ
1.225 – সম্পর্ক – হুমায়ূন আহমেদ
1.224 – সকল কাঁটা ধন্য করে – হুমায়ূন আহমেদ
1.223 – শুভ্র সমগ্র – হুমায়ূন আহমেদ
1.222 – শুভ্র গেছে বনে – হুমায়ূন আহমেদ
1.221 – শবযাত্রা – হুমায়ূন আহমেদ
1.220 – শঙ্খনীল কারাগার – হুমায়ূন আহমেদ
1.219 – লীলাবতীর মৃত্যু – হুমায়ূন আহমেদ
1.218 – লিপি – হুমায়ূন আহমেদ
1.217 – রোদন ভরা এই বসন্ত – হুমায়ূন আহমেদ
1.216 – রূপা – হুমায়ূন আহমেদ
1.215 – রুমালী – হুমায়ূন আহমেদ
1.214 – রাক্ষস খোক্কস – হুমায়ূন আহমেদ
1.213 – রস, কষ, শিঙাড়া, বুলবুলি, মস্তক – হুমায়ূন আহমেদ
1.212 – রং পেন্সিল – হুমায়ূন আহমেদ
1.211 – যোগাযোগ মন্ত্রীর পদত্যাগ – হুমায়ূন আহমেদ
1.210 – যশোহা বৃক্ষের দেশে – হুমায়ূন আহমেদ
1.209 – যন্ত্র – হুমায়ূন আহমেদ
1.208 – যখন নামিবে আঁধার – হুমায়ূন আহমেদ
1.207 – যখন গিয়েছে ডুবে পঞ্চমীর চাঁদ – হুমায়ূন আহমেদ
1.206 – মেঘের ওপর বাড়ি – হুমায়ূন আহমেদ
1.205 – মেঘ বলেছে যাব যাব – হুমায়ূন আহমেদ
1.204 – মৃন্ময়ীর মন ভালো নেই – হুমায়ূন আহমেদ
1.203 – মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস – হুমায়ূন আহমেদ
1.202 – মিসির আলি অমনিবাস-২ – হুমায়ূন আহমেদ
1.201 – মিসির আলি অমনিবাস-১ – হুমায়ূন আহমেদ
1.200 – মিসির আলি অমনিবাস – হুমায়ূন আহমেদ
1.199 – মিরার গ্রামির বাড়ি – হুমায়ূন আহমেদ
1.198 – মাঠরঙ্গ – হুমায়ূন আহমেদ
1.197 – মহাপুরুষ – হুমায়ূন আহমেদ
1.196 – মধ্যাহ্ন – হুমায়ূন আহমেদ
1.195 – ভ্রমণসমগ্র – হুমায়ূন আহমেদ
1.194 – ভয়ংকর ভুতুড়ে – হুমায়ূন আহমেদ
1.193 – ব্ল্যাক ফ্রাইডে – হুমায়ূন আহমেদ
1.192 – বোতল ভূত – হুমায়ূন আহমেদ
1.191 – বৃষ্টি ও মেঘমালা – হুমায়ূন আহমেদ
1.190 – বৃক্ষকথা – হুমায়ূন আহমেদ
1.189 – বিপদ – হুমায়ূন আহমেদ
1.188 – বাউলা কে বানাইলো রে – হুমায়ূন আহমেদ
1.187 – বসন্ত বিলাপ – হুমায়ূন আহমেদ
1.186 – ফেরা – হুমায়ূন আহমেদ
1.185 – ফাউনটেনপেন – হুমায়ূন আহমেদ
1.184 – প্রিয়পদরেখা – হুমায়ূন আহমেদ
1.183 – প্রিয়তমেষু – হুমায়ূন আহমেদ
1.182 – প্রথম প্রহর – হুমায়ূন আহমেদ
1.181 – পোকা – হুমায়ূন আহমেদ
1.180 – পেন্সিলে আঁকা পরী – হুমায়ূন আহমেদ
1.179 – পারুল ও তিনটি কুকুর – হুমায়ূন আহমেদ
1.178 – পায়ের তলায় খড়ম – হুমায়ূন আহমেদ
1.177 – পাপ – হুমায়ূন আহমেদ
1.176 – পরেশের ‘হইলদা’ বাড়ি – হুমায়ূন আহমেদ
1.175 – পঞ্চকন্যা – হুমায়ূন আহমেদ
1.174 – নীল হাতী – হুমায়ূন আহমেদ
1.173 – নিশীথিনী – হুমায়ূন আহমেদ
1.172 – নিমধ্যমা – হুমায়ূন আহমেদ
1.171 – নিজের কিছু কথা – হুমায়ূন আহমেদ
1.170 – নিউটনের ভুল সুত্র – হুমায়ূন আহমেদ
1.169 – নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ – হুমায়ূন আহমেদ
1.168 – নলিনী বাবু B.Sc – হুমায়ূন আহমেদ
1.167 – নবীজী – হুমায়ূন আহমেদ
1.166 – নবনী – হুমায়ূন আহমেদ
1.165 – দেখা না-দেখা – হুমায়ূন আহমেদ
1.164 – দূরে কোথাও – হুমায়ূন আহমেদ
1.163 – দিনের শেষে – হুমায়ূন আহমেদ
1.162 – দিন বদলায় – হুমায়ূন আহমেদ
1.161 – দারুচিনি দ্বিপ – হুমায়ূন আহমেদ
1.160 – দাঁড়কাকের সংসার কিংবা মাঝে মাঝে তব দেখা পাই – হুমায়ূন আহমেদ
1.159 – দশজন – হুমায়ূন আহমেদ
1.158 – তোমাদের জন্য ভালোবাসা – হুমায়ূন আহমেদ
1.157 – তোমাকে – হুমায়ূন আহমেদ
1.156 – তাহারা – হুমায়ূন আহমেদ
1.155 – তন্দ্রাবিলাস – হুমায়ূন আহমেদ
1.154 – জোছনা ও জননীর গল্প – হুমায়ূন আহমেদ
1.153 – জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাই স্কুল – হুমায়ূন আহমেদ
1.152 – জাদুকর – হুমায়ূন আহমেদ
1.151 – জলকন্যা – হুমায়ূন আহমেদ
1.150 – জল জোছনা – হুমায়ূন আহমেদ
1.149 – জয়জয়ন্তী – হুমায়ূন আহমেদ
1.148 – জনম জনম – হুমায়ূন আহমেদ
1.147 – ছোটদের যত লেখা – হুমায়ূন আহমেদ
1.146 – ছায়াসঙ্গী – হুমায়ূন আহমেদ
1.145 – ছবি বানানোর গল্প – হুমায়ূন আহমেদ
1.144 – চৈত্রের দ্বিতীয় দিবস – হুমায়ূন আহমেদ
1.143 – গৃহত্যাগী জোছনা – হুমায়ূন আহমেদ
1.142 – গল্প সমগ্র – হুমায়ূন আহমেদ
1.141 – কেউ কথা কয় – হুমায়ূন আহমেদ
1.140 – কুহুরানী – হুমায়ূন আহমেদ
1.139 – কুদ্দুসের একদিন – হুমায়ূন আহমেদ
1.138 – হুমায়ূন আহমেদের হাতে পাঁচটি নীল পদ্ম – হুমায়ূন আহমেদ

    1.137 – কালো যাদুকর – হুমায়ূন আহমেদ
1.136 – কবি – হুমায়ূন আহমেদ
1.135 – একা একা – হুমায়ূন আহমেদ
1.134 – একটি সাইকেল এবং কয়েকটি ডাহুক পাখি – হুমায়ূন আহমেদ
1.133 – একজন মায়াবতী – হুমায়ূন আহমেদ
1.132 – এইসব দিনরাত্রি – হুমায়ূন আহমেদ
1.131 – এই বসন্তে – হুমায়ূন আহমেদ
1.130 – এই আমি – হুমায়ূন আহমেদ
1.129 – উড়ালপঙ্খি – হুমায়ূন আহমেদ
1.128 – উঠোন পেরিয়ে দুই পা – হুমায়ূন আহমেদ
1.127 – ইস্টিশন – হুমায়ূন আহমেদ
1.126 – ইমা – হুমায়ূন আহমেদ
1.125 – আসমানীরা তিন বোন – হুমায়ূন আহমেদ
1.124 – আমার ছেলেবেলা – হুমায়ূন আহমেদ
1.123 – আপনারে আমি খুঁজিয়া বেড়াই – হুমায়ূন আহমেদ
1.122 – আনন্দ বেদনার কাব্য – হুমায়ূন আহমেদ
1.121 – আজ দুপুরে তোমার নিমন্ত্রণ – হুমায়ূন আহমেদ
1.120 – আগুনের পরশমণি – হুমায়ূন আহমেদ
1.119 – অঁহক – হুমায়ূন আহমেদ
1.118 – অরণ্য – হুমায়ূন আহমেদ
1.117 – অপেক্ষা – হুমায়ূন আহমেদ
1.116 – অন্তরার বাবা – হুমায়ূন আহমেদ
1.115 – একাত্তর এবং আমার বাবা – হুমায়ূন আহমেদ
1.114 – আমাদের শাদা বাড়ি – হুমায়ূন আহমেদ
1.113 – মাতাল হাওয়া – হুমায়ূন আহমেদ
1.112 – পুফি – হুমায়ূন আহমেদ
1.111 – দেয়াল – হুমায়ূন আহমেদ
1.110 – আয়োময় – হুমায়ূন আহমেদ
1.109 – তোমাদের এই নগরে – হুমায়ূন আহমেদ
1.108 – তিথির নীল তোয়ালে – হুমায়ূন আহমেদ
1.107 – দি একসরসিস্ট – অনুবাদক, হুমায়ূন আহমেদ
1.106 – তেতুল বনে জোছনা – হুমায়ূন আহমেদ
1.105 – তারা তিন জন – হুমায়ূন আহমেদ
1.104 – সৌরভ – হুমায়ূন আহমেদ
1.103 – সবাই গেছে বনে – হুমায়ূন আহমেদ
1.102 – শ্যামল ছায়া – হুমায়ূন আহমেদ
1.101 – শুভ্র – হুমায়ূন আহমেদ
1.100 – শূন্য – হুমায়ূন আহমেদ
1.99 – সেদিন চৈত্রমাস – হুমায়ূন আহমেদ
1.98 – সে আসে ধীরে – হুমায়ূন আহমেদ
1.97 – সানাউল্লার মহাবিপদ – হুমায়ূন আহমেদ
1.96 – সাজঘর – হুমায়ূন আহমেদ
1.95 – রূপার পালঙ্ক – হুমায়ূন আহমেদ
1.94 – রূপালী দ্বিপ – হুমায়ূন আহমেদ
1.93 – রং পেন্সিল – হুমায়ূন আহমেদ
1.92 – রাবণের দেশে আমি এবং আমরা – হুমায়ূন আহমেদ
1.91 – পারাপার – হুমায়ূন আহমেদ
1.90 – পাখি আমার একলা পাখি – হুমায়ূন আহমেদ
1.89 – অনীশ – হুমায়ূন আহমেদ
1.88 – ওমেগা পয়েন্ট – হুমায়ূন আহমেদ
1.87 – নিষাদ – হুমায়ূন আহমেদ
1.86 – নির্বাসন – হুমায়ূন আহমেদ
1.85 – নীল মানুষ – হুমায়ূন আহমেদ
1.84 – নীল অপরাজিতা – হুমায়ূন আহমেদ
1.83 – নি – হুমায়ূন আহমেদ
1.82 – নন্দিত নরকে – হুমায়ূন আহমেদ
1.81 – মৃন্ময়ী – হুমায়ূন আহমেদ
1.80 – ময়ূরাক্ষীর তীরে প্রথম হিমু – হুমায়ূন আহমেদ
1.79 – ময়ূরাক্ষী – হুমায়ূন আহমেদ
1.78 – মজার ভূত – হুমায়ূন আহমেদ
1.77 – মিসির আলির চশমা – হুমায়ূন আহমেদ
1.76 – মিসির আলির অমিমাংসিত রহস্য – হুমায়ূন আহমেদ
1.75 – মিসির আলি! আপনি কোথায়? – হুমায়ূন আহমেদ
1.74 – মিসির আলি UNSOLVED – হুমায়ূন আহমেদ
1.73 – মেঘের ছায়া – হুমায়ূন আহমেদ
1.72 – মানবী – হুমায়ূন আহমেদ
1.71 – ম্যাজিক মুনশি – হুমায়ূন আহমেদ
1.70 – লিলুয়া বাতাস – হুমায়ূন আহমেদ
1.69 – কুটু মিঞা – হুমায়ূন আহমেদ
1.68 – কুহক – হুমায়ূন আহমেদ
1.67 – কৃষ্ণপক্ষ – হুমায়ূন আহমেদ
1.66 – কিছুক্ষণ – হুমায়ূন আহমেদ
1.65 – কিছু শৈশব – হুমায়ূন আহমেদ
1.64 – কাঠপেন্সিল – হুমায়ূন আহমেদ
1.63 – যদিও সন্ধ্যা – হুমায়ূন আহমেদ
1.62 – জলিল সাহেবের পিটিশন – হুমায়ূন আহমেদ
1.61 – ইরিনা – হুমায়ূন আহমেদ
1.60 – প্রেমের গল্প – হুমায়ূন আহমেদ
1.59 – হলুদ হিমু কালো র‌্যাব – হুমায়ূন আহমেদ
1.58 – হিমুর রূপালী রাত্রী – হুমায়ূন আহমেদ
1.57 – হিমুর নীল জোছনা – হুমায়ূন আহমেদ
1.56 – হিমুর মধ্যদুপুর – হুমায়ূন আহমেদ
1.55 – হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম – হুমায়ূন আহমেদ
1.54 – হিমুর একান্ত সাক্ষাৎকার ও অন্যান্য – হুমায়ূন আহমেদ
1.53 – হিমুর দ্বিতীয় প্রহর – হুমায়ূন আহমেদ
1.52 – হিমুর বাবার কথামালা – হুমায়ূন আহমেদ
1.51 – হিমুর আছে জল – হুমায়ূন আহমেদ
1.50 – হিমু রিমান্ডে – হুমায়ূন আহমেদ
1.49 – হিমু মামা – হুমায়ূন আহমেদ
1.48 – হিমু এবং একটি রাশিয়ান পরী – হুমায়ূন আহমেদ
1.47 – হিমু – হুমায়ূন আহমেদ
1.46 – গৌরীপুর জংশন – হুমায়ূন আহমেদ
1.45 – ফিহা সমীকরণ – হুমায়ূন আহমেদ
1.44 – এলেবেলে (দ্বিতীয় পর্ব) – হুমায়ূন আহমেদ
1.43 – এলেবেলে (প্রথম পর্ব) – হুমায়ূন আহমেদ
1.42 – একজন হিমু কয়েকটি ঝিঁ ঝিঁ পোকা – হুমায়ূন আহমেদ
1.41 – একি কান্ড! – হুমায়ূন আহমেদ
1.40 – একাত্তরের চিঠি – হুমায়ূন আহমেদ
1.39 – এই শুভ্র এই! – হুমায়ূন আহমেদ
1.38 – এবং হিমু – হুমায়ূন আহমেদ
1.37 – দুই দুয়ারী – হুমায়ূন আহমেদ
1.36 – দরজার ওপাশে – হুমায়ূন আহমেদ
1.35 – দ্বিতীয় মানব – হুমায়ূন আহমেদ
1.34 – দিঘির জলে কার ছায়া গো – হুমায়ূন আহমেদ
1.33 – দেবী – হুমায়ূন আহমেদ
1.32 – দ্বারুচিনি দ্বীপ – হুমায়ূন আহমেদ
1.31 – চলে যায় বসন্তের দিন – হুমায়ূন আহমেদ
1.30 – চক্ষে আমার তৃষ্ণা – হুমায়ূন আহমেদ
1.29 – ছেলেটা – হুমায়ূন আহমেদ
1.28 – ছায়াবীথি – হুমায়ূন আহমেদ
1.27 – চাঁদের আলোয় কয়েকজন যুবক – হুমায়ূন আহমেদ
1.26 – বৃষ্টি বিলাস – হুমায়ূন আহমেদ
1.25 – বৃহন্নলা – হুমায়ূন আহমেদ
1.24 – বহুব্রীহি – হুমায়ূন আহমেদ
1.23 – ভয় – হুমায়ূন আহমেদ
1.22 – বাসর – হুমায়ূন আহমেদ
1.21 – বলপয়েন্ট – হুমায়ূন আহমেদ
1.20 – বাঘবন্দি মিসির আলি – হুমায়ূন আহমেদ
1.19 – বাদশাহ নামদার – হুমায়ূন আহমেদ
1.18 – বাদল দিনের দ্বিতীয় কদম ফুল – হুমায়ূন আহমেদ
1.17 – আয়নাঘর – হুমায়ূন আহমেদ
1.16 – আশাবরী – হুমায়ূন আহমেদ
1.15 – অপরাহ্ণ – হুমায়ূন আহমেদ
1.14 – অন্যদিন – হুমায়ূন আহমেদ
1.13 – অন্যভুবন – হুমায়ূন আহমেদ
1.12 – অনন্ত নক্ষত্র বীথি – হুমায়ূন আহমেদ
1.11 – আঙুল কাটা জগলু – হুমায়ূন আহমেদ
1.10 – অনন্ত অম্বরে – হুমায়ূন আহমেদ
1.9 – আমিই মিসির আলি – হুমায়ূন আহমেদ
1.8 – আমি এবং আমরা – হুমায়ূন আহমেদ
1.7 – আমার আছে জল – হুমায়ূন আহমেদ
1.6 – অমানুষ – হুমায়ূন আহমেদ
1.5 – অদ্ভুত সব গল্প – হুমায়ূন আহমেদ
1.4 – অচিনপুর – হুমায়ূন আহমেদ
1.3 – আজ হিমুর বিয়ে – হুমায়ূন আহমেদ
1.2 – আজ আমি কোথাও যাব না – হুমায়ূন আহমেদ
1.1 – অন্ধকারের গান – হুমায়ূন আহমেদ

* এখানে সিরিয়াল নাম্বরটি বইয়ের গুরুত্ব নির্দেশ করে না। আগে-পরে সংগ্রহের উপর ভিত্তি করে সিরিয়াল দেয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে দ্রুত পাওয়ার জন্য শেয়ার করুন 

Composition : A Village Market

A Village Market

 

A village market is an important place. The villagers meet on fixed days of the week to buy and sell their articles. It generally sits by the side of a river a canal or a big road.
Village markets are of two kinds. Some of them sit twice in a week in the afternoon and break up after sunset. They are known as “bazaar”.
There are two kinds of shops in the village market- permanent shops and temporary shops. In permanent shops, people buy clothes, medicine, papers, sweet-meats and many articles of daily use. Temporary shops are arranged in rows. They are called stalls. These are occupied by shopkeepers on market day. They remain there so long as the market lasts. There are the fish corner, vegetable corner, raw item corner and so on. The sellers in each corner sit in lines. They set up their stock before them. In the village market, nothing is sold at a fixed price. So there is higgling among the sellers and the buyers over the price of commodities. The fish market is the most crowded of all. The betel-leaf sellers sit in a corner under the shed. They are very sellers.
A village market is a meeting place for the villagers. They meet their friends and relatives. The village postman finds a unique place to deliver letters, money orders, parcels etc. to the addressees.
A village market should be properly guided and looked after by a committee.
 

Same composition collected from another book

 

A village market is generally situated by the riverside or by the side of a road where people of the nearby villages may come without much difficulty. Some village markets are big and some small. A village market is generally held twice or thrice a weed according to local need or custom.
In a village market, there are small huts where the shop-keepers sit with their goods for sale. Some shop-keepers sit under the open sky. In some village markets, there are a few permanent shops. The shops are systematically arranged. The sellers of the particular commodity sit in a line which is also called a ‘market’. A fish market is here, vegetable market is there, grocers (মুদী) sit here, clothes are sole there.
In a village market prices of articles are not fixed. Higgling and bargaining go on for a pretty long time before an actual transaction made. A village market is very useful to villagers. Here they can buy things that are necessary for their day-to-day life. It provides them an opportunity to sell the articles they produce. It also serves as a meeting place for friends and relatives.
A village market is the retail market of every kind of household items as well as the products of large industries. Thus a good number of products are sold there. And it takes part in the progress country’s economy. So the economic value of a village market is a matter to be noted.
Thus a village market plays a very important part in the economic and social life of villagers.

Composition : A Picnic Have Enjoyed

A Picnic Have Enjoyed

 

A picnic is having a meal out of doors, as part of a pleasure trip. Every year after the annual examination is over, we go on a picnic at different place. Last year, we went to Sonargaon on a picnic expedition. It was both exciting and enjoyable.

Our school picnic was planned long before we actually went for it. After the second term exam, we went to our teachers and requested them to take us out for a picnic. They agreed and the 30th December was fixed for the occasion.

We all gathered at the school premises at 8:30am. Three buses were hired to take us to the picnic spot. We made us all arrangements for coking on the spot. We also took light food for breakfast and refreshment.

The picnic spot was some 70 kilometres away. It took two hours to reach the place. We all enjoyed singing songs all the way around. Some of the teachers also joined us. At around 10:45am, we reached the spot. The spot was a nice one. There we started making arrangements for the picnic. The cook and his assistants cooked kachchi biryani and chicken fry. Some of us helped them to prepare their food items. At 3:00pm, we were served with the main meal. Then, we all ate to our hearts’ content.

After the meal was over, we all arranged a cultural programme on the spot. The programme included extempore speeches, fun, ready wit, etc. The teachers also had to participate in the fun. After the cultural programme, we were briefed by our history teacher about the historical past of Sonargaon.

At around 5:30pm. we all got prepared to make our return journey. Before departure, we were given sandwiches and oranges. Then we started our journey to school. We got back to school by 7:15pm.

The picnic was an entertaining one. We all made fun and enjoyed it greatly. We also learned a lot about Sonargaon, our historical heritage.

Same composition collected from another book Continue reading Composition : A Picnic Have Enjoyed

রচনা: মুক্তিযুদ্ধ এবং আজকের বাংলাদেশ [২৪ পয়েন্ট]

মুক্তিযুদ্ধ এবং আজকের বাংলাদেশ

ভূমিকা

বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। কিন্তু এই স্বাধীনতা পেতে বাঙালিকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। টানা নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বাঙালি পায় তার কাঙ্খিত স্বাধীনতা। এই যুদ্ধ ছিল বাঙালির মুক্তির পূর্বশর্ত বাঙালির স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ ৭ কোটি মানুষের অধিকার রক্ষার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে বাঙালি ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ও লাখো বীরাঙ্গনার সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে ১৯৭১ সালে উদিত হয় স্বাধীনতার লাল সূর্য। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিকামী মানুষ হারিয়েছে অনেক কিছু। সর্বস্ব হারিয়েও তারা অর্জন করেছিল স্বাধীন সার্বভৌম স্বপ্নের একটি বাংলাদেশ।

 

প্রেক্ষাপট

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর ভারত ও পাকিস্তান নামে দুইটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তানের দুইটি অংশ ছিল যার নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে যেমন ছিল দূরত্বের ফারাক তেমনি অধিকারের দিক থেকেও ছিল দুই রাষ্ট্রের মধ্যে অনেক তফাৎ। তৎকালীন পাকিস্তান তথা বর্তমানের বাংলাদেশের মানুষের উপর প্রথম থেকেই পাকিস্তানিরা অত্যাচারের স্টিম রোলা চালাতে থাকে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হতে থাকে সম্পদ। পূর্ব বাংলায় দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ে শুরু হয় বৈষম্য। তাছাড়া বাঙালির নানান অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত হতে থাকে। ফলে সারা দেশে এক বিরাট বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় যা পরবর্তিতে আন্দোলনে রূপ নেয়।

 

বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ

বাঙালির জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্ণর উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রিভাষা ঘোষণা করলে রাজপথে নামে ছাত্র জনতা। তখন তাদের উপর গুলি চালায় পুলিশ। শহিদ হয় সালাম বরকত রফিক জব্বার শফিকসহ নাম না জানা অনেকে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম অধিকারের আঘাত আনে তারা ভাষার উপর। এরপর ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে তারা আমাদেরকে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর ১৯৬৬ এর ছয় দফা ও ১৯৬৯ এর গণঅভূত্থানের মধ্য দিয়ে বাঙালি বুঝতে পারে যে যুদ্ধ ছাড়া এই দেশে বাঙালিরা তাদের অধিকার পাবে না। তাই তখন থেকেই মানুষের মনে ক্ষোভ জমতে থাকে এবং মনে মনে তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।

 

স্বাধীনতার ডাক

১৯৬৯ সালের গনঅভূত্থানের পর থেকেই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন এদেশকে স্বাধীন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে হবে। তাই ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন। এই ভাষণ ৭ই মার্চের ঐতিহাসির ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু সাধারণ জনগণকে যা কিছু আছে তা নিয়েই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আদেশ দেন। সেই ভাষণই ছিল বাঙালির দেশ স্বাধীন করার মূল প্রেরণা। সেই ভাষণে ছিল যুদ্ধের সকল দিকনির্দেশনা। তিনি বলেন-

রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব
এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম

 

২৫শে মার্চের কালরাত্রি

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের পর জনগণের মধ্যে দেখা দেয় স্বাধিকার চেতনা। সকলে সংগ্রামী মনোভাব দেখাতে শুরু করে। তখন পাকিস্তানিরা বাঙালিকে দমাতে নতুন পরিকল্পনা করে। ক্ষমতা হস্তান্তরের আশ্বাস দিয়ে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৫শে মার্চ ঢাকা ত্যাগ করেন এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসে অস্ত্রধারী ট্যাঙ্ক ও গোলাবারুদ। ২৫ শে মার্চ রাতে ঘুমন্ত বাঙালির উপর পাকিস্তানি বাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে। সেদিন এক রাতে ঢাকায় প্রায় ২০ হাজার মানুষকে নিরীহভাবে হত্যা করা হয়। অবস্থা বুঝতে পেরে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। সেই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাকে সেখানেই বন্দি করে রাখা হয়।

 

সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ

২৫শে মার্চের সেই নারকীয় হত্যার পরই বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পূর্ণ মর্ম বুঝতে পারে। তাই ২৬ শে মার্চ থেকেই সকল বাঙালি যে যা পারে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ঝাপিয়ে পড়ে বাংলাদেশের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বীর সৈনিকেরা। তাছাড়া তৎকালীন বাঙালী পুলিশ ইপিআর আনসার বাহিনীরাও একযোগে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। অনেকে সাহসী বাঙালী তরুণেরা দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে থাকে। তাদের সাথে যোগ দেয় যোগ দেয় স্কুল কলেজের ছাত্র ও দিনমজুর কৃষক ও শ্রমিকেরা।

 

মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ যুদ্ধ শুরু হবার পর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্বে গড়ে উঠে মুক্তিবাহিনী। প্রথমে এর সংখ্যা ছিল ১৩০০০। তারপর দলে দলে বাংলার সাহসী তরুণেরা অংশগ্রহণ করতে থাকে। জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার চিফ ইন চার্জ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তার নেতৃত্বে গঠন করা হয় নিয়মিত বাহিনী ও অনিয়মিত গেরিলা বাহিনী। নিয়মিত বাহিনীর অধীনে সারা দেশে তিনটি ব্রিগেড ফোর্স গঠন করা হয় যা কে ফোর্স জেড ফোর্স ও এস ফোর্স নামে পরিচিত। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকে পরিচালনা করার জন্য দেশেকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। মে মাস পর্যন্ত নিয়মিত বাহিনী সাফল্যের সাথে যুদ্ধ করে যায়। অতঃপর জুন মাসে অনিয়মিত গেরিলা বাহিনী সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১০ নং সেক্টরের অধীনে থাকা নৌ কমান্ডো বাহিনীও অত্যন্ত বীরত্ব ও কৃতিত্বের সাথে যুদ্ধ করে।

 

মুজিবনগর সরকার গঠন

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠণ করা হয় যা মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথ ইউনিয়নের আমবাগানে এই সরকার শপথ গ্রহণ করে। এই দিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাপত্র অনুযায়ী সেই সরকার কাজ করতে থাকে। পরবর্তীতে মেহেরপুর জেলার ঐ জায়গাটিকে মুজিবনগর নামে নামকরণ করা হয়।

 

মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। মুজিবনগর সরকারের প্রধান কাজই ছিল বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করা। মুজিবনগর সরকারের দেশে ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলে। মুজিবনগর সরকার মুক্তিবাহিনীর সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করে। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ ও বিদেশের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে এ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুক্তিযুদ্ধের মতো বিরূপ পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বজায় রাখা ছিল অনেক বড় চ্যালেঞ্জ যা এই সরকার খুব ভালোভাবে পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছিল।

 

মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ জনগণ ও পেশাজীবীদের ভূমিকা

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল বাংলার সাধারণ জনগণ। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তারা একযোগে ঝাপিয়ে পড়ে মুক্তির সংগ্রামে। দেশের ছাত্র জনতা পুলিশ ইপিআর কৃষক শ্রমিক পেশাজীবী সকলেই মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণ করেছিল। যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেকে দিয়েছে নিজেদের প্রাণ আবার অনেকে পঙ্গু অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের এই ঋণ কোনোদিনও শোধ করা যাবে না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের সকল মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। তাই একে গনযুদ্ধ বা জনযুদ্ধও বলা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল মুক্তিযোদ্ধারাই ছিলেন আসল দেশপ্রেমিক। তারা ছিলেন অসীম সাহসী, দেশের বীর সন্তান ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ যোদ্ধা। নিজেদের জানের মায়া ত্যাগ করে তারা দেশকে স্বাধীন করেছিল। তাদের এই ত্যাগ জাতি চিরকাল স্মরণে রাখবে।

 

মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নেতৃত্বদানকারী দলটির নাম হলো আওয়ামী লীগ। মূলত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বই মুক্তিযুদ্ধের গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করে। তারা ১৯৭০ সালে নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে দেশের মানুষের মধ্যে স্বাধিকার চেতনার জাগরণ ঘটায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অনেকগুলো রাজনৈতিক দল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:ন্যাপ(ভাসানী) ন্যাপ(মোজাফফর) কমিউনিস্ট পার্টি জাতীয় কংগ্রেসস ইত্যাদি। আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিছু দল পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: রাজাকার আলবদর আল শামস ইত্যাদি। তারা হত্যা লুটতরাজ অগ্নিসংযোগ সহ নানান ধরণের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত ছিল।

 

মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সেখানে ছাত্রদের ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে বেশি। গোটা জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছিল।
স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেসব ছাত্র জনতা। শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়। পাকিস্তানি আমলে প্রতিটি আন্দোলনের মূল আহবায়ক ছিল ছাত্ররাই। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তারাই নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল। এরপর ১৯৫৪ ১৯৬৬ ১৯৬৯ ১৯৭০ এর প্রতিটি আন্দোলনেই তারা রেখেছিল সক্রিয় ভূমিক। মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র জনতা ভ্যানগার্ড নামে অধিক পরিচিত ছিল। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে দেশের আনাচে কানাচে থেকে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা একযোগে ঝাপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। অনেক শিক্ষার্থীরা বাবা-মা কে লুকিয়ে রাতের অন্ধকারে যোগ দেয় মুক্তিবাহিনীর সাথে। তারা চলে যায় সিমান্ত পেরিয়ে পাশের দেশ ভারতে। সেখানে গিয়ে তারা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ও গেরিলা আক্রমণের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থা নাজেহাল করে তোলে।

 

মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে নারীরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। অনেক নারীরাই প্রশিক্ষণ নিয়ে সরাসরি রণাঙ্গনে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন নিজের জীবন বাজি রেখে। নারীরা কখনো যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে আবার কখনো যুদ্ধেক্ষেত্রের আড়ালে। তারা সবসময় মুক্তিযোদ্ধাদের মনে সাহস জুগিয়েছেন প্রেরণা দিয়েছেন অচেনা অজানা অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা সুশ্রুষা করেছেন। নিজেরা না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার রান্না করেছেন। অনাহারী অর্ধাহারী ক্ষুধার্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তারা কখনো সেবা দিয়েছেন নিজের বোনের মতো কখনো মায়ের মতো। চরম দুঃসময়ে পাকিস্তানিদের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের ঘরে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য নারীরা তেমন কোনো বিশেষ স্বীকৃতি পাননি। অনেক নারীযোদ্ধারাই হারিয়ে গেছেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করতে ও অনুপ্রেরণা জোগাতে এবং জনগণের মনে আধার সঞ্চার করতে ও দেশে বিদেশে জনমত সৃষ্টিতে দেশ বিদেশ থেকে প্রকাশিত হয় অসংখ্য নিয়মিত এবং অনিয়মিত পত্রিকা। এসব পত্রিকায় তুলে ধরা হয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাংলার বীরসেনাদের সাহসীকতার চিত্র এবং পাকবাহিনীর ধ্বংসলীলার দৃশ্য। পত্রিকাগুলোতে এ সম্পর্কে লেখা হতো বিভিন্ন প্রবন্ধ ছড়া রচনা কবিতা গল্প গান কার্টুন ইত্যাদি। সেই সময়ে লেখা সেই পত্রিকাগুলো আজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের দলিল হিসেবে কাজ করছে। পত্রিকাসহ অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোতেও বাঙালির বীরত্ব সাহসিকতা পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞ গণহত্যা শরণার্থী শিবিরের বর্ণনা গুরুত্বের সাথে স্থান পেয়েছিল।

 

মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালিদের অবদান

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসে অবস্থানকারী বাঙালিরাও বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন। মূলত আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তারা সরবরাহকারী বাহিনীর ভূমিকায় কাজ করছেন। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ছুটে গিয়েছেন। এছাড়াও তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার নিকট প্রতিনিধি প্রেরণ করেছে। পাকিস্তানকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ না করার জন্য বিভিন্ন প্রবাসী সরকারের নিকট আবেদন করেছেন। তাছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের ক্ষেত্রেও তারা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চালিকাশক্তি ছিল জনগণ। তবে দেশের শিল্পী সাহিত্যিকরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকাও ছিল প্রশংসনীয়।মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শিল্পী সাহিত্যিকদের পত্র পত্রিকায় লেখা বেতার কেন্দ্রের খবর পাঠ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা বিভিন্ন ধরণের দেশাত্মবোধক গান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গান কবিতা নাটক কথিকা ইত্যাদি মুক্তিযুদ্ধের মতো কঠিন পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বজায় রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান চরমপত্র ও জল্লাদের দরবার মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক অনুপ্রাণিত করেছিল। এককথায় দেশের সকল বুদ্ধিজীবীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে এবং জনগণকে শত্রুর নিকট দুর্দমনীয় করে তুলেছে।

 

মুক্তিযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের চিত্র বিশ্বের সকল গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ হতে থাকলে সকল রাষ্ট্র বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত তখন প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরি করতে এগিয়ে আসেন। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারতের বাহিনীরাও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশকে সমর্থন দিলেও মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের বিরোধিতা করে। কিন্তু সেই দেশের সাধারণ জনগণের তোপের মুখে পড়ে মার্কিন রাষ্ট্র পাকিস্তানকে গোলাবারুদ সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গায়ক জর্জ হ্যারিসন ও ভারতের রভি শংকর কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এর আয়োজন করে এবং প্রাপ্ত টাকা বাংলাদেশকে দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করে।

 

মুক্তিযুদ্ধে যৌথ বাহিনী

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ২১ নভেম্বর ভারতের কমান্ডার জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে গঠিত হয় বাংলাদেশ ভারত যৌথ কমান্ডো। ভারতীয় সেই বাহিনী মিত্রবাহিনী নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীকে অচল করে দেয়। ভারতীয় বিমানবাহিনী গভীর রাতে বাংলাদেশের সকল রুটে প্রবেশ করে এবং পাকিস্তানের প্রতিটি বিমানঘাটিতে হামলা চালায়। কুর্মিটোলা বিমানঘাটিতে ৫০ টন বোমা ফেলা হয়। তাদের আক্রমণে পাকিস্তানের প্রায় এক ডজনের মতো বিমান বিদ্ধস্ত হয়। ভারতীয় বিমানবাহিনী ও বাংলাদেশের সশস্ত্র যোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা নাজেহাল হয়ে পড়ে। তখন শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত অধ্যায়। ভারতীয় যোদ্ধাদের সাথে এক হয়ে যুদ্ধ করে মুক্তিবাহিনীর মনোবল বাড়তে থাকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক ভারতীয় সেনা মৃত্যুবরণ করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড

মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে যখন মুক্তিবাহিনী ও যৌথবাহিনীর আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ছিল তখন পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় ক্ষতি করার পদক্ষেপ নেয়। তারা তখন ঝাপিয়ে পড়ে আমাদের দেশের সূর্যসন্তানদের উপর। আর এই কাজে তাদেরকে সাহায্য করেছিল এদেশের এদেশের দোসর রাজাকার আলবদর ও আল শামস বাহিনী। তারা রাতের অন্ধকারে এদেশের মুক্তিকামী ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনকারী সকল শিক্ষক চিকিৎসক ডাক্তার সাংবাদিক বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। তাদের অনেকেরই ক্ষতবিক্ষত দেহ ঢাকার রায়ের বাজারের বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়।

 

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ

মাত্র নয় মাসের যুদ্ধেই পাকিস্তানের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যৌথবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমনে পাকিস্তানি বাহিনী নাজেহাল হয়ে পড়ে। তার আর কোনো উপায় না পেয়ে হানাদার পাকবাহিনী ১৯৭১ সালের ১৬ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ১ মিনিটে ঢাকার রেসকোর্স ময়দান বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যৌথ কমান্ডো এর পক্ষে লে জে জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে লে জে নিয়াজী পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঙালি জাতিকে শোষণ ও অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি প্রদান করেছে। ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং কুসংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে শত বছরের বাঙালি পরিচয়কে প্রধান্য দিয়ে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই ঐক্য দেশ গঠনে এবং এর উন্নয়নে বাঙালিজাতিকে নতুন উদ্যম প্রদান করে। দেশপ্রেম এবং জাতীয় সঙ্ঘতি একত্রে অত্যাবশ্যক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই পরে আমাদের সব বিভেদ ভুলে দেশপ্রেমিক বাঙালি হিসেবে লাল সবুজ পতাকার তলে সমবেত করতে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়া আজ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

 

সমাজ বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

বাংলাদেশের মানুষের যে স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষার মানসে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল প্রকৃতপক্ষে সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার পর বারবার সরকার বদল হত্যা আর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তৎপরতা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য যুবসমাজে সৃষ্ট হতাশা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘুষ দুর্নীতি ইত্যাদি কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমাজে বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রয়োজন দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে আন্তরিক পদক্ষেপ। এ লক্ষ্যে দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণকর শাসনব্যবস্থা যেমন প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত গৌরবগাঁথা আর আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। যে আদর্শ উদ্দেশ্য ও চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ তাদের তাজা প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে ইজ্জত দিয়েছে হাজার হাজার মা বোন আমাদের সমাজ এবং জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের সেই আদর্শ ও চেতনাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে এটিই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।

 

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও দায়িত্ববোধ

 

আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সফল করতে আমাদেরকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তাই বর্তমানে এই স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়টা বাস্তবায়ন করতে আমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে। দেশের সকল জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যেন তারা দেশের কোনো ক্ষতি করতে না পারে। দেশের সকল দেশপ্রেমিক শিল্পপতি চাকরিজীবী ব্যবসায়ী বুদ্ধিজীবী ও সকল কর্মকার্তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে সকল বিরোধের ঊর্ধে থেকে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে। দেশকে একটি দারিদ্রমুক্ত সুশিক্ষিত ও উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।

 

উপসংহার

 

স্বাধীনতা যে মানুষের জন্মগত অধিকার বাংলাদেশের মানুষ তা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে। ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম এই স্বাধীনতা। এর মাধ্যমে অবসান ঘটেছিল পাকিস্তানের প্রায় ২৪ বছরের শাসন শোষণ ও নিপীড়নের। তবে স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও আমরা এখনো বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলা গড়তে পারিনি। স্বাধীন জাতি হয়েও স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ এখনো আমরা পাইনি। তাই সকল সংকটকে দূরে ঠেলে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের নিজেরদেরকে দেশপ্রেম কর্তব্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই আমরা রক্ষা করতে পারব আমাদের স্বাধীনতাকে।

রচনা: দুর্নীতি ও তার প্রতিকার [42 Points]

দুর্নীতি ও তার প্রতিকার

ভূমিকা

দুর্নীতি কখনও হয়না সুনীতি
এ এক ভয়ানক মানসিক ব্যাধি
যার মনোরাজ্যে বিচরণ করছে এ আধি
তার ইহকাল পরকাল নিয়ে কেবলি আমরা কাঁদি।- ফিরোজ খান

এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বিশ্বের মানচিত্রে জন্ম হয়েছে যে সার্বভৌম দেশ সে দেশটির নাম বাংলাদেশ। এদেশ অপার সম্ভাবনা দেশ তবুও এ দেশ নানা সমস্যার ভারে জর্জরিত। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান সমস্যা হলে দুর্নীতি। বর্তমানে এ সমস্যা আমাদের জাতীয় জীবনকে রাহু গ্রাসের মত আকড়ে রেখেছে। এ অবস্থা কারো কাম্য নয়। তাই বাংলাদেশের ক্লান্তি লগ্নে আমাদের সচেতন হওয়া আশু জরুরি। দুর্নীতির সকল ক্ষেত্রসমূহের মূল উৎপাটন করা দরকার।

 

দুর্নীতির সজ্ঞা

নীতি শব্দের আগে দুঃ উপসর্গ যুক্ত হয়ে দুর্নীতি শব্দটি গঠিত হয়েছে। শাব্দিক অর্থে যা নীতি সমর্থিত নয় তাই দুর্নীতি আরও পরিষ্কারভাবে বলা যায় মানুষ যখন স্বেচ্ছাচারিতার প্রকাশ ঘটিয়ে অন্যায়ভাবে নীতিকে লঘিন করে কোন কাজ করে ব্যক্তি স্বার্থ চরিতার্থ করে তাই দুর্নীতি। দুর্নীতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞানী Pamnuth বলেন- In corruption a person willfully neglected his specified duty in order o have a undue advantage. অর্থাৎ দুর্নীতি হচ্ছে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিলের জন্য ক্ষমতা বা প্রভাবের অবৈধ স্বার্থ প্রণোদিত ব্যবহার।

 

সমাজ/জাতীয় জীবনে দুর্নীতির প্রভাব

সমাজ জীবনে দুর্নীতির প্রভাব মারাত্মক। দুর্নীতি সমাজে সম্পদের অসম প্রবাহ সৃষ্টি করে এক শ্রেণী বৈষমা বৃদ্ধি করে। কালো টাকার প্রভাবে এক শ্রেণীর মানুষ রাতারাতি বড়লোক বনে যায়। অসম প্রতিযোগিতায় মুখে পড়ে। সমাজে বসবাসকারী সৎ মানুষগুলো। শুধু তাই নয় দুর্নীতি প্রসারে নৈতিকতার অপমৃত্যু ঘটে ও সমাজ থেকে সৎ সুন্দর ও কল্যাণ চেতনা নির্বাসিত হয়।

 

দুর্নীতি ও বর্তমান বিশ্ব

সৃষ্টির সেরা জীব হলো মানুষ। স্বার্থপরতা নয় মানবতাই মানুষের মৌল ধর্ম। দুর্নীতি ব্যক্তির সামাজিক উন্নয়ন আনলেও তা রাহুর মত সমাজকে গ্রাস করে। দেশ ও সমাজ থেকে দুর্নীতিকে বিদায় করে সুন্দর পৃথিবী গড়ায় দায়িত্ব মানুষের। দুর্নীতি অন্ধকারে ডুবে যাওয়া দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে যুগে যুগে বহু মনীষীকে আমরণ সংগ্রাম করতে হয়েছে। ব্যক্তি সুখ বিসর্জন দিয়ে সুন্দর মানবজীবন গড়ে তুলতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স) এর মত শত শত মহামানবের জন্ম হয়েছে।

 

বাংলাদেশে দুর্নীতির ব্যাপকতা

গত ৩৫ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশে পর পর পাঁচবার বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে স্ফীতির জন্য। দুর্নীতি বিরোধি আন্তর্জাতিক সম্বো টি আই কর্তৃক প্রকাশিত রিপোর্ট ২০০১ ০২ ০৩ ০৪ ০৫ এ পাঁচ বছর দেশের বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পরিচিতি সমগবিশ্বে আমাদের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

★দুর্নীতির ক্ষেত্রসমূহ বাংলাদেশে দুর্নীতির বিভিন্ন ক্ষেত্র রয়েছে সেগুলো নিম্নরূপ-

 

প্রশাসনিক ক্ষেত্রে

বর্তমানে বাংলাদেশের কোন সরকারি দপ্তর বিভাগই দুর্নীতিমুক্ত নয়। ঘুষ বা উৎকোচ গ্রহণ সরকারি অর্থ আত্মসাৎ অপচয় ও ছুরি ইত্যাদির মাধ্যমে প্রশাসনে ব্যাপকহারে প্রীতি হয়। বাইবেলের ২৩ অধ্যায়ে বলা হয়েছে তোমরা ঘুষ গ্রহণ করবে না পূর্যের রসরসে দৃষ্টতা অন্ধকারে পর্যবসিত হয়।

 

রাজনৈতিক ক্ষেত্রে

অথচ রাজনৈতিক ক্ষেত্রেই বর্তমানে ব্যাপকহারে দুর্নীতি চলছে। রাজনৈতিক অঙ্গীকারের ব্যাখেলাপ ক্ষমতায় থাকা কালে নিরাপদ ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে সুযোগ সুবিধা অন্যায়ভাবে নিজের আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবদের মধ্যে বিলিয়ে দেয়। কবির ভাষায়-

দের বাগান সবার মনে আছে
ফুটাতে সবাই নাহি পারে।

 

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে

ব্যবসায়ী মহল কর্তৃক মজুদদারির মাধ্যমে বাজার প্রব্যের কৃত্রিম সঙ্কট করা কর শুষ্ক খাজনা নেওয়াসহ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে গ্রাস করে ফেলেছে। পবিত্র কুরখানে বলা হয়েছে -কোন ব্যক্তিকে অন্যের অর্থ অন্যায়ভাবে গ্রহণ করার প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।

 

শিক্ষা ক্ষেত্রে

পরীক্ষায় ব্যাপক নকল প্রবণতা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বিভিন্ন অজুহাতে অর্থ আদায় ক্লাসে ভালোভাবে না পড়িয়ে প্রাইভেট টিউশানি নিয়মিত ক্লাসে না আসা।

 

সরকারি সেবা সংস্থার দুর্নীতি

স্যাকারি সেবা সখাগুলোর দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে পড়েছে। ঘূর্য ছাড়া এখন আর কোন কাজই করা যায় না। এ প্রসঙ্গে ত্রিপিটকে বলা হয়েছে- খুব গ্রহণ করো না কাউকে ঠকাবে না অথবা অসৎ কাজ করবে না।

 

বেসরকারি খাতে

শুধু সরকারি খাতে নয় বেসরকারি খাতেও দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়ছে। শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার নামে সরকারি সুবিধা ও বাব ঋণ নিয়ে সে টাকা অন্যভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। কর ও শুল্ক ফাঁকি শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারী ইত্যাদি এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায়। দুর্নীতি ও বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতি। সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন খাতে ব্যাপক দুর্নীতি হয়ে থাকে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী জাতীয় রাজা বোর্ডের মতে বাংলাদেশে অবৈধ আয়ের পরিমাণ মোট জাতীয় আয়ের শতকরা ৩০-৩৪ ভাগ হবে।

 

জাতীয় উন্নয়নে দুর্নীতির প্রভাব

জাতীয় উন্নয়নে দুর্নীতির প্রভাব নিম্নে দেওয়া হলো-

 

দুর্নীতি ও জাতীয় উন্নয়ন

দুর্নীতির ফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সরকারি খাতে জাতীয় উন্নয়ন প্রক্রিয়া। যে অর্থ উন্নয়নমূলক কর্মসূচি ও উৎপাদনশীল কাজে ব্যয় করার কথা কিন্তু তা চলে যায় দুর্নীতিবাজ আমলা ও শাসকগোষ্ঠীর পকেটে।

 

দুর্নীতি ও প্রবৃদ্ধি

দুর্নীতি বাংলাদেশের উচ্চতর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে অন্যতম অন্তরায়। দেশীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাত যেমন কৃষি, শিল্প, ব্যাংকসহ অন্যান্য আর্থিক খাতের দুর্নীতি দেশজ উৎপাদনকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করে থাকে।

 

দুর্নীতি ও দারিদ্র্য বিমোচন

দুর্নীতি ও দারিদ্র্য আমাদের জাতীয় জীবনে ২টি প্রধান সমস্যা। দারিদ্র্য অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতিকে সহায়তা করছে। আবার দুর্নীতির ফলে আমরা দারিদ্র্যের বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে আসতে পারছি না।

 

দুর্নীতি ও মানব উন্নয়ন

জাতীয় উন্নয়নের জন্য মানব উন্নয়ন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। অথচ মানব উন্নয়নে বাংলাদেশের অবস্থান এখনও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। এজন্য মূলত দুর্নীতিই দায়ী।

 

দুর্নীতির কারণ সমূহ

ঐতিহাসিক কারণ

বাংলাদেশে ঐতিহাসিকভাবে দুর্নীতি চলে আসছে। ঔপনেবিশিক শাসনামলে বিদেশি শাসক শোষগুলো মার্থেরক্ষার জন্য এ দেশে এক শ্রেণীর দুর্নীতিবাজ আমলার মাধ্যমে জনগণকে শোষণ করত। ১৯৫৮ সালে পাকিস্তানে সামরিক শাসন জারি হলে দুর্নীতি রাজনৈতিক ক্ষেত্রে প্রসারিত হয়।

 

আর্থিক অসচ্ছলতা

আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে বিভিন্ন পেশাজীবী ও শ্রমজীবী মানুষ সমাজে সামাজিক উপায়ে মৌল চাহিলা পূরণে ব্যর্থ হয় এতে সমাজে দুর্নীতির প্রসার ঘটে।

 

রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা

বাংলাদেশে দুর্নীতি বিস্তারে বিরাজমান রাজনৈতিক ও সামাজিক অস্থিরতা বিশেষভাবে দায়ী। রাজনৈতিক ক্ষমতা বাহের জন্য নির্বাচনে বিপুল পরিমাণে অর্থ অবৈধভাবে ব্যয় করে ভোটারদের প্রভাবিত করা হয়। এভাবে দুর্নীতির বিস্তার ঘটে। উচ্চাভিলাষ জীবনের মোহ উচ্চাভিলাষে গা ভাসানো রাতারাতি অর্থ সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠা লাভে তীব্র আকাঙ্ক্ষা এদেশে দুর্নীতি বিকাশের অন্যতম প্রধান কারণ।

 

বেকারত্ব

বাংলাদেশে ভয়াবহ বেকারত্ব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে সমাজে দুর্নীতি প্রসারিত হচ্ছে। আর এর ফলে দুর্নীতি ক্রমশ বাড়তেই থাকে।

 

অপর্যাপ্ত বেতন কাঠামো

আমাদের দেশে কর্মজীবী মানুষদের বেতন ও পারিশ্রমিক চাহিদার তুলনায় একেবারেই অপর্যাপ্ত। ফলে তারা তাদের বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণের জন্য দুধ বা বিকল্প কোন উপায়ে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা করে। এতে দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়।

 

জবাবদিহিতা ও সচ্ছলতার অভাব

সরকারি প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের আয় ও ব্যয়ের মধ্যকার সমাজস্যহীনতা সম্পর্কে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কঠোর জবাবদিহিতার ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এটা না থাকার ফলে দুর্নীতি উৎসাহিত হয়।

 

দুর্নীতি দমনে বলিষ্ট পদক্ষেপের অভাব

প্রচলিত আইন কানুনে অনেক ফাঁক ফোকার থাকায় শাহিত বিধানের জন্য প্রশাসনের পদক্ষেপ গ্রহণ পদ্ধতি অত্যন্ত শিথিল ও দুর্বল।

 

অর্থের মূল্যস্তর বৃদ্ধি

অর্থের মূলাস্তর বৃদ্ধি বা মুদ্রাস্ফীতি ঘটলে সমাজে ব্যবসায়ী শ্রেণী দুর্নীতি করার সুযোগ পায়।

 

আইনের স্পষ্টতা

অনেক সময় প্রচলিত মাইনের স্পষ্টতা বা আইনের ফাঁকে সুযোগ নিয়ে দুর্নীতি করা হয়।

 

আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অনৈতিকতা

আমাদের দেশে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এক শ্রেণীর সদস্য বিলাস বাসন জীবন যাপনের লক্ষে বিভিন্ন ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িনা পড়ে। ফলে যে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়তে বাধ্য হয়।

 

দায়িত্বে অবহেলা

সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলার কারণে দুর্নীতি অনেকাংশে বৃদ্ধি পায়। এমনকি দুর্নীতি পাকাপোক্ত রূপ পরিগ্রহ করে।

 

আয়-ব্যয়ের অসামঞ্জস্যতা

আয় ব্যয়ের ঈসামঞ্জস্যতার কারণেই অনেকেই জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ করতে পারে না। এ ফারণেই অনেকেই দুর্নীতির দিকে ঝুঁকে পড়ে।

 

তথ্য অধিকারের অভাব

সরকারের প্রতিটি কর্মকান্ড ও সিদ্ধান্তের তথ্য জানবার অধিকার জনগণের রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে সরকারি তথ্য প্রকাশ করা হয় না। ফলে দুর্নীতি চলে অবাধে।

 

দুর্নীতি প্রতিরোধের উপায়

দুর্নীতি প্রতিরোধের উপায় নিম্নে আলোচনা করা হলো-

 

স্বাধীন দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন

বর্তমানে দুর্নীতি দমনে নিয়োজিত সরকারের বিশেষ বিভাগ দুর্নীতি দমন ব্যুরোকে পুর্নঠি করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে যুক্ত করে একটি স্বাধীন ও শক্তিশালী দুর্নীতি দমন কমিশন গঠন করতে হবে।

 

ন্যায়পালের পদ বাস্তবায়ন

আমাদের দেশে দুর্নীতি দমন ও প্রতিরোধের জন্য ন্যায়পালের পদ বাস্তবায়ন করা আবশ্যক।মন্ত্রী থেকে সাধারণ মানুষের অভিযোগ তদন্ত ও বিচারের জন্য এর কোন বিকল্প নেই। এতে দুর্নীতি প্রতিরোধ হবে।

 

স্বাধীন নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা

দুর্নীতি প্রতিরোধে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা অতি জরুরি। বিচার বিভাগ প্রশাসন থেকে পৃথক হলে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগের ফলে দুর্নীতি অনেকাংশে হ্রাস পাবে।

 

আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা

দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা পেলে দুর্নীতি হ্রাস পাবে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। এই বোধে সবাই উজ্জীবিত হলে এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ হলেই মানুষ দুর্নীতি পরিহার করবে।

 

সরকারি নিরীক্ষণ কমিটি গঠন

সরকারি নিরীক্ষা কমিটি যথাযথভাবে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করলে দুর্নীতি বহুলাংশে কমে আসবে।

 

পর্যাপ্ত বেতন ও পারিশ্রমিক প্রদান

বাজার মূল্যের সাথে সমন্বয় করে সুষম বেতন কাঠামো এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত পারিশ্রমিক নির্ধারণ করলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব। –

 

রাজনৈতিক সদিচ্ছা

রাজনৈতিক সদিচ্ছা বা অঙ্গীকারের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।

 

কার্যকর সংসদ

কার্যকর সংসদের মাধ্যমে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়। বিশেষ করে সংসদ সরকারি হিসাব সম্পর্কিত কমিটি দুর্নীতি দমনে ও সুশান প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।

 

প্রশাসনে সচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত

প্রশাসনে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা নিশ্চিত হলে দুর্নীতি হ্রাস পায়। এবং কর্মদক্ষতা ও সততাকে উৎসাহিত করে এর ফলে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।

 

দুর্নীতি বিরোধী সামাজিক আন্দোলন সৃষ্টি

দুর্নীতির বিরুদ্ধে গণ সচেতনতা সৃষ্টি করে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুললে দুর্নীতিরোধ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সহজ হয়।

 

গণমাধ্যমের কার্যকর ভূমিকা পালন

সমাজে দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য অনুসন্ধান এবং তা জনগণের সামনে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে গণমাধ্যম কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। এভাবে দুর্নীতি প্রতিরোধ সম্ভব।

 

উপসংহার

উপরের আলোচনার প্রেক্ষিতে বলা যায় বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক জীবনের সর্বাংশে আজ দুর্নীতির করলে নিমজ্জিত। দুর্নীতির কালো হাত সমাজ জীবনের সকল দিককে গ্রাস করেছে। দুর্নীতি বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়নের সবচেয়ে বড় অন্তরায়। তাই সবত্রই উচ্চারিত হোক আমাদের শ্লোগান ঘুষ নেব না ঘুম দেব না কাউকে দুর্নীতি করতে দেব না।

 

বাজারজাতকরণের প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য আলোচনা কর

বাজারজাতকরণের প্রকৃতি আলোচনা কর।

অথবা, বাজারজাতকরণের বৈশিষ্ট্যসমূহ বর্ণনা কর।

 

বাজারজাতকরণ হলো একটি সামগ্রিক ধারণা। যেসব অর্থনৈতিক কার্যাবলির মাধ্যমে উৎপাদনকারী কিংবা বিক্রয়কারীর কাছ থেকে ক্রেতার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য দ্রব্য ও সেবা হস্তান্তরিত হয় তাই হলো বাজারজাতকরণ। বিনিময় প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের চাহিদা ও অভাব মেটানোর কাজে ব্যাপৃত থাকে বাজারজাতকরণ। বাজার সংক্রান্ত সংঘটিত মানবিক কার্যাবলি সূচিত হয় বাজারজাতকরণের মাধ্যমে। তাই বিভিন্ন লেখক কর্তৃক প্রদত্ত বাজারজাতকরণের সংজ্ঞা এর মাধ্যমে যে সকল বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায় তা নিম্নে বর্ণনা করা হলো-

 

১. অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণ হলো এক অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া। পণ্য ও সেবার বিনিময় এবং সে সাথে স্থানগত, সময়গত ও মালিকানাগত উপযোগিতা ইত্যাদি বিভিন্ন উপযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্য সাধিত হয়। এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পণ্য ও সেবা উৎপাদনকারীর কাছ থেকে ভোগকারীর কাছে পৌঁছায়।

 

২. সামাজিক প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণের মাধ্যমে সমাজের মানুষের কল্যাণ সাধিত হয়। এর মাধ্যমে সমাজের মানুষের প্রয়োজন ও অভাবের সন্তুষ্টি বিধান করা হয়। এজন্য Philip Kotler and Gary Armstorng বাজারজাতকরণকে একটি সামাজিক প্রক্রিয়া হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন।

 

৩. আইনসম্মত চিন্তাধারা

বাজারজাতকরণ হলো এক ব্যাপক কর্মপ্রক্রিয়া। এ প্রক্রিয়া বিভিন্ন স্তরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে পরিসমাপ্তি লাভ করে। প্রতিটি স্তরে প্রতিটি কাজের পেছনে সংশ্লিষ্ট আইনের স্বীকৃতি ও সমর্থন আছে। যেমন : পণ্য ক্রয়– বিক্রয়ের ক্ষেত্রে পণ্য বিক্রয় আইনের বিভিন্ন ধারা প্রযোজ্য ।

 

৪. গতিশীল প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণ হলো এক গতিশীল প্রক্রিয়া। গতিশীল প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বাজারজাতকরণের কার্যকলাপ সম্পাদিত হয়। ভোগকারীদের জীবনযাত্রার মান, রুচি, পছন্দ সবই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে পরিবর্তনশীল। সেজন্য বাজারজাতকরণকে একটি গতিশীল প্রক্রিয়া হিসেবে আখ্যা দেয়া যেতে পারে।

 

৫. ক্রেতার সন্তুষ্টি

বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকার অন্যতম উপায় হলো ক্রেতার সন্তুষ্টি। ক্রেতাদের সন্তুষ্টির মধ্যেই প্রতিষ্ঠানের ভবিষৎ নিহিত। কারণ একজন সন্তুষ্ট ক্রেতা শুধু নিজেই পণ্য কিনে না, অপরকেও পণ্য কিনতে উৎসাহিত করে।

 

৬. সুনির্দিষ্ট চিন্তাধারা

বাজারজাতকরণ হলো এক রকমের চিন্তাধারা। এ চিন্তাধারার মাধ্যমেই কারবারিক বিভিন্ন মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়। বিভিন্ন সময়ে কারবারিদের মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন বাজারজাতকরণ তত্ত্বের উদ্ভব হয়েছে।

 

৭. বিনিময় প্রক্রিয়া

বিনিময়ের মাধ্যমে মানুষ প্রয়োজন এবং অভাব পূরণের সিদ্ধান্ত নেয়, এজন্য Philip Kotler And Gary Armstrong বাজারজাতকরণকে বিনিময় প্রক্রিয়া হিসাবে অভিহিত করেছেন।

 

৮. চাহিদার পরিতৃপ্তি

বাজারজাতকরণের অন্যতম মূল লক্ষই হলো উপযুক্ত পণ্য সরবরাহের মাধ্যমে ভোগকারীর চাহিদা মেটানো। বাজারজাতকরণ সংশ্লিষ্ট পণ্য ও সেবার বিভিন্ন ধরনের উপযোগিতা সৃষ্টির মাধ্যমে সেগুলোকে ভোগকারীর চাহিদা মেটানোর উপযোগী করে তোলে। কাজেই ভোগকারীর চাহিদার যথার্থ পরিতৃপ্তি সাধনই হলো বাজারজাতকরণ প্রক্রিয়ার অন্যতম মৌলিক বৈশিষ্ট্য।

 

৯. সমন্বিত প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণকে একটি সমন্বয়কারী প্রক্রিয়া হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। ভোগকারীর চাহিদার সাথে কারবারের প্রাপ্তব্য সম্পদ ও পরিবেশের সীমাবদ্ধতার মধ্যে সমন্বয়সাধন করতে হয়। পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকার দরুন উৎপাদন ব্যাহত হতে পারে। কাজেই বাজারজাতকরণের কাজে সাফল্য পেতে হলে এদের মধ্যে সামঞ্জস্যবিধান করা ছাড়া কোন বিকল্প নেই।

 

১০. উদ্দেশ্য অর্জনের প্রক্রিয়া

বাজারজাতকরণের মাধ্যমে উৎপাদন পণ্য বিক্রয় করে প্রতিষ্ঠান যেমন মুনাফার্জন করতে পারে তেমনি ভোক্তারা পণ্য ভোগ বা ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেদের সন্তুষ্টি বিধান করতে পারে। এভাবে বাজারজাতকরণ উভয়পক্ষের উদ্দেশ্য অর্জনে সহায়তা করে।

 

পরিশেষে বলা যায় যে, বাজারজাতকরণের উপরোক্ত বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এসব বৈশিষ্ট্য বাজারজাতকরণকে অন্যান্য বিষয় থেকে স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপণ করেছে।

বাজারজাতকরণের সংজ্ঞা দাও / বাজারজাতকরণ বলতে কি বুঝ?

বাজারজাতকরণের সংজ্ঞা দাও।

অথবা, বাজারজাতকরণ বলতে কি বুঝ?

 

ভূমিকা

প্রাচীন ল্যাটিন শব্দ ‘Marcatus’ হতে ইংরেজি ‘Market’ শব্দটি উৎপত্তি। আর ‘Market’ শব্দ হতে Marketing শব্দটি এসেছে যার অর্থ বাজারজাতকরণ ।

 

বাজারজাতকরণের সংজ্ঞা

ভোক্তার প্রয়োজন ও অভাবের সন্তুষ্টি বিধানের মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত বিনিময় সম্পর্কিত সকল মানবীয় কার্যাবলির সমষ্টিকে বাজারজাতকরণ বলে। বাজারজাতকরণ সম্পর্কে বিভিন্ন লেখকের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সংজ্ঞা তুলে ধরা হলো :

 

বিখ্যাত লেখক Philip Kotler and Gary Armstrong- এর মতে,

বাজারজাতকরণ হচ্ছে একটি সামাজিক ও ব্যবস্থাপকীয় সংক্রান্ত প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে ব্যক্তিবর্গ এবং দল অন্যদের সাথে পণ্য ও ভ্যালু সৃষ্টি ও বিনিময়ের মাধ্যমে তাদের প্রয়োজন ও অভাব পূরণ করে থাকে ।

 

অধ্যাপক Pride And Ferrell বলেন,

গতিশীল পরিবেশ কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবা ও ধারণা সৃষ্টি, বণ্টন, প্রসার ও মূল্য নির্ধারণের মাধ্যমে সন্তোষজনক বিনিময় সম্পর্ক ত্বরান্বিত করাকে বাজারজাতকরণ বলে।

 

William J. Stanton এর মতে,

Marketing is a total system of business activities designed to plan, price promote and distribute want satisfying products to target markets to achieve organisational objectives.

 

American Marketing Association এর সংজ্ঞায় বলা হয়,

বাজারজাতকরণ হলো সেসব ব্যবসায়িক কার্যাবলীর সম্পাদন যা পণ্যদ্রব্য ও সেবাসমূহকে উৎপাদকের নিকট থেকে ভোক্তা বা ব্যবহারকারীর দিক প্রবাহিত করে।

 

Etzel, Walker And Stanton-এর মতে, “চাহিদার সন্তুষ্টি দানকারী পণ্যগুলোকে লক্ষ্যস্থিত বাজারে পরিণত করার সাংগঠনিক উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য তাদের পরিকল্পনা, মূল্য, প্রসার ও বণ্টনের সামগ্রিক ব্যবসায়িক কার্যক্রম হচ্ছে বাজারজাতকরণ।

 

উপসংহার

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে, বাজারজাতকরণ শুধুমাত্র ক্রয় বিক্রয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; বরং ক্রয়-বিক্রয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কার্যাবলি ও বাজারজাতকরণের আওতাভুক্ত অর্থাৎ উৎপাদন হতে চূড়ান্ত ভোগ পর্যন্ত সকল ব্যবসায়িক কার্যাবলি বাজারজাতকরণের আওতাভুক্ত।

রচনা: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসিক প্রেক্ষাপট [24 Point] – PDF

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসিক প্রেক্ষাপট

ভূমিকা

বাংলাদেশ আজ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। কিন্তু এই স্বাধীনতা পেতে বাঙালিকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। টানা নয় মাস রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বাঙালি পায় তার কাঙ্খিত স্বাধীনতা। এই যুদ্ধ ছিল বাঙালির মুক্তির পূর্বশর্ত বাঙালির স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ ৭ কোটি মানুষের অধিকার রক্ষার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে রক্ত দিয়ে, জীবন দিয়ে বাঙালি ছিনিয়ে এনেছিল স্বাধীনতা। ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে ও লাখো বীরাঙ্গনার সম্ভ্রম হারানোর বিনিময়ে ১৯৭১ সালে উদিত হয় স্বাধীনতার লাল সূর্য। এ দেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিকামী মানুষ হারিয়েছে অনেক কিছু। সর্বস্ব হারিয়েও তারা অর্জন করেছিল স্বাধীন সার্বভৌম স্বপ্নের একটি বাংলাদেশ।

 

প্রেক্ষাপট

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর ভারত ও পাকিস্তান নামে দুইটি রাষ্ট্রের জন্ম হয়। পাকিস্তানের দুইটি অংশ ছিল যার নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তান। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে যেমন ছিল দূরত্বের ফারাক তেমনি অধিকারের দিক থেকেও ছিল দুই রাষ্ট্রের মধ্যে অনেক তফাৎ। তৎকালীন পাকিস্তান তথা বর্তমানের বাংলাদেশের মানুষের উপর প্রথম থেকেই পাকিস্তানিরা অত্যাচারের স্টিম রোলা চালাতে থাকে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হতে থাকে সম্পদ। পূর্ব বাংলায় দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ে শুরু হয় বৈষম্য। তাছাড়া বাঙালির নানান অধিকার থেকেও তারা বঞ্চিত হতে থাকে। ফলে সারা দেশে এক বিরাট বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় যা পরবর্তিতে আন্দোলনে রূপ নেয়।

 

বাঙালি জাতীয়তাবাদের উন্মেষ

বাঙালির জাতীয়তাবাদের উন্মেষ ঘটে ৫২ এর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্ণর উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রিভাষা ঘোষণা করলে রাজপথে নামে ছাত্র জনতা। তখন তাদের উপর গুলি চালায় পুলিশ। শহিদ হয় সালাম বরকত রফিক জব্বার শফিকসহ নাম না জানা অনেকে। এর মধ্য দিয়ে প্রথম অধিকারের আঘাত আনে তারা ভাষার উপর। এরপর ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে তারা আমাদেরকে ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানায়। এরপর ১৯৬৬ এর ছয় দফা ও ১৯৬৯ এর গণঅভূত্থানের মধ্য দিয়ে বাঙালি বুঝতে পারে যে যুদ্ধ ছাড়া এই দেশে বাঙালিরা তাদের অধিকার পাবে না। তাই তখন থেকেই মানুষের মনে ক্ষোভ জমতে থাকে এবং মনে মনে তারা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নিতে থাকে।

 

স্বাধীনতার ডাক

১৯৬৯ সালের গণঅভূত্থানের পর থেকেই বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন এদেশকে স্বাধীন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। এদেশের মানুষের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনতে হবে। তাই ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে লাখো জনতার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতার ডাক দেন। এই ভাষণ ৭ই মার্চের ঐতিহাসির ভাষণ নামে পরিচিত। এই ভাষণে বঙ্গবন্ধু সাধারণ জনগণকে যা কিছু আছে তা নিয়েই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার আদেশ দেন। সেই ভাষণই ছিল বাঙালির দেশ স্বাধীন করার মূল প্রেরণা। সেই ভাষণে ছিল যুদ্ধের সকল দিকনির্দেশনা। তিনি বলেন-

রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব
এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম

 

২৫শে মার্চের কালরাত্রি

১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণের পর জনগণের মধ্যে দেখা দেয় স্বাধিকার চেতনা। সকলে সংগ্রামী মনোভাব দেখাতে শুরু করে। তখন পাকিস্তানিরা বাঙালিকে দমাতে নতুন পরিকল্পনা করে। ক্ষমতা হস্তান্তরের আশ্বাস দিয়ে জেনারেল ইয়াহিয়া খান ২৫শে মার্চ ঢাকা ত্যাগ করেন এবং পশ্চিম পাকিস্তান থেকে আসে অস্ত্রধারী ট্যাঙ্ক ও গোলাবারুদ। ২৫ শে মার্চ রাতে ঘুমন্ত বাঙালির উপর পাকিস্তানি বাহিনী ঝাপিয়ে পড়ে। সেদিন এক রাতে ঢাকায় প্রায় ২০ হাজার মানুষকে নিরীহভাবে হত্যা করা হয়। অবস্থা বুঝতে পেরে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ডাক দেন। সেই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। যুদ্ধ শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তাকে সেখানেই বন্দি করে রাখা হয়।

 

সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ

২৫শে মার্চের সেই নারকীয় হত্যার পরই বাঙালি বঙ্গবন্ধুর ভাষণের পূর্ণ মর্ম বুঝতে পারে। তাই ২৬ শে মার্চ থেকেই সকল বাঙালি যে যা পারে তাই নিয়েই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছে। তাদের মধ্যে সর্বপ্রথম ঝাপিয়ে পড়ে বাংলাদেশের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের বীর সৈনিকেরা। তাছাড়া তৎকালীন বাঙালী পুলিশ ইপিআর আনসার বাহিনীরাও একযোগে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। অনেকে সাহসী বাঙালী তরুণেরা দেশের অভ্যন্তরে ও বাইরে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে থাকে। তাদের সাথে যোগ দেয় যোগ দেয় স্কুল কলেজের ছাত্র ও দিনমজুর কৃষক ও শ্রমিকেরা।

 

মুক্তিবাহিনী ও মুক্তিযুদ্ধ

১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ যুদ্ধ শুরু হবার পর জেনারেল এম এ জি ওসমানীর নেতৃত্বে গড়ে উঠে মুক্তিবাহিনী। প্রথমে এর সংখ্যা ছিল ১৩০০০। তারপর দলে দলে বাংলার সাহসী তরুণেরা অংশগ্রহণ করতে থাকে। জেনারেল এম এ জি ওসমানীকে মুক্তিবাহিনীর কমান্ডার চিফ ইন চার্জ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তার নেতৃত্বে গঠন করা হয় নিয়মিত বাহিনী ও অনিয়মিত গেরিলা বাহিনী। নিয়মিত বাহিনীর অধীনে সারা দেশে তিনটি ব্রিগেড ফোর্স গঠন করা হয় যা কে ফোর্স জেড ফোর্স ও এস ফোর্স নামে পরিচিত। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকে পরিচালনা করার জন্য দেশেকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়। মে মাস পর্যন্ত নিয়মিত বাহিনী সাফল্যের সাথে যুদ্ধ করে যায়। অতঃপর জুন মাসে অনিয়মিত গেরিলা বাহিনী সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১০ নং সেক্টরের অধীনে থাকা নৌ কমান্ডো বাহিনীও অত্যন্ত বীরত্ব ও কৃতিত্বের সাথে যুদ্ধ করে।

 

মুজিবনগর সরকার গঠন

১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার জন্য একটি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার গঠণ করা হয় যা মুজিবনগর সরকার নামে পরিচিত। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার বৈদ্যনাথ ইউনিয়নের আমবাগানে এই সরকার শপথ গ্রহণ করে। এই দিন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র চূড়ান্তভাবে গৃহীত হয়। বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাপত্র অনুযায়ী সেই সরকার কাজ করতে থাকে। পরবর্তীতে মেহেরপুর জেলার ঐ জায়গাটিকে মুজিবনগর নামে নামকরণ করা হয়।

 

মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। মুজিবনগর সরকারের প্রধান কাজই ছিল বাংলাদেশকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করা। মুজিবনগর সরকারের দেশে ও দেশের বাইরে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তোলে। মুজিবনগর সরকার মুক্তিবাহিনীর সকল মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠিত করে তাদেরকে যথাযথ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করে। তাছাড়া মুক্তিযুদ্ধকালীন মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ ও বিদেশের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখতে এ সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মুক্তিযুদ্ধের মতো বিরূপ পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মবিশ্বাস ও মনোবল বজায় রাখা ছিল অনেক বড় চ্যালেঞ্জ যা এই সরকার খুব ভালোভাবে পূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছিল।

 

মুক্তিযুদ্ধে সাধারণ জনগণ ও পেশাজীবীদের ভূমিকা

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রধান চালিকাশক্তি ছিল বাংলার সাধারণ জনগণ। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে তারা একযোগে ঝাপিয়ে পড়ে মুক্তির সংগ্রামে। দেশের ছাত্র জনতা পুলিশ ইপিআর কৃষক শ্রমিক পেশাজীবী সকলেই মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণ করেছিল। যুদ্ধ করতে গিয়ে অনেকে দিয়েছে নিজেদের প্রাণ আবার অনেকে পঙ্গু অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের এই ঋণ কোনোদিনও শোধ করা যাবে না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সর্বস্তরের সকল মানুষ অংশগ্রহণ করেছিল। তাই একে গনযুদ্ধ বা জনযুদ্ধও বলা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল মুক্তিযোদ্ধারাই ছিলেন আসল দেশপ্রেমিক। তারা ছিলেন অসীম সাহসী, দেশের বীর সন্তান ও আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ যোদ্ধা। নিজেদের জানের মায়া ত্যাগ করে তারা দেশকে স্বাধীন করেছিল। তাদের এই ত্যাগ জাতি চিরকাল স্মরণে রাখবে।

 

মুক্তিযুদ্ধে রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা

বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নেতৃত্বদানকারী দলটির নাম হলো আওয়ামী লীগ। মূলত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বই মুক্তিযুদ্ধের গতি প্রকৃতি নির্ধারণ করে। তারা ১৯৭০ সালে নির্বাচনে জয়লাভের মধ্য দিয়ে নিরঙ্কুশ বিজয় লাভ করে দেশের মানুষের মধ্যে স্বাধিকার চেতনার জাগরণ ঘটায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অনেকগুলো রাজনৈতিক দল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:ন্যাপ(ভাসানী) ন্যাপ(মোজাফফর) কমিউনিস্ট পার্টি জাতীয় কংগ্রেসস ইত্যাদি। আবার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কিছু দল পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করে। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: রাজাকার আলবদর আল শামস ইত্যাদি। তারা হত্যা লুটতরাজ অগ্নিসংযোগ সহ নানান ধরণের মানবতাবিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত ছিল।

 

মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সেখানে ছাত্রদের ভূমিকাই ছিল সবচেয়ে বেশি। গোটা জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছিল
স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সেসব ছাত্র জনতা। শুধু মুক্তিযুদ্ধ নয়। পাকিস্তানি আমলে প্রতিটি আন্দোলনের মূল আহবায়ক ছিল ছাত্ররাই। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে তারাই নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করেছিল। এরপর ১৯৫৪ ১৯৬৬ ১৯৬৯ ১৯৭০ এর প্রতিটি আন্দোলনেই তারা রেখেছিল সক্রিয় ভূমিকা। মুক্তিযুদ্ধে ছাত্র জনতা ভ্যানগার্ড নামে অধিক পরিচিত ছিল। ১৯৭১ সালে যুদ্ধ শুরু হলে দেশের আনাচে কানাচে থেকে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা একযোগে ঝাপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে। অনেক শিক্ষার্থীরা বাবা-মা কে লুকিয়ে রাতের অন্ধকারে যোগ দেয় মুক্তিবাহিনীর সাথে। তারা চলে যায় সিমান্ত পেরিয়ে পাশের দেশ ভারতে। সেখানে গিয়ে তারা যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ে ও গেরিলা আক্রমণের মাধ্যমে পাকিস্তানি বাহিনীর অবস্থা নাজেহাল করে তোলে।

 

মুক্তিযুদ্ধে নারীর ভূমিকা

মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রামে নারীরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। অনেক নারীরাই প্রশিক্ষণ নিয়ে সরাসরি রণাঙ্গনে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন নিজের জীবন বাজি রেখে। নারীরা কখনো যুদ্ধক্ষেত্রে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে আবার কখনো যুদ্ধেক্ষেত্রের আড়ালে। তারা সবসময় মুক্তিযোদ্ধাদের মনে সাহস জুগিয়েছেন প্রেরণা দিয়েছেন অচেনা অজানা অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের সেবা সুশ্রুষা করেছেন। নিজেরা না খেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাবার রান্না করেছেন। অনাহারী অর্ধাহারী ক্ষুধার্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তারা কখনো সেবা দিয়েছেন নিজের বোনের মতো কখনো মায়ের মতো। চরম দুঃসময়ে পাকিস্তানিদের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের ঘরে মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য নারীরা তেমন কোনো বিশেষ স্বীকৃতি পাননি। অনেক নারীযোদ্ধারাই হারিয়ে গেছেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যমগুলোর ভূমিকা

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকালের মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করতে ও অনুপ্রেরণা জোগাতে এবং জনগণের মনে আধার সঞ্চার করতে ও দেশে বিদেশে জনমত সৃষ্টিতে দেশ বিদেশ থেকে প্রকাশিত হয় অসংখ্য নিয়মিত এবং অনিয়মিত পত্রিকা। এসব পত্রিকায় তুলে ধরা হয়েছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বাংলার বীরসেনাদের সাহসীকতার চিত্র এবং পাকবাহিনীর ধ্বংসলীলার দৃশ্য। পত্রিকাগুলোতে এ সম্পর্কে লেখা হতো বিভিন্ন প্রবন্ধ ছড়া রচনা কবিতা গল্প গান কার্টুন ইত্যাদি। সেই সময়ে লেখা সেই পত্রিকাগুলো আজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের দলিল হিসেবে কাজ করছে। পত্রিকাসহ অন্যান্য গণমাধ্যমগুলোতেও বাঙালির বীরত্ব সাহসিকতা পাকিস্তানিদের হত্যাযজ্ঞ গণহত্যা শরণার্থী শিবিরের বর্ণনা গুরুত্বের সাথে স্থান পেয়েছিল।

 

মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাঙালিদের অবদান

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসে অবস্থানকারী বাঙালিরাও বিভিন্নভাবে অবদান রেখেছেন। মূলত আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে তারা সরবরাহকারী বাহিনীর ভূমিকায় কাজ করছেন। তারা বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে সমর্থন আদায়ের জন্য বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টে ছুটে গিয়েছেন। এছাড়াও তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার নিকট প্রতিনিধি প্রেরণ করেছে। পাকিস্তানকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ না করার জন্য বিভিন্ন প্রবাসী সরকারের নিকট আবেদন করেছেন। তাছাড়া বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের ক্ষেত্রেও তারা বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

 

মুক্তিযুদ্ধে শিল্পী সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা

বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চালিকাশক্তি ছিল জনগণ। তবে দেশের শিল্পী সাহিত্যিকরাও প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধের সাথে জড়িত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তাদের ভূমিকাও ছিল প্রশংসনীয়।মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশের শিল্পী সাহিত্যিকদের পত্র পত্রিকায় লেখা বেতার কেন্দ্রের খবর পাঠ ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান পরিচালনা বিভিন্ন ধরণের দেশাত্মবোধক গান ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গান কবিতা নাটক কথিকা ইত্যাদি মুক্তিযুদ্ধের মতো কঠিন পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবল বজায় রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। মুক্তিযুদ্ধের সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান চরমপত্র ও জল্লাদের দরবার মুক্তিযোদ্ধাদের অনেক অনুপ্রাণিত করেছিল। এককথায় দেশের সকল বুদ্ধিজীবীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করেছে এবং জনগণকে শত্রুর নিকট দুর্দমনীয় করে তুলেছে।

 

মুক্তিযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক বিশ্ব

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের চিত্র বিশ্বের সকল গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশ হতে থাকলে সকল রাষ্ট্র বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড়িয়ে যায়। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত তখন প্রায় এক কোটি শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীও বাংলাদেশের পক্ষে জনমত তৈরি করতে এগিয়ে আসেন। যুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ভারতের বাহিনীরাও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল। যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন বাংলাদেশকে সমর্থন দিলেও মার্কিন প্রশাসন বাংলাদেশের বিরোধিতা করে। কিন্তু সেই দেশের সাধারণ জনগণের তোপের মুখে পড়ে মার্কিন রাষ্ট্র পাকিস্তানকে গোলাবারুদ সরবরাহ বন্ধ করতে বাধ্য হয়। বাংলাদেশকে সাহায্য করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গায়ক জর্জ হ্যারিসন ও ভারতের রভি শংকর কনসার্ট ফর বাংলাদেশ এর আয়োজন করে এবং প্রাপ্ত টাকা বাংলাদেশকে দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করে।

 

মুক্তিযুদ্ধে যৌথ বাহিনী

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ২১ নভেম্বর ভারতের কমান্ডার জগজিৎ সিং অরোরার নেতৃত্বে গঠিত হয় বাংলাদেশ ভারত যৌথ কমান্ডো। ভারতীয় সেই বাহিনী মিত্রবাহিনী নাম নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীকে অচল করে দেয়। ভারতীয় বিমানবাহিনী গভীর রাতে বাংলাদেশের সকল রুটে প্রবেশ করে এবং পাকিস্তানের প্রতিটি বিমানঘাটিতে হামলা চালায়। কুর্মিটোলা বিমানঘাটিতে ৫০ টন বোমা ফেলা হয়। তাদের আক্রমণে পাকিস্তানের প্রায় এক ডজনের মতো বিমান বিদ্ধস্ত হয়। ভারতীয় বিমানবাহিনী ও বাংলাদেশের সশস্ত্র যোদ্ধাদের যৌথ আক্রমণে পাকিস্তানি সেনারা নাজেহাল হয়ে পড়ে। তখন শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত অধ্যায়। ভারতীয় যোদ্ধাদের সাথে এক হয়ে যুদ্ধ করে মুক্তিবাহিনীর মনোবল বাড়তে থাকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অনেক ভারতীয় সেনা মৃত্যুবরণ করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধ ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড

মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে যখন মুক্তিবাহিনী ও যৌথবাহিনীর আক্রমণে পাকিস্তানি বাহিনী কোণঠাসা হয়ে পড়ছিল তখন পরাজয় নিশ্চিত জেনে তারা বাঙালি জাতির সবচেয়ে বড় ক্ষতি করার পদক্ষেপ নেয়। তারা তখন ঝাপিয়ে পড়ে আমাদের দেশের সূর্যসন্তানদের উপর। আর এই কাজে তাদেরকে সাহায্য করেছিল এদেশের এদেশের দোসর রাজাকার আলবদর ও আল শামস বাহিনী। তারা রাতের অন্ধকারে এদেশের মুক্তিকামী ও মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনকারী সকল শিক্ষক চিকিৎসক ডাক্তার সাংবাদিক বুদ্ধিজীবীদের ধরে নিয়ে হত্যা করে। তাদের অনেকেরই ক্ষতবিক্ষত দেহ ঢাকার রায়ের বাজারের বধ্যভূমিতে পাওয়া যায়।

 

পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণ

মাত্র নয় মাসের যুদ্ধেই পাকিস্তানের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। পশ্চিম পাকিস্তানের সাথে তাদের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যৌথবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমনে পাকিস্তানি বাহিনী নাজেহাল হয়ে পড়ে। তার আর কোনো উপায় না পেয়ে হানাদার পাকবাহিনী ১৯৭১ সালের ১৬ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে নিঃশর্তভাবে আত্মসমর্পণ করে। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকেল ৫টা ১ মিনিটে ঢাকার রেসকোর্স ময়দান বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যৌথ কমান্ডো এর পক্ষে লে জে জগজিৎ সিং অরোরা এবং পাকিস্তানের পক্ষে লে জে নিয়াজী পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন।

 

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাঙালি জাতিকে শোষণ ও অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি প্রদান করেছে। ধর্মীয় গোঁড়ামি এবং কুসংস্কারের ঊর্ধ্বে উঠে শত বছরের বাঙালি পরিচয়কে প্রধান্য দিয়ে হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই ঐক্য দেশ গঠনে এবং এর উন্নয়নে বাঙালিজাতিকে নতুন উদ্যম প্রদান করে। দেশপ্রেম এবং জাতীয় সঙ্ঘতি একত্রে অত্যাবশ্যক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাই পরে আমাদের সব বিভেদ ভুলে দেশপ্রেমিক বাঙালি হিসেবে লাল সবুজ পতাকার তলে সমবেত করতে। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়া আজ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

 

সমাজ-বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা

বাংলাদেশের মানুষের যে স্বপ্ন আর আকাঙ্ক্ষার মানসে মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল প্রকৃতপক্ষে সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন হয়নি। স্বাধীনতার পর বারবার সরকার বদল হত্যা আর রক্তপাতের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখল দেশি ও বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী তৎপরতা রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য যুবসমাজে সৃষ্ট হতাশা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘুষ দুর্নীতি ইত্যাদি কারণ মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমাজে বাস্তবায়িত হতে দেয়নি। সত্যিকার অর্থে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠা করতে হলে প্রয়োজন দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে আন্তরিক পদক্ষেপ। এ লক্ষ্যে দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণকর শাসনব্যবস্থা যেমন প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন তেমনি প্রয়োজন মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত গৌরবগাঁথা আর আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। যে আদর্শ উদ্দেশ্য ও চেতনা নিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষ তাদের তাজা প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে ইজ্জত দিয়েছে হাজার হাজার মা বোন আমাদের সমাজ এবং জাতীয় জীবনে মুক্তিযুদ্ধের সেই আদর্শ ও চেতনাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে এটিই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত।

 

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ ও দায়িত্ববোধ

আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে সফল করতে আমাদেরকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তাই বর্তমানে এই স্বাধীন দেশের স্বাধীন মানুষদের অধিকার ও সুরক্ষার বিষয়টা বাস্তবায়ন করতে আমাদেরকে কাজ করে যেতে হবে। দেশের সকল জনগণকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। প্রতিক্রিয়াশীলদের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে যেন তারা দেশের কোনো ক্ষতি করতে না পারে। দেশের সকল দেশপ্রেমিক শিল্পপতি চাকরিজীবী ব্যবসায়ী বুদ্ধিজীবী ও সকল কর্মকার্তাদেরকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে সকল বিরোধের ঊর্ধে থেকে দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে। দেশকে একটি দারিদ্রমুক্ত সুশিক্ষিত ও উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে সকল উন্নয়ন কার্যক্রমের বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে।

 

উপসংহার

স্বাধীনতা যে মানুষের জন্মগত অধিকার বাংলাদেশের মানুষ তা রক্ত দিয়ে প্রমাণ করে দিয়েছে। ত্রিশ লক্ষ মানুষের রক্তের বিনিময়ে আমরা পেয়েছিলাম এই স্বাধীনতা। এর মাধ্যমে অবসান ঘটেছিল পাকিস্তানের প্রায় ২৪ বছরের শাসন শোষণ ও নিপীড়নের। তবে স্বাধীনতার ৪০ বছর পরেও আমরা এখনো বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলা গড়তে পারিনি। স্বাধীন জাতি হয়েও স্বাধীনতার পূর্ণ স্বাদ এখনো আমরা পাইনি। তাই সকল সংকটকে দূরে ঠেলে আমাদেরকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের নিজেরদেরকে দেশপ্রেম কর্তব্যবোধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ করতে পারলেই আমরা রক্ষা করতে পারব আমাদের স্বাধীনতাকে।

 

রচনা: দুর্গাপূজা [10 পয়েন্ট]

দুর্গাপূজা

সূচনা

হিন্দু সম্প্রদায়ের সব চেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। এ পূজা হিন্দুরা ধর্মীয় আচার ও নিয়ম মাফিক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সাথে উদযাপন করে থাকে। ধনী গরিব নির্বিশেষে হিন্দু নর নারী শিশু বৃদ্ধ সবাই নতুন সাজে সজ্জিত হয়ে দেবীকে দেখার জন্য মন্দিরে মন্দিরে গমন করে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠে সকলে। বাংলার প্রতিটি হিন্দু প্রধান এলাকায় দেখা দেয় আনন্দের কোলাহল। পত্র পত্রিকাগুলো বের করে বিশেষ সংখ্যা। মন্দিরে মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এর ঢেউ উপচে পড়ে রেডিও টেলিভিশনে। প্রকৃতি দেবী এ রমণীয় মূর্তি ধারণ করেন। দুর্গা মূলত শক্তির দেবী।

 

দুর্গাপূজা পটভূমি

হিন্দু পুরাণে কথিত আছে পুরাকালে মহারাজ সুরথ তাঁর রাজ্য হারিয়ে ফেলেন। সেই হারানো রাজ্য ফিরে পাবার উদ্দেশ্যে রাজা দুর্গা দেবীর পূজা করেন। তদবধি হিন্দুরা বসন্তকালেই দুর্গাপূজা করতেন। লংকার যুদ্ধে বিপন্ন রামচন্দ্র আবার দেবী দুর্গার অকাল বোধন করে শরৎকালে। তখন থেকেই হিন্দুরা শরৎকালে এ পূজা করে আসছে। দুর্গাপূজা বলতে হিন্দুদের শারদীয় পূজাকেই বোঝায়।

 

দুর্গাপূজা ইতিহাস

এ পূজার একটি ছোটখাট ইতিহাস রয়েছে। বলা হয়ে থাকে যে খুব প্রাচীনকালে অযোধ্যায় রামচন্দ্র লঙ্কারাজ রাবণকে বধ করার জন্য শরৎকালে অকালবোধন করে দুর্গাদেবীর বন্দনা করেছিলেন। তাই এটি শারদীয়া দুর্গোৎসব নামে বিশেষভাবে খ্যাত। আবার মহারাজ সুরথ একদা রাজ্য ফিরে পাওয়ার জন্য বসন্ত কালে দুর্গাপূজা করেন। তাই দুর্গোৎসবই আবার বাসন্তী পূজা নামে খ্যাত। অবশ্য আমাদের দেশে এবং অন্যান্য যে সব দেশে হিন্দু সম্প্রদায় বাস করেন তারা সবাই বেশির ভাগ শারদীয় উৎসবই পালন করে থাকেন। বাসন্তী পূজার প্রচলন খুব একটা নেই।

 

দুর্গাপূজা প্রতিমা বর্ণনা

দেবী সিংহ বাহনা দশভুজা। দেবীর দশ হাতে দশটি অস্ত্র থাকে। মহিষাসুর পদতলে অস্ত্রবিদ্ধ। দেবীর দক্ষিণে লক্ষ্মী এবং সিদ্ধির দেবতা গণেশ। বীণাপাণি সরস্বতী এবং সেনাপতি কার্তিক বামে। গণেশের পাশে কলাবউ মৃত্তিকা। যুদ্ধ সাজে সজ্জিতা দুর্গাদেবী সিংহ ও সাপ দ্বারা বেষ্টিত মহিষাসুর বধে উদ্যতা। দুর্গাদেবীর দশ হাতের দশ অস্ত্র দ্বারা আক্রান্ত অসুরকে তখন ভয়ংকর দেখায়। সিংহ দুর্গাদেবীর বাহন। ইঁদুর ও ময়ূর যথাক্রমে গণেশ ও কার্তিকের বাহন।

 

পূজা

প্রতিবছর শরৎকালে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয়। আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠি তিথিতে বোধন করা হয় দুর্গার। সে তিথিতে প্রসাদ বিতরণ করা হয় দরিদ্রগণকে সাহায্য দেওয়া হয় এবং উৎসবের অন্ত থাকে না। রাত্রিতে দেবীর আরতি হয় ঢাকঢোলের আওয়াজে কর্ণ বধির হয়ে পড়ে।

 

দুর্গাপূজা বিসর্জন

যথারীতি পূজা করার পর হিন্দুরা তাদের দেবীকে দশমী তিথিতে বিসর্জন দেন। সেদিন ধর্মনিষ্ঠ হিন্দুর চোখ অশ্রুসজল হয়ে পড়ে। পুরুষ নারী ধূপ দীপ পাখা ইত্যাদির দ্বারা দেবীকে বিদায় প্রদান করেন। ভক্তহিন্দুরা দেবী মূর্তিকে শোভাযাত্রা সহকারে নিকটবর্তী কোন জলাশয় বা নদীতে নিয়ে বিসর্জন করেন। এই বিজয়া দশমীতে হিন্দুরা পরস্পর কোলাকুলি ও প্রীতি বিনিময় করেন।

 

পূজার বিবরণ

দুর্গাপূজা পাঁচ দিন ধরে চলে। ষষ্ঠী সপ্তমী অষ্টমী নবমী ও দশমী তিথিতে দেবীর আরাধনা করা হয়। শরতের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠী তিথিতে বোধন ও অধিবাসের মধ্য দিয়ে পূজা আরম্ভ হয়। তবে সপ্তমী থেকেই মূল উৎসব শুরু হয়। মাঙ্গলিক শংক নিনাদ কুলবধূদের উলুধ্বনি, ঢাক, কাঁসর ও ঘণ্টার ঐক্যতানের মধ্যে পুরোহিতের মন্ত্র উচ্চারণে শুরু হয় দেবীর পূজা। সপ্তমী অষ্টমী ও নবমী পর্যন্ত মহাসমারোহে পূজা চলতে থাকে। ভোর বেলা থেকে পুরোহিতের মন্ত্রে উদ্বোধনের মধ্যে দিয়ে আরম্ভ দ্বিপ্রহরে প্রসাদ বিতরণ এবং সন্ধ্যা থেকে রাত্রি পর্যন্ত চলে দেবীর আরতি। তিন দিন মহাসমারোহে পূজা শেষে চতুর্থ দিনে হয় দশমী। এ দিন প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হয়। এ দিনটি বিজয়া দশমী বলে অভিহিত। প্রতিমা বিসর্জন শেষে বন্ধু বান্ধব আত্মীয় স্বজন পরস্পর পরস্পরের সাথে প্রণাম নমস্কার শুভেচ্ছা বিনিময় ও কোলাকুলি করে থাকে। এদিনটি সৌহার্দ স্থাপনের দিন। সব ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের মঙ্গল কামনা করে থাকে।

 

পূজার উপকরণ

দুর্গা পূজায় চাউল দুর্বা ফুল চন্দন৷ ফল মূল প্রভৃতি উপকরণ লাগে। পুরোহিত বা ব্রাহ্মণ এসব উপকরণ দিয়ে দেবীর পূজা করেন।

 

দুর্গাপূজা দুর্গামূর্তি

হিন্দুদের পুরাণে কথিত আছে পুরাকালে মহিষাসুরকে বধ করবার জন্য যে মূর্তি আবির্ভূত হয়েছিলেন তাঁর ছিল দশটি হাত। প্রতি হাতে ছিল এক একটি করে অস্ত্র। ঠিক সে মূর্তিতেই হিন্দুরা দুর্গাদেবীকে তৈরি করেন। তার এই মূর্তি একটি হিংহ মূর্তির উপর স্থাপিত। পদতলে থাকে অস্ত্রবিদ্ধ মহিষাসুর। দেবীর ডান পাশে থাকে লক্ষ্মী আর গণেশ এবং বাম পাশে থাকেন সরস্বতী ও দেব সেনাপতি কার্তিক।

 

উপসংহার

দুর্গাপূজা বাঙালি হিন্দুদের শ্রেষ্ঠ উৎসব। তারা কর্ম ক্লান্ত ও ম্রিয়মাণ প্রাণকে এ উৎসবে সতেজ এবং উৎফুল্ল করে। অতীতে বিষাদ ভুলে গিয়ে সম্প্রীতির ভাব বিনিময় করে।

 

রচনা: মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু [11 পয়েন্ট]

মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু

ভূমিকা

বিভিন্ন জাতির শ্রেষ্ঠ পুরুষ থাকে। তেমনই বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ পুরুষ হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সঙ্গে যার নাম চিরস্মরণীয় হয়ে আছে তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। নিপীড়িত জাতির ভাগ্যাকাশে যখন দুর্যোগের কালােমেঘন তখনই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবময় আবির্ভাব। অসাধারণ দেশপ্রেম ও দূরদর্শী নেতৃত্ব দিয়ে তিনি সমগ্র জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন নাম।

 

ঐতিহাসিক পটভূমির ধারাক্রম

১৯৪৭ সালের আগস্ট মাসে ব্রিটিশ বেনিয়াদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারতবর্ষ বিভক্ত হয়ে ভারত পাকিস্তান দুটি আলাদা রাষ্ট্রের জন্ম হয়। ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে যোজন যোজন দূরত্ব সত্ত্বেও শুধুমাত্র ধর্মের দোহাই দিয়ে পাকিস্থান ও বাংলাদেশ নিয়ে গঠিত হয় নবগঠিত রাষ্ট্র পাকিস্তান। অদ্ভূত দ্বি জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে সৃষ্ট পাকিস্তানের শাসকদের অনাচার অত্যাচার আর সর্বক্ষেত্রে চরম বৈষম্য বঞ্চনার স্বীকার হয় বাঙালি জাতি। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী কেবল অর্থনৈতিক শোষণই নয় বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপরও নিপীড়ন শুরু করে। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা করে। তখনই সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠনের মধ্য দিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের প্রতি পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণের অসন্তোষের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে শুরু করে।১৯৫২ সালে উর্দুকে আবারও রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দিলে পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্রজনতা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ২১ ফেব্রুয়ারি বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল নিয়ে রাস্তায় নামে। বর্বর পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী মিছিলে গুলি চালালে শহিদ হন রফিক জব্বার সালাম বরকতসহ আরও অনেকে। শহিদদের এই পবিত্র রক্তই যেন বাঙালির হৃদয়ে স্বাধীন লাল সবুজের পতাকার ছবি এঁকে দেয়।১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করে। মুসলিম লীগের অসহায় ভরাডুবিতে নড়বড়ে হয়ে পড়ে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার ভিত। ১৯৫৬ সালে পুনরায় সরকারি ভাষায় বিতর্ক আইয়ুব খানের অপশাসন পাঞ্জাবি ও পশতুনদের ঋণ বাঙালিদের ওপর জোরপূর্বক চাপিয়ে দেয়া প্রভৃতি কারণে বাঙালিদের মনের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়তে থাকে।
১৯৬৬ সালে বাঙালির স্বাধিকারের দাবিতে ঐতিহাসিক ছয় দফা দাবি উত্থাপিত হয়। গণবিক্ষোভ প্রতিহত করতে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী সামরিক শাসনের মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী জনগণের ওপর চালাতে থাকে অত্যাচার নিপীড়ন। ১৯৬৮ সালে বাঙালির মুক্তিসংগ্রামের পুরোধা ব্যক্তিত্ব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানাকে মিথ্যা ও সাজানো আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’য় গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু প্রবল গণআন্দোলনের মুখে পাকিস্তানি অপশক্তি ১৯৬৯ সালে বঙ্গবন্ধুসহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ছেড়ে দেয়। এমনকি প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে। দফায় দফায় বৈঠক করার পরও ক্ষমতালিপ্সু শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরে কালক্ষেপণ করতে থাকে। এমতাবস্থায় ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে বিশাল সমাবেশের ডাক দেন। সমাবেশের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম বলে যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। এমন একটি উদাত্ত আহ্বানের জন্যই এতদিন যেন অপেক্ষা করেছিল বাঙালি। সঙ্গে সঙ্গে সমগ্র বাংলায় ছড়িয়ে পড়ে এই ডাক। সর্বত্র শুরু হয় তুমুল আন্দোলন।

 

বাঙালিদের প্রতিরোধ ও স্বাধীনতা অর্জন

২৫ মার্চ রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেফতার হওয়ার আগে ২৬মার্চের প্রথম প্রহরে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করে যান। তাঁর অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধের অন্যান্য সংগঠকবৃন্দ অস্থায়ী মুজিবনগর সরকার গঠন করে পাকবাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। সর্বস্তরের মানুষের ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম বন্ধুরাষ্ট্রসমূহের সর্বাত্মক সহায়তা বিশ্ব গণমাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকা তদুপরি তিরিশ লক্ষ শহিদ ও দুই লক্ষ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অবশেষে স্বাধীন হয় বাংলাদেশ।

 

স্বাধীনতার ঘোষণা

২৫ মার্চ মধ্যরাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় পশ্চিম পাকিস্তানে। গ্রেপ্তারের পূর্বে অর্থাৎ ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেন। পরে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে মেজর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা দেয়।

 

জন্ম ও পরিচয়

স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ গােপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শেখ লুৎফর রহমান মা সায়েরা খাতুন। দুই ভাই চার বােনের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন পিতা মাতার তৃতীয় সন্তান। পারিবারিক আনন্দঘন পরিবেশে টুঙ্গিপাড়ায় তার শৈশব কৈশােরের দিনগুলাে কাটে।

 

শিক্ষাজীবন

গিমাডাঙ্গা প্রাইমারি স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর তিনি গােপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে ভর্তি হন এবং এই স্কুল থেকে ১৯৪১ সালে তিনি ম্যাট্রিক পাশ করেন। ১৯৪২ সালে এনট্র্যান্স পাশ কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন। কলকাতা ইসলামিয়া কলেজ থেকে ১৯৪৪ সালে আইএ এবং ১৯৪৬ সালে বিএ পাশ করেন তিনি। ১৯৪৬ সালে ইসলামিয়া কলেজ ছাত্রসংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ছাত্র শেখ মুজিবুর রহমান ক্রমেই নেতা মুজিবে বিকশিত হতে থাকেন। ১৯৪৭ এ দেশ বিভাগের পর তিনি আইন পড়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।

 

রাজনৈতিক জীবন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রাহমানের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় ১৯৩৯ সালে মিশনারি স্কুলে পড়ার সময়। স্কুলের ছাদ সংস্কারের জন্য একটি দল গঠন করে নিজ নেতৃত্বে তিনি শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হকের নিকট দাবি পেশ করেন।১৯৪০ তিনি নিখিল ভারত মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে এক বছরের জন্যে যুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৯৪২ সালে এনট্র্যান্স পাশ কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে আইন পড়ার জন্য ভর্তি হন।কলকাতা ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমান নাম মাওলানা আজাদ কলেজ) পড়া থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৪৩ সালে তিনি বেঙ্গল মুসলিম লীগে যোগ দান করার সুবাধে তিনি বাঙালি মুসলিম নেতা হুসেইন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্যে আসেন। একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র গড়ে তোলার আন্দোলন নিয়ে তিনি ১৯৪৩ সালে বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন।১৯৪৭ সালে ভারত ও পাকিস্তান পৃথক হওয়ার পর হিন্দু মুসলিম দাঙ্গা শুরু হয়। মুসলিমদের রক্ষা করার জন্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সোহরাওয়ার্দীর সাথে বিভিন্ন রাজনৈতিক তৎপরতায় যুক্ত হন। এরপর ঢাকায় ফিরে এসে ১৯৪৮ সালের জানুয়ারির ৪ তারিখে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রধান ছাত্রনেতায় পরিণত হন।

 

মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা

জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১লা মার্চ জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করার প্রতিবাদে শেখ মুজিবুর রহমান ৩রা মার্চ অসহযােগ আন্দোলনের ডাক দেন। ৭ই মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে স্মরণকালের বৃহত্তম জনসভায় বঙ্গবন্ধু ঘােষণা করেন:

এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।

২৫ মার্চ কালরাত্রিতে পাকবাহিনীর হত্যাযজ্ঞে সারা বাংলাদেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। এমনি অবস্থায় গ্রেফতারের আগ মুহূর্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে স্বাধীনতার ঘােষণা দেন তা ওয়ারলেসের মাধ্যমে প্রাপ্ত হয়ে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে পাঠ করলে সারাদেশে ব্যাপক আলােড়ন সৃষ্টি হয়। পূর্ব বাংলা রেজিমেন্টের মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হয়ে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। যা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম প্রচার করে ফলে বিশ্ব বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ঘোষণা সম্পর্কে জানতে পারে।

 

বাংলাদেশের স্বাধীনতা লাভ

১৪ ডিসেম্বর যৌথবাহিনী ঢাকার মাত্র ১৪ কিলােমিটার দূরে অবস্থান গ্রহণ করে। ১৬ ডিসেম্বর বিকেলে রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) বাংলাদেশে অবস্থিত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট জেনারেল নিয়াজি হাজার হাজার উৎফুল্ল জনতার সামনে আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করেন। প্রায় ৯৩০০০ পাকিস্তানি সৈন্য আত্মসমর্পণ করে যা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সর্ববৃহৎ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান। দীর্ঘ নয় মাস যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয় মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় বিজয়। এই দিনে হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাধ্যমে বিশ্বমানচিত্রে জন্ম নেয় নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ। তাই ‘বিজয় দিবস আমাদের আত্মমর্যাদার ও আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রতীক।

 

ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকান্ড

বাংলাদেশের বিজয়ের পর ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তি দেওয়া হয়। দেশে ফেরার পর ১২ই জানুয়ারি তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাসনভার গ্রহন করেন। এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তােলার কাজে আত্মনিয়ােগ করেন। কিন্তু পরাজিত হায়েনার দল তার সাফল্য ও বাঙালির উত্থানকে মেনে নিতে পারেনি। তাই আবার শুরু হয় ষড়যন্ত্র। দেশ যখন সকল বাধা দূর করে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন দেশীয় ষড়যন্ত্রকারী ও আন্তর্জাতিক চক্রের শিকারে পরিণত হন। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সামরিক বাহিনীর তৎকালীন কিছু উচ্চাভিলাষী ও বিপথগামী সৈনিকের হাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হন। তাই বাঙালি জাতি প্রতিবছর ১৫ ই আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করে।

 

উপসংহার

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে যার নাম উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতাে দীপ্যমান তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর দূরদশী বিচক্ষণ এবং সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি এবং স্বাধীন বাঙালি জাতির জনক। জেল জুলুম ও নির্যাতনের কাছে তিনি কখনাে মাথা নত করেননি। বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে অস্বীকার করার শামিল। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ আজ সমগ্র বাঙালি জাতির কাছে এক ও অভিন্ন নাম।